শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নার্ভাস নাইনটিতে তামিমের বিদায়

ম ক্রীড়া ডেস্ক
  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

বল যখন একমাত্র স্স্নিপে লাহিরু থিরিমান্নের হাতে জমল, হতাশা জেঁকে ধরল তামিম ইকবালকে। থার্ড ম্যানে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টায় যে ঢঙে শট খেলেছিলেন, সেভাবেই কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলেন তিনি। চোখে-মুখে অবিশ্বাস নিয়ে কয়েকবার মাথাও নাড়লেন। সেঞ্চুরির সুবাস জাগালেও বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনারের দারুণ ইনিংস শেষ হলো বাজে শটে। দারুণ খেলেও নিজের বাজে শটে সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেন তামিম। শ্রীলংকার বিপক্ষে বুধবার পালেস্নকেলে টেস্টের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে তামিম আউট হন ৯০ রানে।

দুর্দান্ত সব শটের পসরা সাজিয়ে প্রথম সেশনে ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন তামিম। মধ্যাহ্ন বিরতির পরও একই তালে ছুটছিলেন তিনি, শ্রীলংকার বোলারদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে। বিশ্ব ফার্নান্দোকে কভার ড্রাইভে চার মেরে পৌঁছে গিয়েছিলেন নব্বইয়ের ঘরে। কিন্তু পরের বলেই ব্যাঘাত ঘটে মনঃসংযোগে। খোঁচা মেরে দেন ক্যাচ। বুধবার ক্যান্ডির পালেস্নকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দেখা মিলেছে তামিমের দক্ষতা ও সামর্থ্যের। কিন্তু আসেনি পূর্ণতা। স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট চালিয়ে ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে ২৯তম হাফ সেঞ্চুরি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

সাজঘরে ফেরার আগে ইতিবাচক মানসিকতার ছাপ রেখে ৯০ রান করেন তামিম। তার ১০১ বলের দৃষ্টিনন্দন ইনিংসে চার ছিল ১৫টি। তিনি হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেছিলেন মাত্র ৫৩ বলে। তখন তার বাউন্ডারি ছিল দশটি। শুরুতেই আরেক ওপেনার সাইফ হাসানকে হারালেও তামিম চাপে পড়তে দেননি বাংলাদেশকে। নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। ফলে ওভারপ্রতি প্রায় চারের বেশি গড়ে রান তুলছে সফরকারীরা।

অভিজ্ঞ লংকান পেসার সুরঙ্গা লাকমলের করা দিনের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ফ্লিক করে চার মারেন তামিম। এক বল পর আবারও শাফল করে বলকে সীমানা ছাড়া করেন তিনি। ষষ্ঠ ওভারে আরেক পেসার বিশ্ব টের পান তামিমের ঝাঁজ। ওই ওভারে তিনটি চার মারেন টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। দ্বাদশ ওভারে গতিময় বোলার লাহিরু কুমারাকেও বরণ করতে হয় একই ভাগ্য।

ঘাস থাকায় শুরুতে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না। তামিম তা সামাল দিয়ে পাল্টা আক্রমণে সফল হন। উইকেট ধীরে ধীরে ব্যাটসম্যানদের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠায় তার আক্রমণাত্মক মনোভাবের পরিবর্তন ঘটেনি। ফ্লিক, কভার ড্রাইভ, কাটসহ দারুণ কতগুলো শট খেলেন তিনি। শেষবার তামিম তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন ২০১৯ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে। নিউজিল্যান্ড সফরে হ্যামিল্টনে ১২৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস দেখা গিয়েছিল তার ব্যাটে। মাঝের দশ ইনিংসে তিনি তিনবার পেয়েছিলেন ফিফটি।

৫৩ বলে তামিম স্পর্শ করেন ২৯তম টেস্ট ফিফটি। লাঞ্চ বিরতিতে যান ৬৫ রান নিয়ে। অপেক্ষা যখন তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরির, তখনই করে বসেন 'আত্মহত্যা।' বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টিয়ার কিংবা গস্নাইড করার চেষ্টা করেন। বল একটু বেশি লাফিয়ে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় একমাত্র স্স্নিপ ফিল্ডারের হাতে। হতাশায় নুয়ে পড়েন তামিম। কিন্তু তখন আর কিছুই করার নেই। ১০১ বলে ১৫ চারের ইনিংসের সমাপ্তি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে