নেইমারদের ভাগ্যে কী লেখা?

আজ মেক্সিকোর মুখোমুখি ব্রাজিল

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

আরিফুর রহমান
কোয়াটার্র ফাইনালের পথ ওদিকে, আঙুলের ইশারায় শিষ্যদের কি তাই দেখাচ্ছিলেন ব্রাজিলিয়ান কোচ তিতে? ওই পথ ধরে গন্তব্যে পৌঁছতে আজ মেক্সিকোর বিপক্ষে অবশ্যই জিততে হবে পঁাচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের Ñওয়েবসাইট
লিওনেল মেসির আজেির্ন্টনা ছিটকে গেল, বাদ পড়ল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পতুর্গালও। এই দু’জনের পর যার নামটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, সেই নেইমারের ব্রাজিলের ভাগ্যে কি লেখা আছে? আজ শেষ ষোলোতে মেক্সিকোর বিপক্ষে সেলেকাওরা জয় পেলে ফুটবল ভক্তরা অন্তত এতটুকু বলে নিজেদের সান্ত¡না দিতে পারবেন- যাক, একজন সুপারস্টার তো টিকে রইলেন! কিন্তু বিশ্বকাপের নকআউট পবের্ কোনো কিছুরই যে নিশ্চয়তা নেই। তাছাড়া রাশিয়ায় তো চলছে অঘটনের এক বিশ্বকাপ। রাশিয়া বিশ্বকাপ যেন অনিশ্চয়তা আর চমকে ঘেরা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জামাির্নর গ্রæপপবর্ থেকে বিদায় দিয়ে অঘটনের শুরু। শেষ ষোলোর প্রথম রাতেই সময়ের সেরা দুই ফুটবল তারকা মেসি-রোনালদোর স্বপ্নের করুণ সমাপ্তি। নেইমারের ব্রাজিলের কপালে কী লেখা আছে কে জানে! যদিও আজ মেক্সিকোর বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই খেলতে নামবে পঁাচবারের চ্যাম্পিয়নরা। অতীতে বিশ্বকাপে তাদের কাছে পরাজিত হওয়ার রেকডর্ও নেই সেলেকাওদের। মেক্সিকো বিশ্বকাপের শেষ ষোলো জুজুতে গত ২৮ বছর ধরে আটকে আছে। তবুও ২০০০ সালের পর ব্রাজিলের বিপক্ষে এবারের আসরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা বাকি দলগুলোর চেয়ে ‘এল ট্রি’দের রেকডর্টাই সবচেয়ে ভালো। সেলেকাওদের বিপক্ষে শেষ ৯ ম্যাচের ৬টিতেই জিতেছে মধ্য আমেরিকার দলটি। হার মাত্র দুটিতে! কেবল ফ্রান্সই পেরেছে তাদের পর ব্রাজিলের বিপক্ষে বেশি ম্যাচ জিততে (৬ ম্যাচে ৩টি)। ২০০১ সালের কোপা আমেরিকার গ্রæপপবের্ ব্রাজিলকে হারিয়ে দেয় মেক্সিকো। বছর চারেক বাদে কনফেডারেশন্স কাপেও তাদের শিকার হয় সেলেকাওরা। এরপর ২০০৭ সালের কোপা আমেরিকাতেও মেক্সিকো বাধা উতরাতে ব্যথর্ হয় পঁাচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তাদের সবচেয়ে বড় কষ্টটা মেক্সিকো উপহার দিয়েছিল ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে। সেবার ব্রাজিলের মুখের ওপর থেকে সোনা ছিনিয়ে নিয়েছিল দলটি। ওসব সুখস্মৃতি তো আছেই। গত বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মাটিতেই স্বাগতিকদের সঙ্গে গ্রæপপবের্ ড্র করে মাঠ ছাড়ে মেক্সিকো। দলীয় অধিনায়ক আন্দ্রেস গুয়াদাের্দা এবার আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দেশবাসীকে একটা দারুণ জয় উপহার দিতে চান তারা। সেজন্য অতীত থেকে প্রেরণা নিয়ে হিংস্র বাঘের মতোই নেইমারদের ওপর ঝঁাপিয়ে পড়বে দলটি। শক্তিশালী ব্রাজিলকে আক্রমণাত্মক খেলেই ঘায়েল করার ছক কাটছেন কোচ ওসেরিও, ‘আমরা আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলার চেষ্টা করব। লক্ষ্য থাকবে জেতার।’ মেক্সিকোর আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হাভিয়ের হানাের্ন্দজ (চিচারিতো) রাশিয়ায় পা রাখার আগে জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ জিততে চান এবার। এই স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে এখন থেকে প্রতিটি ম্যাচই জিততে হবে তার দলকে। যদিও ফ্রান্স, স্পেন, ইংল্যান্ড এবং বেলজিয়ামের মতো প্রতিপক্ষদের পেছনে ফেলে মেক্সিকোর কাপ জেতার সম্ভাবনা ক্ষীণ; তবুও আশা ছাড়তে নারাজ চিচারিতো। ২০০৪ সালে গ্রিস যেমন চমক উপহার দিয়ে জিতে নিয়েছিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। লেস্টার সিটি যেমন ২০১৫-১৬ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিখেছিল রূপকথা। মেক্সিকো কি তেমন একটা দল হয়ে ওঠতে পারে না? পারে। ভালো খেললে সবই সম্ভব। গ্রিস-লেস্টারের কাছ থেকে প্রেরণা নিয়ে তাই ব্রাজিলের বিপক্ষে ঝঁাপিয়ে পড়তে সতীথের্দর প্রতি আহŸান জানালেন চিচারিতো, ‘কেন আমরা গ্রিস হয়ে ওঠতে পারব না, কেন পারব না প্রিমিয়ার লিগের লেস্টার সিটি হয়ে ওঠতে? আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতেই এসেছি। আমাদের প্রত্যাশার মাত্রাটা নিচে নামাতে চাই না।’ মধ্য আমেরিকার দেশটিকে ফেলনা মনে করার কোনো কারণ নেই তাই। নিজেদের দিনে যে তারা কী করতে পারে, প্রমাণ তো গ্রæপপবের্ জামাির্নর বিপক্ষেই মিলেছে। হুয়ান কালোর্স অসরিওর শিষ্যদের হারাতে নিজেদের সেরাটাই খেলতে হবে বলে মনে করছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার কাসেমিরো। সঙ্গে শিষ্যদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জামাির্নর পরিণতির কথাও। সবমিলিয়ে বেশ সতকর্ হয়েই আজ মাঠে নামবে ব্রাজিল। বলতে গেলে তারা গ্রæপ পবর্ পার হয়েছে প্লেমেকার ফিলিপে কুতিনহোর কঁাধে চড়ে। আজ আশা থাকবে কুতিনহোর সঙ্গে যে নেইমারও জ্বলে ওঠেন। চোট থেকে ফেলার পর ঠিক নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারছেন না তিনি। ওদিকে, রক্ষণভাগের সেরা তারকা মাসেের্লা পড়েছেন চোটে। তার খেলা অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের টিম ডাক্তার। উইঙ্গার ডগলাস কস্তার কোনো সম্ভাবনাই নেই। তবে রাইটব্যাক দানিলো ফিট হয়ে ওঠেছেন। তাকে আজ রক্ষণভাগের দায়িত্বে মাঠে দেখা যেতে পারে।