ঘরের মাঠে খেলার রোমাঞ্চ রাহির

প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রুবেল হোসেন টেস্ট খেলতে চান না বলে খবর বেরিয়েছিল। সে খবর নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পেসারদের টেস্ট খেলার প্রতি অনীহা টের পাওয়া গেছে আগেও। অথচ আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি জানিয়েছেন, এই সংস্করণটাই তার সবচেয়ে প্রিয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদা পোশাকে নামতে মুখিয়ে আছেন ডানহাতি এই পেসার। আরেকটা বিশেষ কারণ আছে। যে মাঠে সিরিজের প্রথম টেস্টটি অনুষ্ঠিত হবে সেই সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামের পাশেই রাহির বাড়ি। সিলেট টেস্টে দুই পেসার খেলালেও মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে নাম থাকবে আবু রাহির। কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজে দলের অন্য পেসারদের বেহাল দশার মাঝেও ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সুইং করাতে পারেন, পুরনো বলে বেশ কাযর্কর। চোট সমস্যা না থাকলে সিলেটের অভিষেক টেস্টে লোকাল বয় হিসেবে রাহির খেলা তাই নিশ্চিতই। ঘরের মাটিতেই এই প্রথম টেস্ট খেলতে নামবেন, সেটাও আবার তার নিজে শহরে। আবু জায়েদ তাই রোমাঞ্চিত। সিলেটের অভিষেক টেস্ট বলে উপলক্ষ আরও বিশেষ, ‘এই মাঠে টেস্ট খেলার খুব ইচ্ছা ছিল। যখন এই মাঠে প্রথমবার প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলি তখন ৮টি বা ৯টি উইকেট পেয়েছিলাম। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত ইচ্ছা ছিল এই মাঠেই একটা টেস্ট খেলব। ইচ্ছা পূরণ হবে হয়তো।’ চেনা মাঠ, চেনা পরিবেশ। সিলেট আন্তজাির্তক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পুরো আবহই রাহির পক্ষে। উইকেটে হয়তো পেসারদের জন্য বিশেষ কিছু থাকবে না। কিন্তু অভিজ্ঞতা আছে বলেই দলও তার কাছ থেকে প্রত্যাশা করবে অনেক। প্রতিদান দিতে প্রস্তুত তিনিও, ‘যেহেতু এরকম উইকেটে আমরা ফাস্টর্ ক্লাস খেলতেছি। এরকম হয়ে গেছে যে পুরনো বলেই বেশি বোলিং করতে হয়। গত জাতীয় লিগে আমরা পুরনো বলে ভালো বোলিং করেছি। শুধু নতুন বল না পুরনো বল হাতেও দুই-একটা ব্রেক থ্রæ দিতে হবে। যে কারণে নতুন বল ও পুরনো বল-দুটি নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ মাশরাফি মতুর্জার পর শাহাদাত হোসেন রাজিব ছাড়া সাদা পোশাকে এখনো পযর্ন্ত কোন পেসারই থিতু হতে পারেননি। হয় চোটে পড়ে ক্যারিয়ার লম্বা হয়নি, নয়তো যথেষ্ট তাড়নার অভাবে হয়ে গেছেন কক্ষচ্যুত। টি২০ রঙচঙে সময়ে সাদা সাদা পোশাকের প্রতি টানটাও যেন মনে হচ্ছিল পেসারদেরই সবচেয়ে কম। আর তাই বাকিরা কে কি ভাবছে তা সরিয়ে রেখে রাহি শোনালেন নিজের কথা। বুধবার দলের অনুশীলন ছিল না। হোটেলে বিশ্রামের ফাঁকে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য আলাদা রোমাঞ্চ খেলা করল তার চোখেমুখে, ‘আমি সবসময় বলছি, টেস্ট ক্রিকেট সবচেয়ে উপভোগ করি। ওয়ানডে, টি২০ আমার পছন্দ তবে টেস্ট সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি। ছোটবেলা থেকেই টেস্ট ক্রিকেট পছন্দ করতাম।’ টেস্ট ক্রিকেট পছন্দ করি না, মুখে হয়তো অনেকেই তা বলতে চাইবেন না। কিন্তু সবচেয়ে প্রিয় বলার ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই কাজ করে আলাদা আবেগ। সেদিক থেকে রাহি উজ্জ্বল ব্যতিক্রমই বটে। এই প্রেমটা অবশ্য এক দিনে তৈরি হয়নি। পঞ্চাশটার বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে তবেই ঢুকেন টেস্ট দলে। লম্বা সময় বল করার অভ্যাসটা তৈরি হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। এখন সেটাই তার প্যাশনের জায়গা, ‘প্রথম শ্রেণিতে খেলার পর থেকেই এরকম হয়েছে। যেমন ধরেন উইকেট নিতে হলে অনেক সময় নিয়ে বোলিং করতে হবে। উইকেটের ক্ষুধাটা খুব বেশি ছিল আমার। এটা থেকেই আমার প্যাশন হয়ে গেছে, লম্বা স্পেল বোলিং করার। ’ ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্টে ৭ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু বাকি পেসারদের বেহাল দশায় মুস্তাফিজুর রহমানকে বাদ দিলে তিনিই এখন টেস্ট দলের মূল পেসার। দল কারো দিকে তাকিয়ে থাকলে অনেক সময় তৈরি হয় চাপ, রাহি সেটাই দেখছেন উল্টোভাবে, ‘চাপ বলব না, কারণ দলের আশা যদি থাকে তাহলে আমারও করার চেষ্টা থাকবে, আমারও আগ্রহ থাকবে। আমার মনে হয় না, এটা চাপ। দলের একটা চাহিদা বলে মনে করি।’