তবুও জিম্বাবুয়েকে সমীহ মাশরাফির

ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। জিম্বাবুয়েকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তাদের সব সিনিয়র খেলোয়াড়ই এসেছেন এবং আমরা জানি তারা তাদের সেরাটা খেললে আমাদের জন্য কঠিন হবে

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
এক সময়ের প্রবল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, এই দলটিই এখন বাংলাদেশের সঙ্গে ঠিকভাবে প্রতিদ্ব›দ্বীতাই গড়তে পারছে না। সবশেষ ১১টি ম্যাচে দলটিকে কেবলই পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছে টাইগাররা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলতি সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও চিত্রটা বদলায়নি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এরপরও জিম্বাবুয়েকে সমীহ করছেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মতুর্জা। প্রথম ওয়ানডেতে রোববার একটা পযাের্য় ব্যাটিং বিপযের্য় পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে অবশ্য মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে সঙ্গী করে দলকে কক্ষপথে ফেরান ইমরুল কায়েস। স্বাগতিকরা পায় দাপুটে জয়। ওরকম পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির কণ্ঠে প্রকাশ পেল প্রতিপক্ষের প্রতি সমীহ আর শ্রদ্ধা, ‘ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। জিম্বাবুয়েকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তাদের সব সিনিয়র খেলোয়াড়ই এসেছে এবং আমরা জানি তারা তাদের সেরাটা খেললে আমাদের জন্য কঠিন হবে। সত্যিকার অথের্ এশিয়া কাপে যে মানসিকতা নিয়ে নেমেছি আমরা, সেই মানসিকতা নিয়েই খেলছি, যেন ভুল না করি। কিন্তু এটা ক্রিকেট, আমরা তো এখানে হংকংয়ের সঙ্গেও হেরেছি। ওটা কিন্তু মাথায় আছে আমাদের।’ প্রথম ম্যাচে জয়ের পরও টপ অডাের্রর ব্যথর্তা বেশ ভাবাচ্ছে টাইগারদের। দলের বিপযের্য় লেট মিডল অডার্র ভালো করায় শেষ পযর্ন্ত চ্যালেঞ্জিং পুজি দঁাড় করায় বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক মাশরাফি দলের ওই বিপযের্য় এক অথের্ খুশিই হয়েছেন! এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস, ‘আমার দিক দিয়ে বলব আমি খুশিই হয়েছি। সাইফউদ্দিন রান করেছে। এই পজিশনটা দেখা। আমি আগেও বলছি হয়তো বা এটা আদশর্ পরিস্থিতি না। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে যা হয় আরকি, এই যে নিদির্ষ্ট পরিস্থিতিগুলো যদি আমরা না দেখতাম তাহলে ওদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়ত না, আমাদেরও বাড়ত না।’ মাশরাফি এ প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘অন্য দলের অনেক সময় টপ অডার্র রান পেলে লেট মিডল অডার্র এক্সপোজড হয় না। কিন্তু আমাদের লেট মিডল অডার্র এক্সপোজড হয়ে সেখান থেকে ফিরে আসতে পেরেছি, এটা কিন্তু আমাদের আরও ওপরে উঠতে সাহায্য করবে। সবসময় যদি আমরা মুশফিক আর রিয়াদে খেলা শেষ করি, বড় মঞ্চে গিয়ে যখন সেটা হবে না, তখন কিন্তু দল বিপদে পড়বে। সুতরাং এটা এক দিক দিয়ে ভালো যে লেট মিডল অডার্র এক্সপোজড হয়েছে এবং ওরা রান পেয়েছে।’ প্রথম ম্যাচে জিতে সিরিজ জয়ের পথে কিছুটা হলেও এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে টাইগার স্কোয়াড়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ থাকছে। সেটা কি করবে স্বাগতিকরা। ব্যাপারটি নিয়ে এখনও তেমন কিছুই জানেন না মাশরাফি। যদিও তিনি বলেছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই আছে বাংলাদেশ, ‘আমরা কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। ফজলে রাব্বিকে নেয়া হয়েছে। সে আরও সুযোগ প্রত্যাশা করে। সেটা দিতেও হবে। নাজমুল হোসেন শান্ত বসে আছে, তার সুযোগ পেতে হবে। বসে আছে আরিফুল হকও। আবু হায়দারও আছে। তবে আমাদের ক্লিনিক্যাল হতে হবে। ম্যাচ না হেরে একজন দুজন করে কীভাবে সুযোগ দিতে পারি সেটা দেখতে হবে।’ এশিয়া কাপ থেকে চোটে ভুগছেন মাশরাফি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে তাই তার খেলা নিয়ে ছিল শংকা। কিন্তু সেটাকে পাশ কাটিয়ে দলের প্রয়োজনে নিজ ইচ্ছাতেই খেলছেন তিনি। টাইগার অধিনায়ক নিজের চোটের ব্যাপারে বলেন, এখনও পুরোপুরি ফিট নন তিনি। গত বছরই টি২০ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মাশরাফি। টেস্ট তো ছেড়েছেন বহু আগে। দেশের জাসিের্ত এ ডানহাতি খেলেন শুধু ওয়ানডে। সেই চিন্তা থেকেই ঘরের মাঠে চোটকে সঙ্গী করেও খেলছেন তিনি, ‘আমার একটু সময়ের দরকার আছে। প্রায় তিন সপ্তাহ তো অনুশীলন করতে পারিনি। আমি হয়তো বিশ্রামে থাকতে পারতাম। কিন্তু আমি তো একটা ফরম্যাটেই খেলি। এরপরে হয়তো ৪-৫ সপ্তাহের একটা বিশ্রাম আছে। কিছুটা চিকিৎসার দরকার আছে। চিন্তা করছি।’ বতর্মান সময়ে যে ফিটনেস নিয়ে মাশরাফি খেলছেন তার চেয়েও ভালো ফিটনেস নিয়ে খেলেন তিনি। এ নিয়ে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘এশিয়া কাপ থেকে ফিরে ফিজিও খুব ভালো চিকিৎসা করেছে। যে কারণে মোটামুটি নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। কিন্তু এর থেকে আরো ভালো ফিটনেস নিয়ে খেলি।’ সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ আছে। মাশরাফির আশা তার আগেই পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠবেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর বিশ্রামের সময়টাতে চোটমুক্ত হতে চান তিনি, ‘বিশ্রামের সময় স্ট্রেংথের কাজ, ফিটনেস ট্রেনিং ইত্যাদি ঠিকমতো করতে পারলে আশা করি ঠিক হয়ে যাবে।’