শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বছর পর মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
টি২০ বিশ্বকাপে রোববার শারজাহ স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে ফিফটি করার পর ব্যাট উঁচিয়ে দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম -ওয়েবসাইট

বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাট হাতে নিজেকে ঠিক মেলে ধরতে পারছিলেন না মুশফিকুর রহিম। বিশেষ করে টি২০ ফরম্যাটে সাম্প্রতিক সময়টা মোটেও ভালো কাটছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যানের। অবশেষে রোববার বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলেভের প্রথম ম্যাচে ব্যাটে হাতে ঝড় তুললেন এ তারকা। শ্রীলংকান বোলারদের একহাতে শাসন করে এ ডানহাতি দুই বছর পর টি২০তে দেখা পেলেন হাফ সেঞ্চুরির। ১৫৪ স্ট্রাইকরেটে খেলা ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ পেয়েছে দারুণ পুঁজি। এদিকে তৃতীয় উইকেটে তার সঙ্গে দুর্দান্ত খেলেন ওপেনার নাঈম শেখ। তিনিও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান। যে কারণে লংকানদের বিপক্ষে ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সংগ্রহ করে টিম টাইগার্স।

মুশফিকের এই ফিফটির মাহাত্ম্য আরও বেড়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চে হওয়ায়। কেননা এর আগে টি২০ বিশ্বকাপের ছয়টি আসর খেলেও কখনো ফিফটি ছুঁতে পারেননি মুশফিক। এবার সপ্তম আসরে নেমে ছয় আসরের আক্ষেপ ঘোচালেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

২৩ মাস ধরে ব্যাট হাতে ছিল না কোনো ফিফটি। এ সময়ের মধ্যে খেলা ১১ ইনিংসে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৩৮ রান, তাও কি না ৩৬ বল খেলে। সবমিলিয়ে দুই বছর পর টি২০তে মুশফিক পেলেন হাফ সেঞ্চুরি দেখা। এর আগে ৩ নভেম্বর ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন তিনি। ইনিংসের হিসেবে সংখ্যাটা ১১। ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। সেই ম্যাচে দল জয়ও পেয়েছিলেন।

কুড়ি ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা অফফর্মে থাকা মুশফিক জ্বলে উঠলেন বড় মঞ্চে, সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে রোববার নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭১ রান করে বাংলাদেশ। মুশফিক ৫৭ ও নাঈম করেন ৬২ রান। লিটন ও সাকিবকে হারানোর পর নাঈমকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। শুরু থেকেই এ তারকা তোলেন ঝড়। এক পর্যায়ে মাত্র ৩২ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে তিনি পৌঁছে যান হাফ সেঞ্চুরিতে। এরমধ্যে মুশি তৃতীয় উইকেটে নাঈমের সঙ্গে গড়ে তোলেন ৭৩ রানের জুটি। নাঈম শেখও তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত নাঈমের ইনিংস থামে ৬২ রানে। আর মুশি ৩৭ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে অপরাজিত থাকেন ৫৭ রানে।

এর আগের ছয় আসরে ২৫ ম্যাচ খেলে তার সর্বোচ্চ ছিল ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করা ৩৬ বলে ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটি। এবারের আসরে চতুর্থ ম্যাচে গিয়ে করলেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৫৭ রান করে।

আন্তর্জাতিক টি২০তে সবশেষ ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর দিলিস্নতে ভারতের বিপক্ষে ৪৩ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৬০ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন মুশফিক। সেই ইনিংস বিফলে যায়নি। ভারতের বিপক্ষে ঐ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৭ উইকেটে। কিন্তু এর পরপরই শুরু হয় রানখরা। গতকালের ম্যাচের আগে খেলা ১১ ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল যথাক্রমে ৪, ০, ১৭, ১৬, ০, ২০, ০, ৩, ৩৮, ৬, ৫ রান। একদমই জ্বলে উঠতে ব্যর্থ মুশফিক তিনবার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। আর চারবার ব্যর্থ হয়েছেন ডাবল ফিগারে যেতে।

শুধু তাই নয়, একবার মাত্র বিশের ওপরে রান করতে পেরেছেন। সেটা এই বিশ্বকাপেরই প্রথম পর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। সেদিন ৩৮ করে উইকেট অরক্ষিত রেখে স্কুপ করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড। আর পরের দুই খেলায় ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে চরম ব্যর্থ। যথাক্রমে ৬ ও ৫ রানে সাজঘরে ফেরা। এই ব্যর্থতার ধারা থামিয়ে অবশেষে মুশফিক পেলেন রানের দেখা, করলেন অনবদ্য এক ফিফটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে