শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হারের কারণ দুই ইনিংসের প্রথম ঘণ্টা :মুমিনুল

ম ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
চট্টগ্রাম টেস্ট হারের পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক -ওয়েবসাইট

সাদা পোশাকের ক্রিকেট এলেই সেই চিরাচরিত ফল। পরাজয়ের বিবর্ণ গল্প ছাড়া আর কিছুই নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে লিড নিয়েও হারতে হয়েছে বড় ব্যবধানে। পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে পাকিস্তান জিতে যায় ৮ উইকেটে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় হার দিয়ে।

চট্টগ্রামে মঙ্গলবার ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন হারের কারণ। তার মতে, চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসের প্রথম ঘণ্টা পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। যার ফলে মাঠ ছাড়তে হয়েছে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে, 'আমি মনে করি, দুই ইনিংসের প্রথম ঘণ্টাই আমাদের হারের কারণ। প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর এবং লিটন এগিয়ে নেয় দলকে। যদি আমরা আরও ১০০ রান পেতাম, তাহলে ভিন্ন কিছু হতো'- ঠিক এভাবেই বলেছেন মুমিনুল।

টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে মুমিনুল খেলেন ২১ বল। করেন ৬ রান। এমন বাজে পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচ শেষে নিজেকেই তুললেন কাঠগড়ায়। দলের সেরা চার ব্যাটসম্যানের ভূমিকা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তুলে মুমিনুল বললেন, 'শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করা উচিত, আমিসহ। চার নম্বরে আমি একটা বড় ইনিংস খেলতে পারলে দৃশ্যপট অন্যরকম হতো। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে ফেললে মোমেন্টাম ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। এরপর ২০০ রানের পার্টনারশিপ করলেও দিনশেষে হতো ৩০০। এমন উইকেটে ৩৩০ রান করে লড়াই করা খুব কঠিন।'

মুমিনুল বলেন, 'পার্থক্য এখানেই গড়ে দিয়েছে। আমরা দুই ইনিংসে ৪৯ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেললাম। অর্ধেক খেলা এখানেই শেষ। ওপর দিয়ে এ অবস্থা হলে খেলায় ফিরে আসা খুব কঠিন। ওপরে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করলে খেলায় ইতিবাচক দিক থাকত।'

পাকিস্তানের দুই পেসার ভিন্ন ভিন্ন ইনিংসে নিয়েছেন পাঁচটি করে উইকেট। সেখানে বাংলাদেশের দুই পেসারের পুরো ম্যাচে শিকার মাত্র দুটি। আবু জায়েদ রাহি ক্যারিয়ারে প্রথমবার দুই ইনিংসে ছিলেন উইকেটহীন। প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট নেন ইবাদত হোসেন।

ব্যাটিং ব্যর্থতার পাশাপাশি টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের কণ্ঠে পেসারদের নিয়ে ঝরল হতাশা, 'এ রকম উইকেট সমর্থন করি। পুরোপুরি ফ্ল্যাট ছিল। ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়ক ছিল। পেস বোলারদের জন্য কঠিন ছিল। আমার কাছে মনে হয়, ফ্ল্যাট উইকেটে কীভাবে বল করতে হয়, জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া কোচরা আছেন, উনারা হয়ত ভালো বলতে পারবেন। বিদেশে বল করা এক রকম, দেশে আরেক রকম।'

'আমার মনে হয়, বেশি বেশি চার দিনের ম্যাচ খেলা উচিত। ভারতে দেখবেন তারা প্রচুর ম্যাচ খেলে। আমাদের পেসারদেরও সুযোগ পেলে চার দিনের ম্যাচ খেলা উচিত এবং ফ্ল্যাট উইকেটে বল করাটা শিখতে হবে।'

বাংলাদেশের টপ অর্ডারের অবস্থা খুবই নাজুক। বিশেষ করে ওপেনিং জুটির বেহাল দশা দেখা গেছে। দুই অনভিজ্ঞ ওপেনার সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। অধিনায়ক মুমিনুল হকের মতে, কাজ না হলে মানুষ পরিবর্তনের চিন্তার কথা ভাবতে হবে তাদের। ওপেনিংয়ে সাদমানের অভিজ্ঞতা ৯ টেস্টের, সাইফ খেলেছেন ষষ্ঠ টেস্ট। এই টেস্টের আগে তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেছেন ১০ টেস্ট।

শান্ত এই টেস্টে ব্যর্থ হলেও বছরখানেক ধরে টেস্টে ভালো খেলছেন। সাদমান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেয়েছেন এক সেঞ্চুরি। সাইফের অবস্থা বেশ নাজুক।

তামিম ইকবাল না থাকলে ওপেনিংয়ে ঘাটতি পূরণে আরও বিকল্পের দিকে তাকানো যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের আভাস, বদলের চিন্তা আছে জোরাল, দরকার হলে বিবেচনায় আসবেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞরা, 'আপনার অফিসে কাজ করছেন, কিন্তু কোনো জুনিয়র কাজ করতে না পারলে তাহলে অবশ্যই আপনার তো মানুষ পরিবর্তন করতে হবে। যদি ওদের দিয়ে কাজ করাতে না পারেন, তাহলে অভিজ্ঞদের দিয়ে কাজ করাতে হবে। আপনি যা বলছেন, এর সঙ্গে একমত। কাজ না করলে অভিজ্ঞদের দিয়ে কাজ করাতে হবে। আমার কাছে মনে হয়, ওভাবে চিন্তা করা উচিত।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে