ব্যাটিং অনুশীলনে তামিমের ফেরা

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
তামিম ইকবাল
সবশেষ এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই আঙুলে চোট পেয়েছিলেন, এরপর থেকেই দলের বাইরে তামিম ইকবাল। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজ চলছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দল অনায়াসে জয় পাওয়ায় তার অভাব সেভাবে পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতেই এই ওপেনারের অভাবটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে টিম বাংলাদেশ। স্টিভ রোডসের শিষ্যরা এখন মিরপুর টেস্টের জন্য প্রস্তুত করছে নিজেদের। এরই মধ্যে সুখবর দিলেন তামিম। না, মিরপুর টেস্টে ফিরছেন না এই বাহাতি। তবে আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ফেরার আভাস দিয়ে রাখলেন নেটে ব্যাটিং অনুশীলনে ফিরে। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে তামিম বড় নিভর্রতার নাম। বাংলাদেশের তো বটেই বতর্মান বিশ্বের সেরা ওপেনারদের মধ্যে অন্যতম তিনি। তার অনুপস্থিতি দলকে দুশ্চিন্তায় রাখবে, এটাই স্বাভাবিক। একইভাবে তার অনুশীলনে ফেরা দলে বইয়ে দিচ্ছে স্বস্তির বাতাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট থেকে ফিরেই জাতীয় দলের ফিজিও বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে গেছেন মিরপুরের একাডেমি মাঠে, সেখানেই নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তামিম। এই ওপেনারের ভাষায় ‘সেমি ব্যাটিং’ অনুশীলন। মূলত এই ওপেনারের ওই অনুশীলন দেখতেই ফিজিও তরিঘরি করে একাডেমি মাঠে ছুটে যাওয়া। ব্যাট হাতে নেটে ফিরলেও নিজের ভাবনায় অবিচল তামিম। এই বাহাতির আপাতত লক্ষ্য, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টের আগে পুরো ফিট হয়ে ওঠা। চোট কাটিয়ে ফেরার লড়াইয়ে এখন তিনি শেষ ধাপে। তবে এগুচ্ছেন খুবই সতকর্ভাবে। ব্যাটিং অনুশীলন শুরু করেছিলেন টেনিস বলে। এখন খেলছেন স্পিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর একাডেমি মাঠে ব্যাট করেছেন প্রায় পৌনে একঘণ্টা। তার ওই ব্যাটিং এখন স্বস্তির হাওয়া দিচ্ছে টাইগার শিবিরে। নেট সেশন শেষে তামিম জানিয়েছেন তার মাঠে ফেরার অগ্রগতির কথা, ‘শুরু করেছি টেনিস বল দিয়ে। আজকে করলাম স্পিন আর স্টিক দিয়ে থ্রো ডাউন। এখনও পযর্ন্ত বড় কোনো সমস্যা হয়নি। বেশি ব্যথা অনুভব করিনি। টুকটাক ব্যথা আছে। কিছু সুনিদির্ষ্ট শটে ব্যথা হচ্ছে। সেটা থাকবেই, কারণ হাতে দুবর্লতা আছে এখনও। শক্তি বাড়ানোর কাজ করছি আমি। শক্তি পুরোপুরি বাড়লে দুবর্লতাও কেটে যাবে। ইতিবাচক ব্যাপার হলো, ব্যাটিং না করার মতো ব্যথা হচ্ছে না।’ চোটের পর যখন পুনবার্সন শুরু করেছিলেন, তামিমের দৃষ্টি ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে। সিলেট টেস্টে দলের ব্যাটিংয়ের দুরাবস্থা দেখে মিরপুরে তামিমকে খেলানো যায় কিনা, এই নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন দল সংশ্লিষ্টরা। তবে রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া এই টেস্ট খেলছেন না তামিম। নিজেকে কোনো ঝুকির মধ্যে ফেলতে চান না এই ব্যাটসম্যান। তামিমের নজর এখন নেট সেশন পুরোপুরি গতিতে শুরু করার দিকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘সম্ভাবনা খুব সামান্য (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলা)। আমার মনে হয় না আমি পারব। সত্যি বলতে, আমি প্রস্তুতও নই। এছাড়া, ফিজিও অনুমতিও দেবেন না। এখন যেটা করছি সেটাকে ‘সেমি ব্যাটিং’ বলতে পারেন। পুরোপুরি নেট সেশন যতক্ষণ করব না, ততক্ষণ পর দলের জন্য, আমার নিজের দিক থেকেও এই টেস্টের জন্য নিজেকে ফিট ঘোষণা করব না।’ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন কিনা, এমন প্রশ্নে তামিম আরও বলেছেন, ‘খেলব কিনা বললে এই মুহূতের্ আমার উত্তর, না। আজকে মাত্র তৃতীয় দিন নেট করেছি। এখনও পুরোপুরি নেট সেশন করিনি। স্পিন খেলা আর ১৩০-১৪০ কিমি গতির বল খেলা অনেক ভিন্ন ব্যাপার। আমি জানি না ওটায় আমার হাত কিভাবে সাড়া দেবে। তবে এখনও পযর্ন্ত সবকিছুই ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। আশা করি আর তিন দিনের মধ্যেই পুরোপুরি নেট শুরু করতে পারব। তখন আরও ভালো বুঝতে পারব কোথায় আছি।’ চোট পুরোপুরি না কাটিয়ে, ন্যূনতম ঝুঁকি থাকলেও মাঠে নামার ইচ্ছা তামিমের নেই। যেভাবে অগ্রগতি হচ্ছে তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে ফিরবেন বলে আশাবাদী দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান। ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্ট। তার আগে ১৮ ও ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রামে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টের আগে ওই প্রস্তুতি ম্যাচে খেলবেন কিনা, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন তামিম। তামিম জানালেন, অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন, ‘আমি মনে করি যে প্রথম টেস্টের আগে ফিট হয়ে উঠব। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা নিভর্র করবে তখনকার অবস্থার ওপর। সাধারণত একজন ক্রিকেটার ইনজুরি থেকে ফিরলে টেস্ট সিরিজের আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পছন্দ করে। আজ থেকে তিন-চার সপ্তাহ আগেও আমার লক্ষ্য ছিল জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় টেস্ট খেলা। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ আরও কঠিন হবে, তার আগে এই ম্যাচটা খেলতে পারলে ভালো হতো।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি প্রস্তুতি ম্যাচের ওপর খুব বিশ্বাসী নই। আমি জানি নিজের প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হয়।’