সিনিয়রদের দিকে তাকিয়ে রাজপুত

সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব নিতে হবে। মাসাকাদজা প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিল। আশা করি মূল সিরিজেও সেই ধারা ধরে রাখতে পারবে। ব্রেন্ডন টেলর শুরুটা ভালো করছে, শেষ করতে পারছে না। আশা করি তারা বড় স্কোর পাবে- লালচঁাদ রাজপুত

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কাছে অসহায় আত্মসমপর্ণ করেছে জিম্বাবুয়ে। তাতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে আজ চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলতে নামবে অতিথিরা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এই ম্যাচটি তাদের জন্য সিরিজ বঁাচানোর শেষ সুযোগ। সুযোগটা কাজে লাগাতে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা আর ব্রেন্ডন টেলরের দিকে প্রত্যাশার দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিম্বাবুয়ে। তাদের মতো সিনিয়দের কাছ থেকে বড় ইনিংস দেখার আশায় দলীয় কোচ লালচঁাদ রাজপুত। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে দুদার্ন্ত এক সেঞ্চুরিতে নিজের ফমর্ জানান দিয়েছিলেন মাসাকাদজা। অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর দারুণ ফমের্ তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে হার এড়াতে ভূমিকা রাখতে পারেননি এই ডানহাতি। তার সঙ্গে ব্যাট হাতে ব্যথর্ হয়েছেন জিম্বাবুয়ে দলের নিভর্রতার প্রতীক টেলরও। শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজারাও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। রাজপুত মনে করেন, যদি একজন ব্যাটসম্যানও বড় ইনিংস খেলতে পারে তাহলে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দঁাড়াতে পারবে জিম্বাবুয়ে। দলীয় কোচ দায়িত্ব নিতে বলছেন প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটসম্যানকে, ‘সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব নিতে হবে। মাসাকাদজা প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিল। আশা করি মূল সিরিজেও সেই ধারা ধরে রাখতে পারবে। ব্রেন্ডন টেলর শুরুটা ভালো করছে, শেষ করতে পারছে না। আশা করি তারা বড় স্কোর পাবে। আমি নিশ্চিত যে তারা বড় ইনিংসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি বড় ইনিংস আসছে।’ চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগেরদিন মঙ্গলবার অনুশীলনের আগে সংবাদ সম্মেলনে রাজপুত বলেছেন, ‘শেষ ম্যাচটার দিকে যদি তাকান, আমাদের ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল। ওপরের পঁাচ ব্যাটসম্যানকে দায়িত্ব নিতে হবে। যদি একজন ব্যাটসম্যানও বড় ইনিংস খেলতে পারে, আমরা অবশ্যই দাপটের সঙ্গে খেলতে পারব। তারপরও আমরা যেভাবে লড়াই করেছি তাতে আমি খুশি। উইলিয়ামস ও জাভির্স সত্যিই ভালো ব্যাটিং করেছে। চিপাস (জুয়াও) ভালো শুরু করেছিল। কিন্তু কিছু জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। প্রধান জায়গাটা সেরা পঁাচ।’ প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বোলিংয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। কিন্তু শেষটায় সেই ধারাবাহিতকা রাখতে পারেনি তারা। ইমরুল-সাইফউদ্দিনরা দারুণ ব্যাটিংয়ে রানটাকে জিম্বাবুয়ের ধরাছেঁায়ার বাইরে নিয়ে যান। রাজপুত তাই সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের কাছে যেমন রান প্রত্যাশা করছেন, তেমনি ডেথ ওভারে বোলিংয়েও ভালো করার তাগাদাও দিচ্ছেন, ‘প্রথম ৩০-৩৫ ওভারে আমরা সত্যিই ভালো বোলিং করেছি। আমাদের ডেথ ওভারের দিকে নজর দিতে হবে। মাঝের ওভারগুলো ব্যাটসম্যানের জন্য খুব গুরুত্বপূণর্। আমরা দুটি ব্যাপারই দেখেছি। আশা করি, এই ম্যাচে আমরা ভালো করতে পারব।’ জিম্বাবুয়ে দলের পেসাররা সাফল্য পেলেও কাযর্কর ভূমিকা রাখতে পারছেন না স্পিনাররা। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলের স্পিন আক্রমণে কোনো পরিবতর্ন আসবে কিনা জানাতে চাইলে জিম্বাবুয়ে কোচ রাজপুত বলেন, ‘মাভুতা ভালো বোলিং করছে। সিকান্দার রাজা কেবল গত ম্যাচে এসেছেন। আমরা স্পিন আক্রমণ নিয়ে তেমন ভাবছি না।’ গত মাচের্ দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ বাছাইপবর্ উতরাতে ব্যথর্ হওয়ার পর প্রধান কোচ হিথ স্ট্রিকসহ কোচিং স্টাফের সবাইকে বরখাস্ত করেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর প্রথমে তিন মাসের জন্য এবং পরে দীঘের্ময়াদি দায়িত্ব দেয়া হয় রাজপুতকে। এই সময়ে তার অধীনে ১৫ ম্যাচের সবগুলোই হেরেছে জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে ৯টি ওয়ানডে, বাকি ৬টি টি২০। জুলাই-আগস্টে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে যে ৯ ম্যাচ হেরেছিল, সেখানে বেতনভাতা জটিলতায় শীষর্ ক্রিকেটারদের অনেককেই পায়নি জিম্বাবুয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সবাই ফিরলেও সেখানে ৫ ম্যাচের সবগুলোই হারে তারা। এরপর বাংলাদেশে এসে প্রথম ওয়ানডেতে হার। তবে তার দল পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙার খুব কাছেই আছে বলে বিশ্বাস রাজপুতের, ‘এটা অনেক বড় তালিকা (হারের), প্রথম আট ম্যাচে আমরা আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের পাইনি। এখন তারা ফিরে এসেছে। আমরা জয়ের কাছে যাচ্ছি, কিন্তু শেষটা করে আসতে পারছি না। দক্ষিণ আফ্রিকায় ১০০ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলাম (ওয়ানডেতে), কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। এমনকি টি২০তেও। আমরা সবাইকে এক সঙ্গে পেয়েছি, দিনটা শিগগিরই আসবে, যেদিন আমরা শেষ করে আসতে পারব।’