শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বললেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেমার রোচ

বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট মানে স্পেশাল অনুভূতি

'হঁ্যা (স্পেশাল অনুভূতি)। আমি তাদের বিপক্ষে শুরু করেছিলাম। সেটা অবশ্য নিজেদের মাটিতে ছিল। আমি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছি। ওয়ানডে ও টেস্ট দুটোতেই। তারা সব সময় ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপহার দেয়।
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনরত ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি পেসার কেমার রোচ -ওয়েবসাইট

প্রেক্ষাপট ভিন্ন কিন্তু মূল ঘটনা একই। এক যুগের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশের মুখোমুখি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার কেমার রোচ ছিলেন তরুণ গতিময় এক পেসার, এখন তিনি টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের বড় এক অস্ত্র। ২০০৯ সালের সেই সিরিজের সঙ্গে এবারের সিরিজের বেশ মিল দেখছেন রোচ। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ স্কোয়াডের দিকে তাকিয়ে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন রোচ।

টেস্ট অভিষেকের মুহূর্তটি প্রায় প্রত্যেক ক্রিকেটারের কাছে অবিস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকে। সময়ে সময়ে তাতে ডুব দিয়ে অন্য কোনো সুখের ভুবনে যেন হারিয়ে যাওয়া যায়! কেমার রোচের ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতাটা ব্যতিক্রম নয়। এক যুগ আগের ঘটনাটা মনে করিয়ে দিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই পেসারের মুখে ফুটল হাসি। জানালেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে স্পেশাল অনুভূতি হয় তার।

মিরপুরে বিসিবি একাডেমি মাঠে শুক্রবার অনুশীলনের পর কেমার রোচ গণমাধ্যমকে বলেন, 'তামিম ইকবাল তাদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের একজন। সাকিব আল হাসান ফিরেছে। মুশফিকুর রহিম আছে, তাদের অধিনায়ক মুমিনুল হকও ভালো ব্যাটসম্যান। বেশ কিছু ভালো নাম আছে তাদের। তবে আমরা আসলে নিজেদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।'

'বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরতে হলে মাঠে আক্রমণাত্মক থাকতে হবে। পিচে খুব একটা বাউন্স থাকবে না। মাঠে পরিকল্পনাটা ঠিকঠাক করতে হবে এবং সেটার প্রয়োগও। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে গতির সংমিশ্রণ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভালো জায়গায় টানা বল করে যেতে হবে যতটা সম্ভব।'

২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ডানহাতি রোচের। কিংসটাউনে ওই ম্যাচে ৬ উইকেট শিকার করেন তিনি। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে সাদা পোশাকে খেলতে নামলে এখনো অন্তরে বাড়তি উন্মাদনা-উত্তেজনা কাজ করে তার। শুক্রবার ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (সিডবিস্নউআই) এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, 'হঁ্যা (স্পেশাল অনুভূতি)। আমি তাদের বিপক্ষে শুরু করেছিলাম। সেটা অবশ্য নিজেদের মাটিতে ছিল। আমি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছি। ওয়ানডে ও টেস্ট দুটোতেই। তারা সব সময় ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপহার দেয়। তারা মানসিকভাবে বেশ শক্ত একটা দল। ভালো করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু আমি নিজেদের দিকে মনোযোগী থাকার কথাই বলব। মাঠে একটি দল হিসেবে নামতে হবে এবং দারুণভাবে শুরু করতে হবে।'

বেতন নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় সেবার বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে খেলেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দলের ক্রিকেটাররা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশ সফরে আসেননি গুরুত্বপূর্ণ অনেক খেলোয়াড়। ২০০৯ সালে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে এসে ২০১৮ সালে হেরেছে ওয়ানডে সিরিজ, টেস্টে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। এবারও যে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে বেশ ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছেন রোচ।

৩২ বছর বয়সি পেসার জানান, এবার বাংলাদেশে এসে এক যুগের আগের সেই সিরিজের কথাই মনে পড়ছে তার, 'তখন আমিও বেশ অনভিজ্ঞ ছিলাম। ছেলেরা তখন বেশ চাপে ছিল ভালো করার জন্য কিন্তু তারা পারেনি। আমাদের বেশিরভাগের জন্যই সেই সিরিজ বড় একটা শিক্ষা ছিল।'

'আর এবার এটা আমাদের জন্য দ্বিতীয়বার একই পরিস্থিতি হয়েছে। গ্রম্নপ হিসেবে, দল হিসেবে আমাদের কী করতে হবে এর ভালো পারিকল্পনা করেছি আমরা। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ভালো আলাপ হচ্ছে, আজকে এবং গতকালকে তাদের দেখে ভালোই মনে হচ্ছে। আশা করছি ভালো প্রস্তুতি নিয়েই আমরা টেস্ট সিরিজ শুরু করব।'

টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষেই রেকর্ড সবচেয়ে ভালো রোচের। ৮ টেস্টে ১৯.৭৮ গড়ে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। স্ট্রাইক রেট ৪১.৩। তবে বাংলাদেশের মাটিতে রেকর্ড অতটা উজ্জ্বল নয়। ৩ টেস্টে পেয়েছেন কেবল ৪ উইকেট। গড় ৫৯, স্ট্রাইক রেট ৯৮।

ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে কতটা সংগ্রাম করতে হবে ভালো করেই জানেন রোচ। তবে একই সঙ্গে বিশ্বাস করেন, ভালো একটি পরিকল্পনা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়নে পাল্টাতে পারে পরিস্থিতি, 'সবাই জানি, বাংলাদেশ সব সময় পেসারদের জন্য কঠিন। যদি ভালো পরিকল্পনা করতে পারি, ভালো জায়গায় বল করতে পারি তা আমাদের জন্য সহায়ক হবে। এসব ঠিকমতো করতে পারলে আমি মনে করি, আমরা সিরিজে ভালো করতে পারব।'

টেস্টে পেস বোলিং আক্রমণে রোচের সঙ্গে আছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ। মরা উইকেটেও ব্যাটসম্যানদের ভোগানোর সামর্থ্য তাদের আছে। রোচ মনে করছেন, মূল কাজটা করতে হবে স্পিনারদেরই। তারা যতটা সম্ভব সহায়তা দিয়ে যাবেন।

'বোলিং ইউনিটের সাফল্যের জন্য দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। আর সেরকমটা হলে আমাদের বোলিং ইউনিট ভালোভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে। আমরা ভালো পরিকল্পনা করছি, বোলিং কোচের সঙ্গে কথা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যেও আলাপ-আলোচনা করছি। আমরা জানি, আমাদের কী করতে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে