কাতারের বিপক্ষে গোলের সুযোগ আসবেই নাবীব নেওয়াজ জীবন

প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
নাবীব নেওয়াজ জীবন
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল কাতারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে শুক্রবার। এই ম্যাচে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে স্বাগতিক কাতার সেটা ভালো করেই জানা আছে সফরকারীদের। তবে শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও আসবে গোলের সুযোগ। এমনটাই বিশ্বাস জাতীয় দলের অন্যতম ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবনের। তাইতো বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগের ম্যাচগুলোর মতো এবারও সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ বাংলাদেশ দল। সুযোগ যেটাই আসুক, কাজে লাগাতে চান তারা। ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের দ্বিতীয় ধাপের ম্যাচে শুক্রবার কাতারের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। 'ই' গ্রম্নপে প্রথম লেগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের আয়োজকদের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। বেশ কিছুদিন ধরে জীবনকে পেস্ন-মেকারের ভূমিকায় রেখে ডান দিকে সাদ উদ্দিন ও বাঁ দিকে ইব্রাহিমকে খেলাচ্ছেন জেমি ডে। এই ত্রয়ীর নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া দারুণ। বাছাই পর্বে ভারতের মাঠ থেকে ড্র নিয়ে ফেরা ম্যাচে এবং সর্বশেষ নেপালের বিপক্ষে খেলা দুই প্রীতি ম্যাচেও তারা ছড়িয়েছেন আলো। কাতার ম্যাচে এই বোঝাপড়া অটুট রাখতে দারুণ প্রত্যয়ী জীবন, 'এই কম্বিনেশনে ভারতের বিপক্ষে খেলেছি। নেপালের বিপক্ষে খেলেছি। কোচই ভালো বলতে পারবেন, কাতারের বিপক্ষেও একই কম্বিনেশনে খেলতে পারব কি না। কেননা, ওরা আমাদের চেয়ে অনেক শক্তিধর দল।' 'ওদের বিপক্ষে আমরা যারা আক্রমণভাগে খেলব, তারা খুব একটা সুযোগ পাব না-এটাই স্বাভাবিক। আমাকে যেহেতু আগের ম্যাচগুলোতে পেস্ন-মেকারের জায়গায় কোচ খেলিয়েছেন, সাদ ও ইব্রাহিমের সঙ্গে আমার একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। ওদের কাছ থেকে বলটা ঠিকমতো পেলে অল্প-স্বল্প যে সুযোগ আমরা পাব, সেটা কাজে লাগানোর সম্ভাবনা বেশি থাকবে।' যোগ করেন জীবন। কাতারের বিপক্ষে প্রথম লেগে দুই অর্ধে একটি করে গোল হজম করেছিল দল; দ্বিতীয় গোলটি দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে। ভারতের বিপক্ষে জিততে জিততে ড্র করে আসা ম্যাচেও গোল খেয়েছিল শেষ দিকে। দুই অর্ধেই জমাট থাকা, মনোযোগ ধরে রাখা জরুরি। তবে জীবন মনে করেন ফিরতি লেগে কাতারকে প্রথমার্ধে গোলবঞ্চিত রাখা গেলে দ্বিতীয়ার্ধে আরও সাহসী হয়ে খেলতে পারবেন বলে বিশ্বাস জীবনের, 'নেপালের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে আমরা যেভাবে খেলেছি, কাতার ম্যাচের হিসাবটা তার থেকে একেবারেই আলাদা। যদি প্রথমার্ধে আমরা ওদের আটকে রাখতে পারি, তাহলে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। প্রথমার্ধে ওদেরকে মোরালি ডাউন করে দিতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হবে। তাহলে আক্রমণভাগে আমরা যারা খেলব, আরও সাহসী হয়ে খেলার সুযোগ পাব।' হাঁটুর চোটে শুরুর দিকে কাতার যেতে পারেননি। চোটের উন্নতি হওয়ায় পরে যোগ দিয়েছেন দলের সঙ্গে। তাই সেখানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিও খেলতে পারেননি জীবন। গুছিয়ে নেওয়ার জন্য ওই দুই ম্যাচই অবশ্য খেলেছেন আরেক ফরোয়ার্ড সুফিল। তবে গোল পাননি তিনি। আর্মি দলের কাছে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে জালের দেখা পেয়েছিলেন ইব্রাহিম ও এস এম বাবলু। গোলের জন্য যাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে দল, সেই সুফিলের দেশের হয়ে গোল ৩টি, সাদের ১টি, জীবনের ৫টি। সুযোগের সঙ্গে এই সংখ্যার অনেক ফারাক। ভারতের বিপক্ষে সল্ট লেকেই জীবন একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছেন, তার শট শেষ মুহূর্তে গোললাইন থেকে ফিরেও এসেছে। ৩১ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড তাই আত্মবিশ্বাসী কাতার ম্যাচে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে। কাজে লাগাতে চান প্রতিপক্ষের হাই-ডিফেন্স খেলার প্রবণতার সুযোগ। এ প্রসঙ্গে জীবন বলেছেন, 'ওরা যেহেতু আক্রমণাত্মক খেলে অভ্যস্ত, আমাদের বিপক্ষে হয়ত ওভাবেই খেলবে। সেক্ষেত্রে ওদের ডিফেন্স বেশ উপরে উঠে আসবে, আমাদের সামনেও সুযোগ তৈরি হবে। আবার আমরা কিন্তু ওদের অর্ধে ওভাবে থাকতে পারব না, কখনো কখনো আমাদের রক্ষণে সাহায্য করার জন্য একটু নিচে নেমে আসতে হতে পারে। এই বিষয়গুলোতে আমাদের খুবই মনোযোগী থাকতে হবে।' জীবন মনে করেন আক্রমণভাগকে হতে হবে আরও মনযোগী, 'তবে ওরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, সুযোগ কিন্তু আমাদেরও আসবে। সেটা অল্প হলেও। যে সুযোগই আসুক, সেগুলো কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।'