দলে জয়ের আত্মবিশ্বাস আছে: রোডস

আমি মনে করি দলে চাপা আত্মবিশ্বাস আছে। তারা জানে যে, জিততে হলে এই ম্যাচের সবোর্চ্চ রান করতে হবে এবং এটা সবসময় ঘটে না। প্রথম ইনিংসের তুলনায় আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করতে চাই

প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
কঠিন এক লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। ৩২১ রানের সেই লক্ষ্য ছুতে হলে বাংলাদেশকে গড়তে হবে নতুন ইতিহাস। কিন্তু প্রথম ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল যেভাবে ব্যাটিং করেছে, তাতে তাদের ঘিরে আশাবাদী হওয়ার লোক খুব বেশি থাকার কথা নয়। তবে নৈরাশ্যবাদীদের দলে নন টাইগারদের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। শিষ্যদের মধ্যেও জয়ের আত্মবিশ্বাস দেখতে পাচ্ছেন তিনি। টেস্টে সবশেষ সাত ইনিংসে ২০০ রানের গÐি পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ। সেখানে ৩২১ রান তাড়া করে জয় আশা করা কঠিন। তবে প্রতিপক্ষ যখন জিম্বাবুয়ে, যাদের বিপক্ষে সবশেষ চার টেস্টের প্রতিটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ, তখন কিছুটা আশাবাদী হওয়াই যায়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলও আত্মবিশ্বাসী। দিন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে কোচ রোডস জানালেন সেই আত্মবিশ্বাসের কথা, ‘আমি মনে করি দলে চাপা আত্মবিশ্বাস আছে। তারা জানে যে, জিততে হলে এই ম্যাচের সবোর্চ্চ রান করতে হবে এবং এটা সবসময় ঘটে না। প্রথম ইনিংসের তুলনায় আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করতে চাই।’ প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনার ফিরেছিলেন শুরুতেই। পরবতীর্ ব্যাটসম্যানরাও হাল ধরতে পারেননি। তাই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৪৩ রানের মধ্যেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য শুরুটা ভালোই করেছেন দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস আর লিটন দাস। ১০.১ ওভার খেলে ২৬ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন তারা। অথার্ৎ পুরো ১০ উইকেট হাতে রেখেই আজ চতুথর্ দিনে ব্যাটিং শুরু করতে পারছে টাইগাররা। গোটা বিষয়টাতে বেশ খুশি রোডস, ‘আজ (সোমবার) দিনের শেষে লিটন ও ইমরুলের ব্যাটিংয়ে খুবই খুশি। তারা ভালো ভিত গড়েছে। তাদের আগামীকালও ভালো করতে হবে।’ প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যথর্তাই যে দলকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে সেটা অবলীলায় স্বীকার করে নিয়েছেন রোডস। তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার কোচিং স্টাইল পছন্দ করি, সবসময় বিশ্বাস রাখতে পছন্দ করি নিজের কোচিংয়ে। কিন্তু ক্রিকেটে সবসময় আপনি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই ঘটনা ঘটবে না। ওরা সবাই ভালো প্লেয়ার। কিন্তু আমরা নিজেদের বড় গতের্ ফেলে দিয়েছি। তারা জানে বিষয়টি। আমার আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।’ এ প্রসঙ্গে রোডস আরও বলেছেন, ‘আপনারা আমাকে প্রশ্ন করছেন, আমাকে উত্তর দিতে হচ্ছে। কিন্তু ওরা সবাই হতাশ, যেভাবে তারা আউট হয়েছে। ১৪৩ রানে অলআউট হওয়া খুবই হতাশার ছিল, কারণ উইকেট যথেষ্ট ফ্ল্যাট ছিল। আমি জানি না কেন, আমরা সবাই চেষ্টা করেছি সাদা বলের ক্রিকেট থেকে লাল বলের ক্রিকেটের মানসিকতা নিয়ে খেলতে, বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু সেই দিনটা ভালো যায়নি আমাদের। আমি মনে করি তারা দ্বিতীয় ইনিংসে ভুল শুধরে ফিরতে চাইবে। কি হবে সামনে আমি জানি না, কিন্তু আমরা চেষ্টা করব, এটা নিশ্চিত।’ কঠিন লক্ষ্য কীভাবে তাড়া করবে দল, সে প্রসঙ্গে রোডস বলেছেন, ‘আমরা টেস্টের পাঁচ সেশন জিতে ম্যাচ জেতার জন্য এসেছি। প্রথম সেশন অনেকটাই সমতা ছিল। আমরা পরের সেশনও জিতেছি। সুতরাং আমরা সঠিক পথেই আছি। আমরা আগামীকালের সেশনগুলোও জেতার চেষ্টা করব। ভালো দিক হচ্ছে, উইকেটটি এখনও র?্যাঙ্ক টানাের্রর মতো আচরণ করছে না। সব বল টানর্ করছে না। মাঝে মধ্যে কিছু বল টানর্ করছে। যতক্ষণ পযর্ন্ত আপনি বেশি দুশ্চিন্তা না করছেন, ততক্ষণ পযর্ন্ত খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা না।’ এমন উইকেটে শিষ্যদের নিভার্র হয়ে ব্যাটিং করে যাওয়ার পরামশর্ দিয়ে রোডস আরও বলেছেন, ‘যে বল আপনাকে আউট করবে সেটা আউট করবেই। কিন্তু এই উইকেটে আপনি স্পিনের বিপক্ষে খেলতে পারবেন। আজ ইমরুল ও লিটন দেখিয়ে দিয়েছে, তারা সেটা করার সামথ্যর্ রাখে। এখানে রান করার উপায় অবশ্যই আছে। আমরা দুটি বড় জুটির খোঁজে আছি এবং সেটা সম্ভব। বড় স্কোর তাড়া করে জেতা খুবই কঠিন, কিন্তু এটা অসম্ভব নয়।’ শেষ সাত ইনিংসে ২০০ পার হয়নি বাংলাদেশের স্কোর। বিষয়টা কিছুটা হলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে দলের। অবশ্য এরই মধ্যে উন্নতির কথা ভাবছেন রোডস, ‘টেস্টে দলের ব্যাটিং অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই ম্যাচে, যা খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু ঘরের মাঠে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে এমন ব্যাটিং হওয়াটা অবশ্যই হতাশার। সাধারণত এই উইকেটে আমরা ভালোই করি। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা বেশ কঠিন উইকেটে খেলেছিলাম। দুই দলের জন্যই কঠিন ছিল উইকেটগুলো। আমরা আমাদের ব্যাটসম্যানদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারব না। কারণ তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের আত্মবিশ্বাস দরকার।’ প্রতিপক্ষের বোলারদের প্রথম ইনিংসে ঠিক সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। যদিও এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলছেন রোডস। পরিষ্কার ভাষায় বলে দিলেন, ‘আমি তেমন কিছু মনে করি না। ওদের বোলার চাতারাই গতকাল বলেছে, আমরা ওয়ানডে মেজাজে খেলেছি। আমরা এক সপ্তাহ পেয়েছি ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিং থেকে বের হয়ে এসে টেস্ট মেজাজে প্রবেশ করার। সাদা বলের ক্রিকেটের নিয়মিত শটগুলো বাদ দিতে চেয়েছি আমরা। কিন্তু যখন দরকার ছিল তখন সেটা সম্ভব হয়নি। এটা সবার জন্যই শিক্ষা।’এখন দেখার এই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ব্যাটসম্যানরা নতুন ইতিহাস লিখতে পারে কি না।