মোহামেডানের কাছে হারল মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে মঙ্গলবার কুমিলস্নার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে হারানোর পর ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস -বাফুফে
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে হেরেছে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ। অপরদিকে শক্তিধর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে জায়ান্ট কিলার খ্যাত রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই দুই দলের ম্যাচটি ১-১ গোলের ড্র হয়। ইনজুরি টাইমে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জামালের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার সোলেমান সিলস্নাহ। শেখ জামালের গোলটি করেন ওটাবেক এবং রহমতগঞ্জের গোল করেন ক্রিস্ট রেমি। ১১ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট জামালের। তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে রহমতগঞ্জ। কুমিলস্নার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে হোম ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ২-০ গোলে হারায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রকে। ১১ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে সাদা-কালোরা। সমান ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে মুক্তিযোদ্ধা। এবারের মৌসুমে কোচ শফিকুল ইসলাম মানিকের তত্ত্বাবধানে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব চেষ্টা করেছে প্রতিটি ম্যাচেই আগে গোল আদায় করে নিতে। মঙ্গলবার তুলনামূলক দুর্বল রহমতগঞ্জের বিপক্ষেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে জামাল। তবে জায়ান্ট কিলার নামে সুখ্যাতি যে দলটির, সেই রহমতগঞ্জ এতটুকু ছাড় দেয়নি। শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রথমার্ধে তারা রক্ষণাত্মক ফুটবল তো খেলেইনি। উল্টো আক্রমণাত্মক খেলে তারাও চেষ্টা করেছে আগে লিড নিতে। কিন্তু কাজের কাজটি হয়নি। ম্যাচের ৫ মিনিটে বা প্রান্ত ধরে মেহবুব হাসান নয়ন বল বাড়াতে যান সতীর্থ আইভরী কোস্টের ফরোয়ার্ড ক্রিস্ট রেমিকে। কিন্তু তার আগেই বক্সে বল ক্লিয়ার করেন জামালের ডিফেন্ডার রেজাউল করিম। পরের মিনিটেই আত্মঘাতী গোল হজম করতে যাচ্ছিল রহমতগঞ্জ। জামালের একটি আক্রমণ রুখে দিতে গিয়ে রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার মো. তারেক নিজের জালেই পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু দক্ষতার সঙ্গেই বল ক্লিয়ার করেন গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন। তাই বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে যায় পুরানো ঢাকার দলটি। ১০ মিনিটে সুযোগ এসেছিল শেখ জামালেরও। বা প্রান্ত থেকে উজবেক ফরোয়ার্ড ভ্যালিডজানভ ওটাবেকের ফ্রি কিক ফিস্ট করেন লিটন। ১৪ মিনিটে বল নিয়ে জামালের অর্ধে ঢুকে পড়ার সময় ক্রিস্ট রেমিকে ফাউল করেন জামাল ডিফেন্ডার মোজাম্মেল হোসেন নীরা। ফ্রি কিক পায় রহমতগঞ্জ। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ১৬ মিনিটে তাজিক ডিফেন্ডার খুরশেদ বেকনাজারভের ফ্রি কিক বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক জিয়া। ২২ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সোলেমান সিলস্নাহর শট গস্নাভস বন্দি করেন লিটন। ২৭ মিনিটে ক্রিস্ট রেমিকে আটকে দিতে গিয়ে হ্যান্ডবল হয় রেজাউলের। শাহেদুল আলমের ফ্রি কিক বক্সে পেয়েও গোল করার সুবর্ন সুযোগটা হাতছাড়া করেন রহমতগঞ্জের মিডফিল্ডার সানোয়ার হোসেন। জটলা থেকে হেডে বল ক্লিয়ার করেন জামাল অধিনায়ক গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সুলেমান কিং কানফর্ম। ৩৪ মিনিটে জামালের ওটাবেকের কর্নার সামনে এগিয়ে এসে ফিরিয়ে দেন লিটন। ৩৮ মিনিটে সুলেমান কিংয়ের ফ্রি কিক বক্সে হেডে ক্লিয়ার করেন রহমতগঞ্জের মিশরীয় ডিফেন্ডার আলা নাসের। ৪০ মিনিটে সোলেমান সিলস্নাহ বল নিয়ে ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষ বক্সে। কিন্তু তাকে আটকে দেন ডিফেন্ডার খলিল। বল নিজের আয়ত্বে নিয়ে পাঠিয়ে দেন আলা নাসেরের কাছে। তিনি ক্লিয়ার করেন বল। ৪৩ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে শ্যামল মিয়ার শট প্রতিপক্ষের খলিলের গায়ে লেগে বলের গতিপথ বদলে চলে যায় মাঠের বাইরে। কর্নার পায় শেখ জামাল। ওটাবেকের কর্নার বক্সে হেডে ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডাররা। ৪৪ মিনিটে ওটাবেকের আরও একটি জোড়ালো আক্রমণ আটকে দেন গোলরক্ষক লিটন। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থেকেই বিশ্রামে যায় দুই দল। প্রথমার্ধে যে ম্যাচে একটি গোলও হয়নি। সেই ম্যাচেরই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কিনা দুই দল দুটি গোল করে ফেলে! ম্যাচের ৪৯ মিনিটে লিড নেয় শেখ জামাল। বা প্রান্ত থেকে ওটাবেকের কর্নার সরাসরি আশ্রয় নেয় রহমতগঞ্জের জালে (১-০)। তবে রক্ষণের ভুলে পরের মিনিটেই গোল হজম করেছে জামাল। সতীর্থর পাসে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ক্রিস্ট রেমি। তাকে আটকাতে ব্যর্থ হন রেজাউল সহ জামালের তিন ডিফেন্ডার। এগিয়ে গিয়ে বা পায়ের কোনাকোনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন রেমি (১-১)। ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে (৯০+৫) ক্রিস্ট রেমিকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন জামালের সোলেমান সিলস্নাহ। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলেই ড্র হয় ঘটনাবহুল ম্যাচটি।