সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতিতেও ইতিবাচক রোডস

এটিকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখছি। অন্যদের জন্য এটি সুযোগ। যারা দলে এসেছে, যদি সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, সেটা আমাদের স্কোয়াডের গভীরতা বাড়াবে

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব-তামিম নেই মানেই আর দুশ্চিন্তা নয়! দুই অপরিহাযর্ সদস্য ছাড়া খেলার মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে মাঠের ট্রায়ালও হয়ে গেছে এশিয়া কাপে। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। স্টিভ রোডস বিষয়টিকে অন্যদের জন্য সুযোগ হিসেবে দেখছেন। সঙ্গে বিকল্প পারফমার্র তৈরির মঞ্চও মনে করছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ। তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ে দল এখন ঢাকায়। রোববার মিরপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নামবে দুদল। তার আগে সফরকারীদের বিপক্ষে আজ শুক্রবার সাভারের বিকেএসপি মাঠে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বিসিবি একাদশ। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলছে মাশরাফিদের শেষ সময়ের দিনে বৃহস্পতিবার অনুশীলনের ফঁাকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন টাইগারদের কোচ। সেখানে অবধারিতভাবেই উঠে এলো সাকিব-তামিমের না থাকার প্রসঙ্গটি। ‘এটিকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখছি। অন্যদের জন্য এটি সুযোগ। যারা দলে এসেছে, যদি সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, সেটা আমাদের স্কোয়াডের গভীরতা বাড়াবে। ‘দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে যদি প্রতিযোগিতা তৈরি হয়, খেলোয়াড়রা সবসময়ই তাদের সেরাটা পারফমের্র চেষ্টা করবে। এই প্রতিযোগিতাটা স্বাস্থ্যকর। আমরা দলে গভীরতা বাড়াতে চাই।’ যোগ করেন রোডস। সাকিব গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই চোট বয়ে বেড়াচ্ছিলেন। চোট নিয়েই এশিয়া কাপে খেলেছেন। কিন্তু ফাইনালে নামা হয়নি। তার আগেরদিনই ফিরে আসতে হয় ফোলা আঙুল নিয়ে। পরে পুঁজ জমে বড় ঝঁুকিতে পড়তে যাচ্ছিলেন। দেশের একটি হাসপাতালে পুঁজ বের করে অস্ট্রেলিয়ায় ডাক্তার দেখিয়ে ফিরেছেন এ অলরাউন্ডার। কবে মাঠে ফিরবেন সেটি নিশ্চিত নয়। আপাতত অস্ত্রোপচার লাগবে না সেটিই স্বস্তির সাকিবের জন্য। তামিম চোটে পড়েন এশিয়া কাপে খেলতে গিয়ে। উদ্বোধনী ম্যাচে একটি বাউন্সার এসে লাগে তার কজিতে। সোজা হাসপাতালে যেতে হয়। ফিরে এক হাতে ব্যাট করে মুশফিককে সঙ্গে দিয়ে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দিতে সাহায্য করেছিলেন। তবে তার আগে পাওয়া চোটেই শেষ হয়ে যায় টুনাের্মন্ট। ফিরে পুনবার্সনের মধ্যে আছেন এ ওপেনিং ব্যাটসম্যান। দল থেকে বাদ পড়লে ক্রিকেটাররা হতাশ হন, নিরাশায় ডুবে যান। উদ্দীপনা হারানোর সঙ্গে হারিয়ে বসেন ক্যারিয়ার পথই। তবে মানসম্মত ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে হয় ব্যতিক্রম। সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হককে সেই মানের ক্রিকেটারই মনে করেন স্টিভ রোডস। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ বলেছেন, যারা দল থেকে বাদ পড়লেও হতাশ বা নিরাশ হবেন না সৌম্য-মুমিনুল সে মানেরই ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে জায়গা হয়নি ওপেনার সৌম্য ও মিডলঅডার্র ব্যাটসম্যান মুমিনুলের। টাইগারদের কোচ বলেছেন, সৌম্য-মুমিনুল পারফমর্ করে ঠিকই দলে ফিরবে। স্টিভ রোডস বলেন, ‘খেলোয়াড়রা যখন দল থেকে বাদ পড়ে, তখন একাকিত্ব বোধ করে। হতাশ ও নিরাশ হয় এবং অবহেলিত বোধ করে। কিন্তু সৌম্য এবং মুমিনুলের মতো কোয়ালিটি সম্পন্ন ক্রিকেটারদের কাছ থেকে আমরা এটা আশা করি না। কারণ তারা তাদের পারফরম্যান্স দিয়ে যেকোনো সময় দলে ফিরে আসবে।’ সৌম্য-মুমিনুলের সঙ্গে জিম্বাবুয়ে সিরিজের ওয়ানডে থেকে বাদ পড়েছেন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। তিনিও একইভাবে দলে ফিরবেন বলে আশা রোডসের। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আলোচনার মধ্যেই চলছে জাতীয় ক্রিকেট। টাইগার কোচ রোডস লিগে খেলা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের ব্যাপারেও খোঁজ রাখছেন, ‘আমরা একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলব। তার আগে জাতীয় লিগে সৌম্যর দুটি ৭০’র বেশি স্কোর ও বল হাতে ৫ উইকেট আমাকে আনন্দিত করেছে। তার পারফরম্যান্স ছিল দুদার্ন্ত। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগও করেছি। তিনি এমন মাপের খেলোয়াড়, যিনি যেকোনো সময় দলের অন্য খেলোয়াড়কে ধাক্কা দিতে পারেন।’ জাতীয় দলে না থাকলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিসিবি একাদশের নেতৃত্ব দেবেন সৌম্য। সিরিজ শুরুর আগে জাতীয় লিগের পর নিজেকে প্রমাণ করার আরও একটা সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। কোচও বলছেন তাকে আশা রাখতে, ‘তাকে পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হবে এবং তার সঙ্গে অন্যদেরও, যারা মূল দলে ভালো করতে পারেনি। তাহলেই তারা আবার দলে ফিরে আসতে পারবে।’ তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে গত মঙ্গলবার ঢাকায় পা রেখেছে জিম্বাবুয়ে দল। প্রথম ওয়ানডে হবে ২১ অক্টোবর, শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২৪ অক্টোবর দ্বিতীয় ও ২৬ অক্টোবর তৃতীয় ওয়ানডে হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ৩-৭ নভেম্বর সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে গড়াবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ১১-১৫ নভেম্বর মিরপুরে।