বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ক্ষমা চাইলেন ঢাকার অধিনায়ক

মুশফিকের শাস্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে নাসুম আহমেদ -ওয়েবসাইট

ম্যাচের মধ্যে সতীর্থ নাসুম আহমেদকে দুবার তেড়ে গিয়ে মারতে উদ্যত হওয়ায় মুশফিকুর রহিমকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কোড অব কনডাক্ট (আচরণবিধি) ভঙ্গের দায়ে বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ম্যাচ ফি'র ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে, করা হয়েছে সতর্ক। এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছেন তিনি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, সতীর্থের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করে মুশফিক ক্রিকেটের স্পিরিট বিরোধী অপরাধ করেছেন। মুশফিক নিজের দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় আর শুনানির প্রয়োজন হয়নি।

নিজের এই আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মঙ্গলবার সকালেই নিজের ফেসবুকে বার্তা দিয়েছেন মুশফিক। নাসুমকে পাশে বসিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন সবার কাছে। আগামীতে এই ধরনের অন্যায় আর করবেন না বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নাসুমের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল একটি ছবি পোস্ট করেছেন মুশফিক। আর লিখেছেন, 'প্রথমত, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার সব ভক্ত ও দর্শকের কাছে ক্ষমা চাই গতকালের ম্যাচের ঘটনার জন্য। ম্যাচের পরই সতীর্থ নাসুমের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি। দ্বিতীয়ত, আমি স্রষ্টার কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। সবসময়ই মনে রাখার চেষ্টা করি, আমি সবকিছুর ওপরে একজন মানুষ এবং মাঠে যে আচরণ দেখিয়েছি, তা গ্রহণযোগ্য নয়। কথা দিচ্ছি, নিকট ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মাঠের ভেতরে কিংবা বাইরে আর হবে না।'

নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে মঙ্গলবার একটি পোস্ট করেন নাসুম। সেখানে তিনি লেখেন, 'আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিলস্নাহ ভালো আছি। গতকাল ম্যাচের পর থেকে দেখছি আমাকে আর মুশফিক ভাইকে নিয়ে আপনারা যেগুলো লিখেছেন এইগুলা কাম্য নয়।'

এই স্পিনার আরও লেখেন, 'যেগুলো টিভি সেটে দেখছেন এইগুলা অন দ্য ফিল্ডে হতেই পারে। আমাদের মিস এফোর্টের মাত্রাটাও একটু বেশিই ছিল গতকালের ম্যাচে। পার্টিকুলারলি আমিই মনে হচ্ছে এফোর্টলেস ছিলাম। মুশফিক ভাই অনেক সিরিয়াস ও ডেডিকেটেড ছিল ম্যাচে এবং আমার প্রতি টিমের এক্সপেকটেশনটাও বেশি ছিল।'

মাঠেই সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল দাবি করে নাসুম লেখেন, 'যাই হোক স্রেফ অন দ্য ফিল্ডের কাহিনী আমরা অন দ্য ফিল্ডেই শেষ করে নেই। কিন্তু উনার সাথে আমার অব দ্য ফিল্ডের বান্ডিংটা অনেক ভালো ইভেন এই টুর্নামেন্টে উনি আমাকে ইন্ডিভিজুয়ালি প্রচুর সময় দিয়েছেন কিভাবে ভালো করা যায় এবং দুর্বল দিকগুলা দ্রম্নত কাটিয়ে উঠা যায়।'

মুশফিক তাকে বড় ভাই হিসেবে শাসাতেই পারেন এমন কথা জানিয়ে তিনি যোগ করেন, 'আমাদের তেমন কিছু হয়নি। ম্যাচের পরে উনার সাথে অনেকবার কথা হয়েছে ড্রেসিংরুম, টিম হোটেলে। আর উনি আমার বড় ভাইয়ের মতো এবং টিম লিডার হিসেবে শাসাইতে পারেন। বাট ইটস ওকে। সো মাফ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। দয়া করে আমাদের এই ইসু্য নিয়ে তেমন কিছু লিখবেন না। আজ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলা আছে। সবাই দোয়া করবেন, জাজাকালস্নাহু খাইরান।'

সোমবার বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপের এলিমিনেটর ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মুশফিক। ১৩ ও ১৭তম ওভারে দুবার নাসুমকে মারতে যান তিনি। দুই ফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল ও মাহফুজুর রহমান ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। যার ভিত্তিতে ম্যাচের পরদিন সাজা পেলেন বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক। এই টুর্নামেন্টে চার ডিমেরিট পয়েন্ট হলে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন এই তারকা।

ঘটনা দুটি বিস্ময়ে হতভম্ব করে দেয় সবাইকে। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, মারামারির ঘটনা থাকলেও নিজ দলের খেলোয়াড়কে কেউ মারতে উদ্যত হচ্ছে এমন দৃশ্য ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। পুরো ম্যাচেই অবশ্য মুশফিককে ফিল্ডারদের নিয়ে চরম ক্ষিপ্ত, বিরক্ত হতে দেখা গেছে। পরে ওই ম্যাচ ৯ রানে জিতেছিল মুশফিকের দল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে