শ্রীলংকা সিরিজে দারুণ কিছু চান যুবারা

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ। কিন্তু ফাইনালে খেলা হয়নি স্বাগতিক বাংলাদেশ অনূধ্বর্-১৯ দলের। সেমিফাইনালে ভারতের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে টুনাের্মন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে লাল-সবুজের যুবারা। সেটা অবশ্য যুবা অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়ের কাছে এখন শুধুই বিস্মৃত অতীত। শ্রীলংকা সিরিজকে সামনে রেখে তিনি আর মনে করতে চাইছেন না। বরং অতীত ভুলে নবোদ্যমে তিনি ও তার সতীথর্রা স্বাগতিক লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজটিতে দারুণ কিছু করতে চাইছেন। আগামি শনিবার শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫ ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে ও ২টি চার দিনের ম্যাচ খেলতে দেশ ছাড়ার আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা জানালেন অনূধ্বর্-১৯ দলের অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়। ‘যেটা চলে গিয়েছে সেটা বলে লাভ হবে না। তারপরেও ফোকাস থাকতে হবে, যে ভুলগুলো করেছি সেগুলো যেন না করি। আর আমাদের এখন একটাই চিন্তা যে ম্যাচগুলো আছে সেগুলোতে ম্যাচ বাই ম্যাচ প্রমাণ করতে হবে। আমাদের সবার মধ্যে যে সামথ্যর্ আছে তার শতভাগ দিলে আমরা যেকোনো দলকে হারাতে পারব।’ সদ্য সমাপ্ত অনূধ্বর্-১৯ এশিয়া কাপে ব্যাটে-বলে নিজেও ম্যাজিক্যাল কোনো ইনিংস উপহার দিতে পারেননি তৌহিদ। তার ব্যাট থেকে সবোর্চ্চ এসেছে ৩৫ রান। আর নিবির্ষ স্পিনে ৪ ম্যাচ থেকে আদায় করে নিয়েছেন মাত্র ২ উইকেট। তাতে হয়তো নিজে নিজেই অনুতপ্ত এই টাইগার যুবা অধিনায়ক। তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে আসন্ন এই সিরিজে নিজের সেরাটি দিয়ে এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স খেদ তিনি ঘোচাতে চাইছেন। ‘সবারই লক্ষ্য থাকে। আমারও আছে। আমি এশিয়া কাপে খুব একটা পারফমর্ করতে পারিনি। তো আমার ফোকাস এখন নিজের সেরাটা দেওয়ার ও পারফমর্ করার। একজন সিনিয় প্লেয়ার হিসেবে টিম আমার কাছ থেকে অনেক কিছুই আশা করে। আমি আমার সেরাটা দিতে চেষ্টা করব।’ লঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে যুবাদের অনুশীলনের ফাঁকে দলের কোচ নাভিদ নওয়াজ জানিয়েছেন এশিয়া কাপ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে যুব দলের বিশ্বকাপ মিশন। লক্ষ্য অন্তত বিশ্বকাপের ৬ মাস আগেই স্থিতিশীল একটি স্কোয়াড দাঁড় করানো। যুব দলের কোচ বলেন, ‘আসলে ছেলেদের শেখার শুরু হয়েছে সবশেষ এশিয়া কাপ থেকেই। আপনি যদি টুনাের্মন্টে ফিরে তাকান, এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই ১০ জনের অভিষেক করিয়েছি। সেখান থেকেই আমাদের শুরু। আর আমরা ভাল করেছি, এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল খেলেছি, খুবই ক্লোজ ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের কাছে হেরেছি। এই শ্রীলংকা সফরও গুরুত্বপূণর্। আমরা শ্রীলংকা সফরের শুরুতে দুটি অঘোষিত টেস্ট ম্যাচ খেলব, এরপর পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ। এই ম্যাচ গুলো স্কোয়াডের তরুণ ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা অজের্নর জন্য বড় ভূমিকা পালন করবে।’ যুব ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলো খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না সাধারণত। বহুজাতিক টুনাের্মন্টগুলোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করাই থাকে এসব সিরিজের লক্ষ্য। আসন্ন শ্রীলংকা সিরিজটাও অনেকটা এমনই বলে জানান যুব দলের কোচ। নাভিদ বলেন, ‘বোডর্ চাইবে যুব দল থেকেই জাতীয় দলের জন্য ক্রিকেটার তৈরি করতে। প্লেয়ারদের গড়ে তুলে ভবিষ্যতে পাইপলাইন সমৃদ্ধ করাটাই বিসিবির মূল পরিকল্পনা। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, ফলাফল, জয় এবং জয়ের সংস্কৃতি ক্রিকেটার গড়ে তোলার জন্য ভাল। আপনি যদি জয়ের মধ্যে থাকেন, তাহলে আপনি ভাল ক্রিকেটার পাবেন। সুতরাং ফলাফলটাও গুরুত্বপূণর্। হ্যাঁ, বড় দৃষ্টিকোণে জাতীয় দলের জন্য প্লেয়ার তৈরি করা আসল লক্ষ্য।’ সদ্য সমাপ্ত যুব এশিয়া কাপে দেখা গিয়েছে বোলিংটা যেমনই হোক, ব্যাটিংয়ের কারণে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। সে সমস্যা সমাধানে ২৩ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডের সবার ব্যাটিং পরখ করার চিন্তা করছেন দলের কোচ নাভিদ। তবে সবাইকে যথেষ্ঠ সুযোগ দেয়ার পক্ষেই রয়েছেন তিনি। ‘এই মুহূতের্ আমাদের ২৩ জনের একটা স্কোয়াড রয়েছে। নিবার্চকদের প্রস্তাব হলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাইকে সুযোগ দিয়ে দেখতে, কে কেমন করছে এবং কে কার থেকে ভাল। ধীরে ধীরে এটা করা হচ্ছে, প্লেয়াররা যেন ধারাবাহিকভাবে সুযোগ পায়। কারণ দেখা যায় কেউ এক দুই ম্যাচ খেলেছে। আমাদের যথেষ্ট সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাদেরকে নিজেদের খেলাটা বুঝতে দেয়ার সময় দিতে হবে। একই সাথে যথেষ্ট ক্রিকেটারকে সুযোগ দিতে হবে, যেন আমরা বিশ্বকাপের ৬ মাসের আগেই সেরা ১৫ জনের স্কোয়াড দাঁড় করাতে পারি।’