সিলেটের অভিষেকে জয় চায় বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু আজ

আমার মনে হয় অনেক কিছুই প্রমাণ করার আছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। আমার উন্নতির অনেক জায়গা আছে। আমার জন্য এটা ভালো সুযোগ। নিজের সামথ্যর্ অনুযায়ী চেষ্টা করব Ñমাহমুদউল্লাহ

প্রকাশ | ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
দেশের সাতটি টেস্ট ভেন্যুর ছয়টিতেই অভিষেক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তবে স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী মঞ্চে কখনোই জয়োৎসব করতে পারেনি স্বাগতিকরা। শনিবার অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে যাত্রা শুরু করছে সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়াম। নয়নাভিরাম ভেন্যুটিতে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে শুরুটা স্মরণীয় করতে চান টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভেতরে নান্দনিক কাঠামো আর বাইরে ছায়াশীতল প্রাকৃতিক পরিবেশ। টিলা, চা বাগান, ছড়িয়ে থাকা সবুজের সমারোহের মাঝে দাঁড়িয়ে অনিন্দ্যসুন্দর স্টেডিয়ামটি দেখে মুগ্ধ সকলেই। টাইগার ক্রিকেটারদের মাঝেও অনাবিল প্রশান্তি। সেটি ধরে রাখতে ম্যাচটাও জিততে চায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের চোখ সেদিকেই নিবদ্ধ, ‘এই ভেন্যুটা অনেক সুন্দর। আমরা সবাই জয় দিয়ে সিলেটের অভিষেক উদযাপন করতে চাইব।’ জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডেতে উড়িয়ে দেয়ার পর টেস্টে নামার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুই দল। এই ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হচ্ছে সিলেটের। সেই অভিষেকটা জয়ে রাঙতে চান মাহমুদউল্লাহ। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে টাইগাদের অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমার মনে হয় অনেক কিছুই প্রমাণ করার আছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। আমার উন্নতির অনেক জায়গা আছে। আমার জন্য এটা ভালো সুযোগ। নিজের সামথ্যর্ অনুযায়ী চেষ্টা করব।’ টেস্ট দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে লেগেছে লম্বা সময়। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে বাংলাদেশ জানান দিয়েছে অভিজাত সংস্করণেও এখন দারুণ দল লাল-সবুজরা। ইংল্যান্ডকে তিনদিনে, আর অস্ট্রেলিয়াকে সাড়ে তিনদিনে হারানোর মধুর স্মৃতি বাড়িয়ে দিয়েছে প্রত্যাশাও। সিলেটের টেস্ট ম্যাচটি কয়দিনে গড়াবে? অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর খেলোয়াড়ীসুলভ জবাব, ‘ম্যাচ কয় দিনে যাবে এইসব নিভর্র করে আমরা কিভাবে পারফমর্ করছি ও জিম্বাবুয়েকে আমরা কীভাবে নিচ্ছি তার ওপর।’ ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে সহজে হারালেও টেস্ট কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। আর তাই ব্যাপারটি নিয়ে এরইমধ্যে সতীথের্দর সতকর্ করে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘প্রাপ্ত সম্মানটুকু জিম্বাবুয়েকে আমাদের দেয়া উচিত। কারণ তারা খুব ভালো দল। টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা ফরম্যাট যেখানে আপনি প্রতি সেশনেই চ্যালেঞ্জ আসবে এবং সেই চ্যালেঞ্জগুলো বুঝে সেই অনুযায়ী খেলাটা অনেক গুরুত্বপূণর্। আমাদের প্রতি বিভাগেই ভালো করতে হবে। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।’ সফরের প্রথম টেস্টের একাদশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাইছেন না অধিনায়ক, ‘প্রথম ম্যাচে হয়তো আমরা তেমন পরীক্ষা নিরীক্ষা নাও করতে পারি। আমরা সেরা একাদশ নিয়েই খেলব। কারণ প্রথম ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূণর্। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি২০ যে ফরম্যাটই হোক, প্রথম ম্যাচটি সবসময়েই গুরুত্বপূণর্। আর আমরা সবসময় বিশ্বাস করি যে আমাদের শুরুটা যখন ভাল হয় আমরা আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক দূর পযর্ন্ত নিয়ে যেতে পারব।’ দলে নেই দেশের সেরা দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল। এই যুগলের অনুপস্থিতি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটাকে অন্যদের জন্য প্রমানের সুযোগ বলে মনে করছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘তামিম-সাকিব যেহেতু নেই সবার জন্য এটা সমান সুযোগ। আমার জন্যও তাই। আমরা ওই সুযোগটিকে কিভাবে দেখছি এবং আমরা কতটুকু উদগ্রীব আছি পারফমর্ করার জন্য। এই চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের নিতে হবে। খেলোয়াড়রা সবাই সুযোগের অপেক্ষা আছে এবং সবাই ভালো পারফরম্যান্সের জন্য অপেক্ষায় আছে।’ সাকিবের অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্বভার বতেের্ছ মাহমুদউল্লাহর কাধে। এভাবে টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়াকে অনাকাক্সিক্ষত বলছেন ময়মনসিংহের এই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অনাকাক্সিক্ষত। কারণ সাকিব থাকলে অবশ্যই আমাদের দলের জন্য ভালো। আমাদের দলের অপরিহাযর্ একজন খেলোয়াড়ও। আশা করছি ও দ্রæত ফিরে আসবে। সহ-অধিনায়ক হিসেবে এই মুহূতের্ আমার কাঁধে দায়িত্ব।’ সাকিব ও তামিমের মতো দুই অপরিহাযের্ক ছাড়া টেস্ট খেলতে নেমে একাদশ নিবার্চন তাই কঠিন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের। সে পরিস্থিতির মুখে পড়ার কথাই জানিয়েছেন অধিনায়ক মাহামুদউল্লাহ, ‘সাকিব থাকলে টিমের ব্যালেন্স নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হয় না। সাকিব সব সময় ব্যালেন্স এনে দেয়। সাকিব যেহেতু নেই তাই আমাদের অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার নিয়ে খেলতে হবে। সাকিব-তামিম থাকলে আমাদের সেরা একাদশ দাঁড় করানো নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হতো না।’ অধিনায়কত্ব নিয়ে নিজের ভাবনার কথা বলতে গিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘আমি সবসময় খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা দেয়ার পক্ষে। এটা খুবই গুরুত্বপূণর্। স্বাধীনতা দিলেই যে যার জায়গা থেকে পারফমর্ করার সুযোগটা বেশি পায়।’