মাঝপথে সূচিতে পরিবতর্ন

নিয়মরক্ষার ম্যাচেও সতকর্ বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
পঁাজরের চোট উপেক্ষা করেই শ্রীলংকার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে খেলেছেন, দুদার্ন্ত এক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের জয়ের পথ সুগম করেছিলেন মুশফিকুর রহিমই। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে নামবে টাইগাররা, তার আগে বুধবার দলের অনুশীলনে ব্যাট হাতে দেখা গেল তাকে Ñবিসিবি
সুপার ফোরে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের, আফগানিস্তানেরও। ‘বি’ গ্রæপে আজ দুই দলের মুখোমুখি লড়াইটা তাই এক অথের্ নিয়মরক্ষার। ম্যাচটাকে আরও গুরুত্বহীন করে দিয়েছে মাঝপথে সূচির পরিবতর্ন। পরিবতির্ত সূচি অনুয়ায়ী গ্রæপ পবের্র অবস্থানের কোনো প্রভাব সুপার ফোরে পড়বে না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মতুর্জা। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিও বাড়তি গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন তিনি। আরব আমিরাতের তীব্র গরমের মতো এশিয়া কাপের সূচিটাও হয়েছে কিছুটা বিদঘুটে! প্রবল আপত্তি সত্তে¡ও গ্রæপ পবের্ টানা দুদিনে দুটো ম্যাচ খেলতে হয়েছে ভারতকে। এবার ওই সমস্যার সামনে দঁাড়িয়ে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানও। দুই দলের গ্রæপ পবের্র খেলা শেষ হচ্ছে আজ। আগামীকালই তাদের আবার নামতে হবে সুপার ফোরের ম্যাচে। তাই বেশ অস্বস্তিতেই আছে দুই শিবির। এরই মধ্যে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি, তাদের অন্তত আবুধাবি থেকে ১৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুবাই যেতে হবে না। আগেরদিন রাতে ম্যাচ শেষ করে এই ১৪০ কিলোমিটার ভ্রমণ করে পরদিন দুপুরে আবার নেমে পড়তে হবে মাঠে। আরব আমিরাতের উত্তপ্ত আবহাওয়ায় কাজটা কোনো দলের জন্যই সহজ হবে না। বাংলাদেশ তাই এই কঠিন পরিস্থিতি এড়াতে চেয়েছিল। পরিবতীর্ত সূচি সেই কাজটা এমতিতেই করে দিয়েছে। বাংলাদেশ তাদের পরবতীর্ ম্যাচটা আগামীকাল খেলবে আবুধাবিতেই। প্রতিপক্ষও ঠিক হয়ে গেছে, ভারত। টিম ম্যানেজের খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, সুপার ফোর নিশ্চিত করা চারটি দলের পরিচয় ট্যাগ করে দেয়া হয়েছে। যেমন, বাংলাদেশ যদি ‘বি’ গ্রæপের চ্যাম্পিয়নও হয়, তবু তাদের পরিচয় হবে ‘বি-২’। আফগানিস্তান ‘বি-১’। একইভাবে ‘এ’ গ্রæপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হোক আর রানাসর্আপ, তাদের পরিচয় ‘এ-১’। পাকিস্তানে ‘এ-২’। ম্যাচের দিন তারিখ অবশ্য ঠিক রাখা হয়েছে। তবে হঠাৎ এভাবে সূচির পরিবতের্ন চটেছেন মাশরাফি, ‘আজ সকালে জানতে পেরেছি, আফগানিস্তানের সঙ্গে জিতি আর হারি, আমরা বি-২। এটা অবশ্যই হতাশার।’ বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে, পঁাজরে চোট পাওয়া মুশফিকুর রহিম খেলবেন না আফগান ম্যাচে। শ্রীলংকার বিপক্ষে দুধর্ষর্ ব্যাটিং করা ডানহাতি কিপার-ব্যাটসম্যানকে বিশ্রাম দেয়া হবে। কিন্তু ম্যাচপূবর্ সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানাননি দলপতি মাশরাফি বিন মতুর্জা। তাহলে কি পঁাচ হাজার রানের মাইলফলক ছেঁায়া থেকে ২৮ রান দূরে থাকা মুশফিককেও বিশ্রাম দেয়া হচ্ছে না? প্রশ্নটা আরও জোরালো হয়েছে অনুশীলনে মুশফিকের সাবলীল উপস্থিতির কারণে। কিছু সময় ব্যাট নিয়েও ঠোকাঠুকি করতে দেখা গেছে এই ডানহাতিকে। নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন দীঘির্দন পর ওয়ানডে দলে ফেরা মুমিনুল হক আর অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের একজন আজ আফগান ম্যাচ খেলবেন, এটা শতভাগ নিশ্চিত। মুশফিক কিংবা সাকিব যেকোনো একজনকেও যদি বিশ্রামে রাখা হয়, শান্ত-মুমিনুল দুজনেই থাকবেন একাদশে। কারণ, উদ্বোধনী ম্যাচে কবজিতে চোট পেয়ে দেশে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। লিটন দাসের সঙ্গে তাই ওপেনিংয়ে দেখা যাবে নতুন কাউকে। এক্ষেত্রে শান্তর সম্ভাবনাই বেশি। আলোচনায় আছে মোহাম্মদ মিঠুনেরও নাম। অবশ্য শ্রীলংকার বিপক্ষে মিডলঅডাের্র নেমে ৬৩ রানের দুদার্ন্ত এক ইনিংস খেলা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ব্যাটিং অডাের্র উপরের দিকে না তোলার ইঙ্গিতই দিয়েছেন মাশরাফি। দলপতি তরুণদের সুযোগ দেয়ার কথাটাও বলেছেন স্পষ্ট করে। যদি তাই হয়, ওপেনিংয়ে তামিমের জায়গা নিচ্ছেন শান্তই। ঘরোয়া ক্রিকেট ইনিংসের সূচনা করার অভিজ্ঞতা আছে তার। তাছাড়া লিটনের সঙ্গে শান্ত ওপেন করলে ডানহাতি-বঁাহাতি কম্বিনেশটাও থাকে। তবে একাদশ আর কম্বিনেশন যেমনই হোক, জয়ের ধারাতেই থাকতে চায় বাংলাদেশ। ম্যাচটাকে গুরুত্বপূণর্ উল্লেখ করে মাশরাফি বলেছেন, ‘সবাই জয়ের ইচ্ছায় খেলতে নামে। আমরাও সেইভাবে মাঠে নামব।’ মাস চারেক আগে ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। ওই পরাজয়ে দেশের ক্রিকেটে ‘জাত গেল, জাত গেল’ রব উঠেছিল। ক্রিকেটাররা মুখ লুকিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার একটা উপলক্ষ এই ম্যাচ। সুযোগটা নিশ্চয় হারাতে চাইবে না টাইগাররা। তাই নিজেদের সেরাটাই নিংড়ে দেবে সবাই। তাছাড়া আফগানিস্তান এখন আর সহজ প্রতিপক্ষ নয়। তাদের বিপক্ষে ৫টি ওয়ানডে খেলে দুটোতে পরাজয় দেখেছে বাংলাদেশ। সুপার ফোরের লড়াইয়ে নামার আগে সেই পাল্লা আরও ভারী হোক, সেটা কাম্য নয় কারও। আরও একবার অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটিয়ে ফেলার পযার্প্ত রসদ আছে আফগানিস্তান দলে। তাদের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তা না থাকলেও ভাবতে হচ্ছে বোলারদের নিয়ে, বিশেষ করে স্পিনারদের নিয়ে। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান আর মোহাম্মদ নবি মিলেই আগের ম্যাচে সবর্নাশ করেছেন শ্রীলংকার। বাংলাদেশের অবশ্য সবর্নাশের ভয় নেই, তবে বিশ্বমানের আফগান স্পিনারদের সামলানোর চ্যালেঞ্জ ঠিকই আছে।