সাইফ ও রহমতগঞ্জের গোল উৎসব

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে গোল করার পর সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ স্থানে ধাকা দলটি -বাফুফে
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে গোল উৎসব করেছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। শুক্রবার বিকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত একমাত্র ম্যাচে তারা ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় দুর্বল ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে। সাইফের জোড়া গোল করেন জন ওকোলি, এ ছাড়া ইয়াসিন আরাফাত এবং ক্যানেথ ইকেছুকু করেন একটি করে গোল। ২২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ স্থানে উঠে এল সাইফ। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ১২তম স্থানে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে ৪-১ গোলের বড় জয় পায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। ১২ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে রহমতগঞ্জ। সমান ম্যাচে আরামবাগের মাত্র ১ পয়েন্ট। তারা আছে ১৩তম স্থানে। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লিগের দ্বিতীয় দ্রম্নততম গোলটি করেন সাইফের ফুটবলার ইয়াসিন আরাফাত। এর আগে এবারের লিগে প্রথম দ্রম্নততম গোলটি হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা-রহমতগঞ্জের ম্যাচে। মুক্তিযোদ্ধার স্থানীয় ডিফেন্ডার মাহাদুদ হোসেন ফাহিম মাত্র ২৩ সেকেন্ডে গোলটি করেছিলেন। শুক্রবার ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩০ সেকেন্ডে গোল করে সাইফ স্পোর্টিংকে এগিয়ে নেন ইয়াসিন আরাফাত। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার মুন্নু মিয়া বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন বক্সে। সুযোগটা কাজে লাগান ইয়াসিন আরাফাত। ডান পায়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন (১-০)। ৪ মিনিটে সাইফের উজবেক মিডফিল্ডার সিরজউলস্নাহ রাখমাতুলস্নায়েভের ফ্রি কিক দক্ষতার সঙ্গেই গ্রিপ করেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক জাফর সরদার। পরের মিনিটে ব্রাদার্সের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড স্যামসন ইলিয়াসুর থু্র পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তারই স্বদেশী ডিফেন্ডার মানডে ওসাগী। কিন্তু দ্রম্নতই দৌড়ে এসে বল আয়ত্তে নেন সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। ১০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল সাইফের। তবে বক্সের মাথা থেকে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড জন ওকোলির শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক। ১৯ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে ডানদিক থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার কৃষ্ণপদ বিশ্বাসকে কাটিয়ে দ্রম্নতগতিতে বক্সে বল পাঠান ফরোয়ার্ড রহিম উদ্দিন। তার বানিয়ে দেওয়া বলে ডানপায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন সাইফের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ক্যানেথ ইকেছুকু (২-০)। ২৭ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার রহমত মিয়ার ক্রস বক্সে পেয়ে হেড নেন ক্যানেথ। কিন্তু বল বারে লেগে ফেরত আসে। অবশ্য এরই মধ্যে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে অফসাইডের সংকেত দেন। ৩১ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে রহিম উদ্দিনের ডানপায়ের কোনাকুনি শট গ্রিপ করেন ব্রাদার্স গোলরকক্ষক। ৩৬ মিনিটে ব্রাদার্সের মিডফিল্ডার শফিকুল ইসলাম সফীর কর্নার বারে লেগে ফেরত আসে। পরের মিনিটে সিও জোনাপিও বল নিয়ে ঢুকে পড়েন সাইফের বক্সে। সতর্ক ছিলেন সাইফ ডিফেন্ডার রহমত মিয়া। বল ক্লিয়ার করে দলকে গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন। ৪২ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে ফাহিমের পাসে বল পেয়ে শট নেন দলকে প্রথমে এগিয়ে দেওয়া ফরোয়ার্ড ইয়াসিন আরাফাত। এবার তার শটটি চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ৪৩ মিনিটে ব্রাদার্স ডিফেন্ডার মুন্না মিয়ার ক্রসে লাফিয়ে উঠে হেড নেন তার সতীর্থ ফুটবলার। তবে গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেনের বল গ্রিপ করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। প্রথমার্ধ ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় সাইফ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর মিনিটে রহিম বল বাড়ান ক্যানেথ ইকেছুকুকে। ডান প্রান্ত থেকে শট নেন ক্যানেথ। অল্পের জন্য বল জড়ায়নি জালে। ৭৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল নিয়ে ব্রাদার্সে বক্সে ঢুকে পড়েন জন ওকোলি। বল আটকাতে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক। ডানপায়ের শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন জন ওকোলি (৩-০)। ৮৩ মিনিটে ব্রাদার্সের মিডফিল্ডার ছামির উলস্নাহর দূরপালস্নার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। সুজনের কর্নার থেকে বক্সে সতীর্থর হেড গিয়ে লাগে বারে। ৮৪ মিনিটে জন ওকোলিকে আটকে দিতে পোস্ট ছেড়ে সামনে এগিয়ে আসেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক। ফাঁকা পোস্ট পেয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ওকোলি। তাকে পেছন থেকে বাধা দিতে গিয়েও নাগাল পাননি ফুরকাত। বল জালে পাঠিয়ে দিয়ে উৎসবে মাতেন জন ওকোলি (৪-০)। আর এই গোলেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত হয়ে যায় সাইফের।