সৌম্য-ইমরুলে মিলবে সমাধান?

হঠাৎ এশিয়া কাপের দলে দুই ব্যাটসম্যান

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
হাতের চোটে শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে গেছে তামিম ইকবালের এশিয়া কাপ। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তার অভাব পূরণে গত দুই ম্যাচে লিটন দাসের সঙ্গী হিসেবে টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রেখেছিল তরুণ নাজমুল হোসেন শান্তর উপর। কিন্তু এ বঁাহাতি পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। লিটনও হেঁটেছেন তার পথেই। তাদের টানা এ ব্যথর্তায় বিকল্প হিসেবে টুনাের্মন্টের মাঝপথেই সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসকে ডেকেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই যুগলকে দিয়ে টপ অডাের্র শ্রীহীন ব্যাটিংয়ে সমাধান আসবে তো? এশিয়া কাপের দলের সঙ্গে যোগ দিতে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার ফ্লাইটে দুবাই গেছেন সৌম্য আর ইমরুল। তাদের অন্তভুির্ক্তর বিষয়টি শুক্রবার জানায় বিসিবি। এ দুজনকে ডাকা মানে দলের বতর্মান দুই ওপেনারের ওপর আস্থা হারিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এখন তাদের মধ্যে আস্থা খঁুজতে চাইছে টাইগাররা। ইমরুল আর সৌম্য এর আগেও বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের সূচনা করেছেন। নিকট অতীতে তামিমের সঙ্গী হিসেবে তাদের দুজনকেই বেশি দেখা গেছে। কিন্তু ছন্দ হারিয়ে ছিটকে গেছেন তারা। অন্যদের ছন্দহীনতায় এখন আবার তাদের শরণ নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। গ্রæপপবের্র শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয় সুবিধা করতে পারেননি। একই ব্যথর্তার চিত্র ফুটে উঠেছে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেও। লিটন আর নাজমুল আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যথর্ হয়। আফগানদের বিপক্ষে লিটন করেন ৬ রান, ভারতের বিপক্ষে ৭ রান। নাজমুল প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেন ৭ রান, ভারতের বিপক্ষে ৭ রানের বেশি করতে পারেননি। তিনে ব্যাটিং করা সাকিব আল হাসানও আশার আলো দেখাতে পারেননি। টপ অডাের্রর ব্যাটিং ব্যথর্তায় রীতিমতো হতাশ সবাই। বিষয়টি নজর এড়ায়নি টিম ম্যানেজমেন্টের। দলের শক্তি বাড়াতে তাই সৌম্য আর ইমরুলকে তড়িঘড়ি করে দুবাই পাঠিয়েছে বিসিবি। দলে অগত্যা এই যুগলদ্বয়ের অন্তভুির্ক্তর ব্যাখ্যা দিয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বলেছেন, ‘তামিম চোটে পড়ার কারণে আমাদের ওপেনিং জুটিতে নড়বড়ে অবস্থা। এক ম্যাচেও আমরা ওপেনিং জুটিতে ভালো পারফরম্যান্স পাইনি। টিম ম্যানেজমেন্ট আসলে একজন ওপেনারকে ডাকার কথাই বলেছিল। কিন্তু আমরা ঝঁুকি না নিয়ে দুজনকেই ডেকেছি। টিম ম্যানেজমেন্ট এবং বোডর্প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেই ইমরুল ও সৌম্যকে আনছি।’ দলে সৌম্য আর ইমরুলের অন্তভুির্ক্তর বিষয়ে শুরুতে অবগত ছিলেন না টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা। বোডের্র কতার্ব্যক্তিরা এই যুগলের মাঝে সমাধান খেঁাজে পাওয়ার আশায়। তবে মাশরাফি খুব বেশি আশা দেখছেন না। বিষয়টা ব্যাখ্যা করেই বুঝিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস, ‘ওরাও (ইমরুল-সৌম্য) কিন্তু এমন পারফমর্ না করেই দল থেকে বের হয়েছে। আবার এসেছে এই ধরনের টুনাের্মন্টে এত চাপ নিয়ে। আমি জানি না ওরা টেকনিক্যালি কতটা কাজ করেছে। যে সমস্যার কারণে দলের বাইরে গিয়েছিল, সেগুলো ঠিক করে আসছে কিনা।’ বিসিবি আয়োজিত লাল এবং সবুজ দলের চারদিনের ম্যাচ খেলতে সৌম্য আর ইমরুল খুলনায় ছিলেন। শুক্রবার ছিল ম্যাচের তৃতীয়দিন। তৃতীয় দিনে সৌম্য ৪৮ এবং প্রথম দিনে ইমরুল ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। তাই তাদের নিয়ে আশা দেখছে বিসিবি। তবে মাশরাফি জানালেন, এখন যারা দলে আছেন তাদের চেয়ে আফগান ম্যাচ আরও কঠিন হবে সৌম্য আর ইমরুলের জন্য। এ প্রসঙ্গে টাইগার দলপতি বলেছেন, ‘এটা কিন্তু গুরুত্বপূণর্। বিশেষ করে আফগানিস্তানের ম্যাচ যদি চিন্তা করেন, আমার মনে হয় তাদের (সৌম্য ও ইমরুল) আরও কঠিন বোলার মোকাবিলা করতে হবে।’ রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে টুনাের্মন্টে টিকে থাকার ম্যাচে ওপেনিংয়ে ইমরুলের সম্ভাবনা প্রবল। তিনি মাঠে নামলে ১১ মাস পর ওয়ানডে ম্যাচে ফিরবেন। মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যথর্তায় নীচে নেমে ব্যাট করার সম্ভাবনা আছে সৌম্যরও। এমন আভাসই দিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান, ‘সৌম্যর ব্যাপারটা অতটা গুরুত্বপূণর্ না। ইমরুলকে হয়তো আমরা ওপেনিংয়ে খেলাতে পারি। যদি প্রয়োজন হয় সৌম্যকে হয়তো নিচে খেলানো যেতে পারে।’ তামিমের সঙ্গে তিন ফরমেটের ক্রিকেট মিলে ১২৪ ম্যাচে ৩৬.২৪ গড়ে ৪৪২২ রানে রেখেছেন অবদান ইমরুল কায়েস। তারপরও গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্ট লন্ডনে ১ রানের ইনিংসের পর ওয়ানডে থেকে বাদ ইমরুল। অথচ তার আগে ১৩ ইনিংসে ৪ ফিফটি, ১ সেঞ্চুরিতে এই টপ অডার্র নিজের দায়িত্বটা ঠিকই পালন করেছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরিটা পেয়েছে হাততালি। উপেক্ষার যন্ত্রণা লাঘবে ব্যাটকে কতটা কাজে লাগাতে পারেন। অপেক্ষা এখন তা দেখার।