চ্যালেঞ্জটা নিতে চান মিরাজ

আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। কঠিন অবস্থার চ্যালেঞ্জ আমি উপভোগ করি। আর পেছন থেকে যখন টিম ম্যানেজমেন্ট সাপোটর্ দেয়, আমাদের সিনিয়র প্লেয়াররা সমথর্ন দেয়, সবাই যখন ব্যাকআপ করে, তখন নিজের আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যায়

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি মেহেদী হাসান মিরাজ
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের জন্য গত ১৫ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরু হয়েছে। তবে অনুশীলনের প্রথম দিন থেকে থাকতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ভাইরাস জ্বর থেকে এখনো সেরে ওঠেননি পুরোপুরি। তবে খেলার পথে সেটা বড় কোনো বাধা নয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরাজই তো বড় ভরসার নাম, বিশেষ করে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে। এশিয়া কাপের ফাইনালে সাকিবের অনুপস্থিতিতে যেমন চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও চ্যালেঞ্জটা নিতে পিছপা হবেন না বলেই জানিয়ে দিলেন তরুণ অলরাউন্ডার। এশিয়া কাপের ফাইনালে মিরাজের ওপেন করাটা চমক বললেও কম বলা হয়। পরে জানা গেছে, ধারণাটা ছিল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জার। ফাটকাটা কাজেও লেগেছিল, লিটন দাসের সঙ্গে মিরাজের শতরান পেরুনো ওপেনিং জুটিতেই বাংলাদেশ দেখছিল বড় স্বপ্ন। যদিও শেষ পযর্ন্ত তা আর পূরণ হয়নি। তবে মিরাজ সেদিন যেমন করেছিলেন, সুযোগ পেলে এবারও চান চ্যালেঞ্জ নিতে, ‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। কঠিন অবস্থার চ্যালেঞ্জ আমি উপভোগ করি। আর পেছন থেকে যখন টিম ম্যানেজমেন্ট সাপোটর্ দেয়, আমাদের সিনিয়র প্লেয়াররা সমথর্ন দেয়, সবাই যখন ব্যাকআপ করে, তখন নিজের আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যায়। ফাইনালের আগের রাতে যখন আমাকে বলা হয় ওপেন করতে হবে, তখন মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই বলেছিলÑ করতে পারবি, সমস্যা নাই। তখন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটা বাড়ল। তখন তারা আরও কিছু কথা বলেছিল, যা শুনে আমি আরও বেশি আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম।’ আত্মবিশ্বাসী মিরাজ বললেন, দলের প্রয়োজনে যে কোনো কিছু করতে প্রস্তুত তিনি, ‘ফাইনাল ম্যাচ ওপেন করেছি, আমিও ভাবিনি আমি ফাইনালে ওপেন করব। মাশরাফি ভাই ম্যাচের আগের দিন রাতে বলেছেন, সবাই যারা সিনিয়র আছে সবাই অনেক সাপোটর্ দিয়েছেন। এই জন্য অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এটা থেকে আমি শিক্ষা নিয়েছি, যে কোনো মুহূতের্ আমাকে দলের প্রয়োজনে যে কোনো জায়গায় নামতে হতে পারে। আমার মানসিকতা থাকবে, যে কোনো সময় এমন কিছু হতে পারে।’ ওয়ানডেতে অবশ্য মিরাজের আসল চ্যালেঞ্জ হবে বল হাতে। শুরুতে ভালো করতে না পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে অফ স্পিনে দারুণ কাযর্কর তিনি। যদিও উইকেট সেই সাক্ষ্য দেবে না, কিন্তু মাশরাফি নিজেই বলেছেন মিরাজ এখন বল হাতে দারুণ উন্নতি করছেন। উইকেট না পাওয়া নিয়ে তাই খেদ নেই মিরাজের, বরং নিজের কাজটা করতে পেরেই খুশি, ‘ওয়ানডেতে আমি প্রথম দিকে যখন বল করি, প্রতিপক্ষ দলের ওপেনাররা যখন রান তাড়া করে খেলে, তখন আমার দায়িত্ব থাকে রান আটকে বল করা। আমি যদি রান থামিয়ে রাখতে পারি তাহলে আমার যে বোলিং পাটর্নার থাকবে, সে উইকেট বের করে নিতে পারবে। হয়তো আমি উইকেট পাচ্ছি না, হয়তো আমার পাটর্নার পাচ্ছে বা আরেকজন পাচ্ছে। দিন শেষে কিন্তু দলের সাহায্য হচ্ছে। এটাই আমি চেষ্টা করি, আমার হয়তো উইকেটের দরকার নেই। আমার পাটর্নার যে আছে, হয়তো মাশরাফি ভাই, মুস্তাফিজ, সাকিব ভাই বা রুবেল ভাই উইকেট বের করে নেবে।’ ২০১৬ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে যে বিস্ময় বালককে দেখেছিল বাংলাদেশ, সেই মিরাজ এখন দলের অন্যতম ভরসা। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে টেস্টে নিয়মিত হলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিয়মিত হতে একটু সময় লেগেছে তার। ২০ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের বোলিংয়ে চোখে পড়ার মতো উন্নতি দেখা গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে, এমনকি সবশেষ এশিয়া কাপেও। মিরাজ নিজেই জানালেন বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনতে বেশ কিছু বিষয়ে কাজ করেছেন গত কয়েক মাসে, ‘আগের তুলনায় এখন একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করছি। মানসিকভাবে একটু শক্ত হয়েছি। আর বোলিংয়ে কিছু বৈচিত্র্য এনেছি, এগুলো হয়তো কাজে দিচ্ছে। বৈচিত্র্য বলতে, আগে প্রায়ই এক গতিতেই বল করতাম। আগে সিমের পজিশন একটু অন্যরকম ছিল। সিমের গতিপথ পরিবতর্ন করেছি। আগে ৪৫ ডিগ্রিতে বল করতাম। এখন ৯০ ডিগ্রিতে করছি। একটু অদলবদল করে বল করছি। গতি পরিবতর্ন করে কিছু বৈচিত্র্য এনেছি।’ জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাকিব না থাকায় ব্যাটিং সামথের্্যর আরও কিছু প্রমাণ মিরাজের কাছে চাইবে দল। মিরাজ অবশ্য সাকিবের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে চান না, ‘সাকিব ভাই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। আমার এমন কোনো অনুভূতি আসে না। সাকিব ভাই যখন খেলেন, তখন চেষ্টা করি অলরাউন্ডার হিসেবে দলের জন্য ছোট ছোট অবদান রাখার। তিনি অনেক উঁচুমানের ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশকে অনেক দিন সাভির্স দিয়ে আসছেন। তিনি দীঘির্দন র‌্যাংকিংয়ের নম্বর ওয়ান অলরাউন্ডার ছিলেন। তার সঙ্গে আসলে আমার তুলনা চলে না।’