মিঠুনের প্রেরণায় তুষার-রাজ্জাক

প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বুধবার অনুশীলন ছিল না বাংলাদেশ দলের। অন্য সবার মতো হোটেল রুমে শুয়ে-বসেই দিন কাটিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। হোটেলেই সংবাদ মাধ্যামের মুখোমুখি তিনি Ñসৌজন্য
ঘরোয়া ক্রিকেটে তুষার ইমরান-আব্দুর রাজ্জাক আর মোহাম্মদ মিঠুন খেলেন খুলনা বিভাগের হয়ে। চলতি মৌসুমে রানের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে টেস্ট দলে ফেরার দাবি জোড়ালো করেন তুষার। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাকে বিবেচনায় না রেখে নিবার্চকরা সুযোগ দিয়েছে মিঠুনকে। সেই মিঠুনই বড় মঞ্চে টিকে থাকার প্রেরণা নিচ্ছেন তুষারের কাছ থেকে। মিঠুনের প্রেরণায় সতীথর্ রাজ্জাকও। তাদের থেকে অজির্ত অভিজ্ঞতা আর শিক্ষাটা টেস্টে কাজে লাগতে চান এই ব্যাটসম্যান। প্রায় এক যুগ ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছেন মিঠুন। টি২০ আর ওয়ানডের ধাপ পেরিয়ে তবেই তার সামনে দুয়ার খুলেছে টেস্ট দলের। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে এরকম পাকাপোক্ত হয়ে নামার উদাহরণ খুব কমই। ২০০৬ সাল থেকে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশিরভাগ ম্যাচই মিঠুন খেলেছেন খুলনার হয়ে। তারকায় ঠাসা খুলনা দলে জায়গা পাওয়াও তখন বেশ কঠিন। তবে মিঠুনের জন্যে দিনশেষে এমন লড়াই-ই হয়েছে শেখার মঞ্চ, ‘আমি যখন শুরু করি তখন থেকেই খুলনা দলে সুপারস্টারের ছড়াছড়ি। জাতীয় দলের ছয়-সাতজন এই দলে খেলে থাকেন। একজন বড় প্লেয়ারের সঙ্গে খেললে অনেক কিছু শেখার থাকে। সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবান যে খুলনা দলের হয়ে অনেকদিন থেকে খেলতে পারছি। ওটা অবশ্যই আমাকে সাহায্য করবে টেস্টে।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি শিখেছেন যাদের কাছ থেকে, মিঠুন আলাদা করে নিলেন তাদের নাম। দেশের প্রথম শ্রেণিতে সবোর্চ্চ উইকেট রাজ্জাকের, সবোর্চ্চ রান তুষারের। উইকেট, প্রতিপক্ষ ইত্যাদির সঙ্গে আন্তজাির্তক ক্রিকেটের হয়ত বিস্তর তফাত; কিন্তু প্রতিনিয়ত পারফমর্ করে যাওয়ার যে মানসিকতা তুষার আর রাজ্জাক দেখিয়ে যাচ্ছেন, তা মিঠুনের কাছে শিক্ষণীয়, ‘ওনাদের (তুষার-রাজ্জাক) কাছ থেকে একটা জিনিস শিখেছি- প্রতিটা ম্যাচেই ওনাদের পারফমর্ করার তাগিদ। তুষার ভাই যখন ব্যাটিংয়ে নামে, যত কঠিন পরিস্থিতি থাকুক ওনি কোন না কোনভাবে মানিয়ে নেয়। রাজ ভাইও একই। বোলিংয়ে যেদিন সাহায্য পান না (উইকেট থেকে) সেদিনও চেষ্টা করে যান।’ সাফল্য আসুক কিংবা না আসুক তুষার-রাজ্জাকের গুণটা নিজের ক্ষেত্রে কাজে লাগতে চান মিঠুন, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে শতভাগ চেষ্টা করাটা আমার হাতে আছে। সব সময় সফল হতে পারব সেটা হাতে নেই। একটা ভালো বলে আমি আউট হয়ে যেতে পারি। কাজেই ওনাদের মধ্যে যে চেষ্টা দেখেছি ওটা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে।’ টেস্ট দলে যে সুযোগ পাবেন নিজেও আশা করেননি মিঠুন। এমনকি গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হওয়ার পরও টের পাননি। এক সাংবাদিকের কাছ থেকে সুখবরটা জানতে পারেন। সুযোগটা হুট করে এলেও ভড়কে যাননি, প্রায় এক যুগ ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা তার ঝুলিতে জমা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জানালেন, কেবল উইকেটে পড়ে থাকাটাই একজন টেস্ট ব্যাটসম্যানের মূল লক্ষ্য নয়, সঙ্গে রানটাও গুরুত্বপূণর্। মিঠুন দুটোই করে দেখাতে চান, ‘অবশ্যই টেস্ট সংস্করণটা সময় নিয়ে খেলতে হয়। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আমারও পরিকল্পনা থাকবে সময় নিয়ে খেলার। কিন্তু দিনশেষে রানটা গুরুত্বপূণর্। যেটা অনুভব করি। একজন ব্যাটসম্যান উইকেটে যত সময়ই কাটাক তার ব্যাট থেকে যদি রান না আসে তবে কিন্তু সেট ব্যাটসম্যান নয়। অবশ্যই উইকেটে সময় নেব কিন্তু বাজে বলটা মারব। তাহলে চাপটাও কমে যায়।’ মিঠুন কি পারবেন টেস্টে সফল হতে? টি২০ দিয়ে আন্তজাির্তক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু এই ফরম্যাটে মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে। মাঝখানে কিছুদিন বিরতি দিয়ে ফিরলেন ওয়ানডে দলে। এশিয়া কাপে তার ব্যাটে দেখা গেল রান। এমন রান টেস্টেও উপহার দিতে চান মিঠুন। ক্রিকেটীয় মেধার কঠিন পরীক্ষায় উত্তীণর্ হওয়ার মন্ত্র নিয়েই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নামবেন তিনি, ‘যদি টেস্ট খেলতে পারি তখনই আমার পরিপূণর্তা আসবে। টেস্ট ক্রিকেটে যখন আমি সফল হবো তখনই আমার মনে হবে আমি ক্রিকেটের জন্য ফিট।’