ইতিহাস গড়তে পারবে টাইগাররা?

সবোর্চ্চ ২১৫ রান তাড়া করে জেতার নজির আছে টাইগারদের। সেটাও ২০০৯ সালের ঘটনা। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয় ছিল সেটি। এবার জিততে হলে ওই ইতিহাস পেছনে ফেলতে হবে, পেঁৗছুতে হবে ৩২১ রানের বন্দরে।

প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
‘আসলে টেস্ট ক্রিকেটটা রেকডের্র খেলা। রেকডর্ কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটেই বেশি হয়। আমরাও তাই চাচ্ছি, আমাদের দল এমন কোনো রেকডর্ই করুক।’Ñ উক্তিটা তাইজুল ইসলামের। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন বাসনাই ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের বঁাহাতি স্পিনার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টটা জিততে হলে এখন রেকডর্ই গড়তে হবে টাইগারদের। যে জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডে সিরিজে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ, যে দলটির বিপক্ষে সবশেষ চার টেস্টেই দোদর্Ð প্রতাপ দেখিয়ে জিতেছে টাইগাররা, সেই জিম্বাবুয়েই দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে স্বাগতিকদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ক্রমেই ব্যাটিংবৈরী হয়ে উঠছে সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামের ‘অভিষেক’ টেস্টের উইকেট। এমতাবস্থায় সেখানে বিজয়কেতন ওড়াতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে গড়তে হবে নতুন ইতিহাস। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যথর্তা বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছে খাদের কিনারে। অতিথিরা ছুড়ে দিয়েছে ৩২১ রানের কঠিন লক্ষ্য। চতুথর্ ইনিংসে অত রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই টাইগারদের। টেস্টে সিলেট আন্তজাির্তক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক রাঙাতে তাই দেখাতে হবে নিজেদের সামথের্্যর সবোর্চ্চটুকু। এতদিন যেটা করতে পারেনি দল, এবার করে দেখাতে হবে সেটাই। টস জিতে আগে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৮২ রান। বিপরীতে মাত্র ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা চার টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশের দুভোের্গর শুরু ওখানেই। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলাররা, বিশেষ করে স্পিনাররা চেষ্টা চালিয়েছেন দলকে টেনে তোলার। জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানে বেঁধে রেখে সেই চেষ্টায় অনেকটা সফলও হয়েছেন তারা। কিন্তু প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১৩৯ রানের লিডটা মিলিয়ে অতিথিরা পেয়ে গেছে লড়াইয়ের রসদ। সবমিলে জিম্বাবুয়ে পেয়েছে ৩২০ রানের লিড। তাতে জয়ের জন্য বাংলাদেশ পেয়েছে ৩২১ রানের কঠিন লক্ষ্য। ওই লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে বিনা উইকেটে ২৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। আরও ২৯৫ রান করতে হবে তাদের, হাতে সময় আছে দুদিন। দুটো দিন পড়ে থাকায় একটা বিষয় নিশ্চিত, জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে সিলেটের অভিষেক টেস্ট। আপাতত জয়ের পাল্লা ভারী জিম্বাবুয়ের দিকেই। কারণ, ইতিহাস বলছে কখনোই অত রান তাড়া করে জেতেনি বাংলাদেশ। সবোর্চ্চ ২১৫ রান তাড়া করে জেতার নজির আছে টাইগারদের। সেটাও ২০০৯ সালের ঘটনা। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয় ছিল সেটি। এবার জিততে হলে ওই ইতিহাস পেছনে ফেলতে হবে, পেঁৗছুতে হবে ৩২১ রানের বন্দরে। চ্যালেঞ্জটা তাই কঠিন। তবে চতুথর্ ইনিংসে ব্যাট করে বাংলাদেশের ৪০০ পেরোনো স্কোরও কিন্তু রয়েছে। ২০০৮ সালে মিরপুরে শ্রীলংকার বিপক্ষে জিততে না পারলেও ৪১৩ পযর্ন্ত গিয়েছিল টাইগাররা, যা এখন পযর্ন্ত কোনো টেস্টের শেষ ইনিংসে তাদের সবোর্চ্চ। এক দশক আগের ওই ইনিংস থেকে চাইলে এখন প্রেরণা খঁুজতে পারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। টেস্টের চতুথর্ ইনিংসে ৩০০ রানের গÐি পেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশ ঘটিয়েছে আরও তিনবার। তবে কোনোবারই জয় ধরা দেয়নি। এবার অবশ্য ৩০০ পেরোতে পারলে জয়টা অধরা থাকার কথা নয়। কিন্তু ওই পযর্ন্ত যাওয়াটাই তো ‘সাত সমুদ্র তেরো নদী’ পার হওয়ার মতো দুরূহ। চোটের কারণে দলে সেরা দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে পথটাকে আরও কঠিন দেখাচ্ছে। এখন প্রশ্ন কঠিন পথটা পেরোতে পারবে বাংলাদেশ? পুরো দুই দিন সময় হাতে আছে। সমথর্করাও আছেন অধীর অপেক্ষায়, নতুন ইতিহাস গড়ে জিতবে বাংলাদেশ।