ছয় দফা দাবিতে সোচ্চার ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

আমিনুল ইসলাম লিটন
দেশের ক্রীড়াঙ্গনের মৌলিক স্বার্থে ছয় দফা দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে ফেডারেশন ও এসোসিয়েশনগুলোর সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন ফোরাম। সম্প্রতি ফোরামের নির্বাহী কমিটির সভায় বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে সম্পাদকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় উঠে এসেছে দাবিগুলো। দেশের খেলাধুলার স্বার্থে উত্থাপিত দাবিগুলো আদায়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের শরণাপন্ন হবেন ক্রীড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকরা। সম্প্রতি ফেডারেশন ফোরামের নির্বাহী কমিটির সভায় ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যেখানে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে ছয় দফা দাবি সম্মিলিত একটি আবেদন জমা হয়। ফোরামের সভাপতি আসাদুজ্জামান কোহিনুর ও মহাসচিব কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল স্বাক্ষরিত চিঠিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব বরাবর অনুলিপিও দেওয়া হয়। কিন্তু চার বছর পার হয়ে গেলেও সেই দাবির একটিও বাস্তবের মুখ দেখেনি। জানা গেছে, দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাধারণ পরিষদ ও নির্বাহী পরিষদে সদস্য হিসেবে ফেডারেশন ও এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকদের অন্তর্ভুক্তি, বার্ষিক অনুদান বৃদ্ধি ও ক্রীড়াসামগ্রী প্রদান, হোস্টেল ও ভেনু্যসমূহের ভাড়ার সিদ্ধান্ত স্থগিতকরণ, অপরিকল্পিত ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ ও ক্রীড়াসামগ্রী ক্রয়-নীতিমালা এবং বিদেশে দল প্রেরণের বরাদ্দকৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনকে প্রদান। পুরনো দাবিগুলো বাস্তবায়ন নিয়েই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে নতুন করে দেন দরবার শুরু করতে যাচ্ছে ফেডারেশনগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী অক্টোবর মাসে সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সব ফেডারেশনের সম্পাদকদের কাছে থেকে আরও জোরালো মতামত গ্রহণ করবে ফোরাম। জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিষদে মাত্র ১৪টি ফেডারেশনের সভাপতি ফেডারেশনের প্রতিনিধিত্ব করেন। কিন্তু ফেডারেশন ফোরাম জানিয়েছে, ক্রীড়াঙ্গনের বাস্তবভিত্তিক পরামর্শ ও উদ্যোগ গ্রহণে সাধারণ সম্পাদকদের নির্বাহী কমিটিতে উপস্থিতি জরুরি। ক্রীড়া ফেডারেশনের সভাপতিরা খেলাধুলার সব কর্মকান্ডে ওয়াকিবহাল থাকেন না। তাই নির্বাহী পরিষদে সঠিক মতামত প্রেরণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। ক্রীড়া ফেডারেশন ও এসোসিয়েশনগুলোর বার্ষিক অনুদান বৃদ্ধি ও ক্রীড়াসামগ্রী প্রদানের বিষয়ে দাবি উঠে এসেছে তৃতীয় দফায়। ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক প্রতি বছর ১৫ থেকে ২৫% পর্যন্ত বার্ষিক অনুদানের টাকা বৃদ্ধি ও ক্রীড়াসামগ্রী সরবরাহের নিয়ম থাকলেও এখন তা করা হচ্ছে না। অনুদান বৃদ্ধি ও ক্রীড়াসামগ্রী প্রদানসহ সব ফেডারেশন ও এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক সংস্থার চাঁদা প্রদান ও বিদেশে দল প্রেরণের জন্য আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছে ফেডারেশন ফোরাম। ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন স্থাপনায় হোস্টেল ও ভেনু্যসমূহের ভাড়া প্রদানের যে রীতি চালু করা হয়েছে সে ব্যাপারে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে ফেডারেশনগুলো। ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো পৃষ্ঠপোষক সংগ্রহের মাধ্যমে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করে থাকে। অথচ ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন স্থাপনা ও বাসস্থানের ভাড়া আরোপ করা হয়েছে। যা ক্রীড়া সংগঠনগুলোর কাছে আপত্তিকর। ক্রীড়া কার্যক্রমের জন্য আর্থিক অনুদান বৃদ্ধি না হলেও দেশে অপ্রয়োজনীয় ক্রীড়া স্থাপনা নির্মান চলছে। এক্ষেত্রে ফেডারেশনগুলোর দাবি, ফেডারেশনগুলোর মতামত ও সুপারিশক্রমে ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ, খেলোয়াড়দের আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ক্রীড়াসামগ্রী ক্রয় করা। জানা গেছে, দেশের অনেক ক্রীড়া ফেডারেশন ও এসোসিয়েশনের প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য কোনো ভেনু্য নেই। অথচ অপরিকল্পিতভাবে কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে যা ক্রীড়াঙ্গনের জন্য কোনো কাজে আসছে না। ফেডারেশন ফোরামের চিঠির মাধ্যমে জানা গেছে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশে দল প্রেরণ ও প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও বেশিরভাগ সময়ে সেই বরাদ্দ ফেডারেশনগুলো পায় না, যা অন্য খাতে ব্যয় করা হয়। ফোরামের দাবি, বরাদ্দকৃত অর্থ ফেডারেশনগুলোকে যৌক্তিকভাবে প্রদান করা হোক। ফোরামের সভায় দাবি উঠেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাধারণ সভা আয়োজনের। যদিও করোনার কারণে দুই বছর ক্রীড়া কার্যক্রমই যেখানে প্রায় বন্ধ হয়েছিল, তাই সাধারণ সভা আয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় আছে বলে জানা গেছে।