নবাগতদের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহীরা!

নবাগত ক্লাবগুলোতে বসেছে তারকার মেলা। ওই ক্লাবগুলো যেখানে জঁাকজমকপূণর্ভাবে দলবদল সেরেছে, ঢাকা আবাহনী-মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো দলবদল সেরেছে নীরবে। দলবদলে নবাগতদের দাপট, সেখানে বড় দলগুলো তাদের ঐতিহ্যকে ঠেলে দিচ্ছে হুমকির মুখে

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

মাহবুবুর রহমান
ঘরোয়া ফুটবলে নতুন মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে শিগগিরই। ইতোমধ্যেই দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। সেখানে ঢাকার ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী দলগুলোকে কিছুটা বিবণর্ই দেখিয়েছে। নবাগত ক্লাবগুলোতে বসেছে তারকার মেলা। ওই ক্লাবগুলো যেখানে জঁাকজমকপূণর্ভাবে দলবদল সেরেছে, ঢাকা আবাহনী-মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো দলবদল সেরেছে নীরবে। দলবদলে নবাগতদের দাপট, সেখানে বড় দলগুলো তাদের ঐতিহ্যকে ঠেলে দিচ্ছে হুমকির মুখে। খুব ভালো মানের দল গড়তে পারেনি মোহামেডান। দলটি তাই ‘এবার শিরোপা জিতব’Ñ এমন সাহসী বক্তব্য দিতে পারেনি। আপাতত ভালো খেলাই লক্ষ্য তাদের। প্রিমিয়ার লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীরও কি একই লক্ষ্য? দল নিয়ে বাফুফে ভবনে না এসে রাতের অঁাধারে খেলোয়াড়দের তালিকা পাঠিয়ে দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছে তারা, সেটা কি দলে মানসম্মত খেলোয়াড়ের অভাব থাকায়? এই প্রতিবেদককে ক্লাবটির ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু অবশ্য জানিয়েছেনÑ বরাবরের মতো এবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল গড়েছে ঢাকা আবাহনী। ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা পযর্ন্ত ছিল পেশাদার ফুটবল লিগের দলবদলের শেষ সময়। মোহামেডান সন্ধ্যায় এসে দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিলেও মিডিয়াকে একরকম এড়িয়েই চুপি চুপি দলবদল করেছে ঢাকা আবাহনী। আগের মতো জৌলুস নেই চট্টগ্রাম আবাহনীরও। মৌসুম শুরুর আগেই আলোচনায় নবাগত বসুন্ধরা কিংস। সাইফ স্পোটির্ং ক্লাবও আলোচনায় ঘরোয়া ফুটবলে মাঠে নামার আগেই দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে। জাতীয় দলের চার ফুটবলার তাদের দলে। বতর্মান জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভ‚ঁইয়া আছেন সাইফের তঁাবুতেই। আক্রমণভাগে দেশের বেশিরভাগ ক্লাবের মতো সাইফ স্পোটির্ং আস্থা রাখছে বিদেশিতেই। ডেনিস বলশাকভ, জনাথন করডোভার সঙ্গে আছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউন জিল পাকর্। কোচের দায়িত্বে স্টুয়াডর্ হল। বুক ফুলিয়েই এবার সব শিরোপায় চোখ রাখছে সাইফ স্পোটির্ং। অন্যদিকে, নবাগত বসুন্ধরা কিংস তো যাত্রা শুরু করেছে ‘কিং’-এর মতোই। তারকাসমৃদ্ধ ক্লাবটি বিদেশি নিয়েও চমক দেখিয়েছে। শেখ রাসেলও এবার ভারসাম্যপূণর্ দল গড়েছে বলেই ক্লাব কতাের্দর দাবি। কোচ সাইফুল বারী টিটুতে আস্থা রেখেছে তারা। বিদেশি ফুটবলারের মধ্যে ঘরের মাঠে পরীক্ষিত রাফায়েলের সঙ্গে আছেন ব্রাজিলিয়ান অ্যালেক্স। মাঝারি মানের ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা, বিজেএমসি, রহমতগঞ্জের মতো দলগুলো বরাবরের মতো তারুণ্যনিভর্র দল গড়েই লড়াই করতে প্রস্তুত। গত মৌসুমে চমক দেখিয়ে স্বাধীনতা কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আরামবাগ। ক্লাবটির সভাপতি মমিনুল হক সাইদ জানালেন, এবার তারুণ্যনিভর্র দল নিয়ে গত মৌসুম থেকে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দেয়ার কথা। ঘরের ফুটবলের শীষর্ পযাের্য় কেবলই পা রাখা বা নিজেদের জায়ান্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দৌড়ে থাকা দলগুলো সব শিরোপায় চোখ রাখলেও শিরোপা রেসে এখনই নিজেদের রাখতে সাহস পাচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। তবে তাদের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী আবাহনী মৌসুমের সকল শিরোপা ঘরে তোলার আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। ক্লাবটির ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বলেছেন, ‘গতবারের দুজন বাদে বাকি সবাই টিমে আছে। নতুন তিনজন যোগ হয়েছে। যারা নতুন এসেছে তারাও পরীক্ষিত খেলোয়াড়ই। আবাহনী সব সময় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল গড়ে। এবারও গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলটিই রয়েছে।’ আবাহনী কোচ হিসেবে রেখেছেন স্থানীয় কোচ জাকারিয়া বাবুকে। পরবতীের্ত প্রয়োজনে বিদেশি কোচ আনা হতে পারে। এখন অনুশীলন চলছে। তবে দলীয় অধিনায়ক এখনো কাউকে করা হয়নি। সামনেই ফেডারেশন কাপ। রুপু জানালেন, ফেডারেশন কাপ জিতেই মৌসুম শুরু করতে চায় আবাহনী, ‘আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। মাঠে গিয়ে খেলব। আবাহনী সব টুনাের্মন্টের শিরোপার জন্যই খেলে। ফেডারেশন কাপও এর ব্যতিক্রম নয়।’ সবের্শষ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলা ৫ ফুটবলার আছে আবাহনীতে। মিডফিল্ডে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা পূরণ করতে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলামকে নেয়া হয়েছে। দল ছেড়েছেন ইমন বাবু ও নাসিরুদ্দিন। তাদের বিকল্প হিসেবে মামুনল ছাড়াও তপু বমর্ণ এবং জুয়েল রানা এসেছেন। এ ছাড়া বিদেশিদের নিয়েও আশাবাদী আবাহনী।