প্রাণবন্ত এক সঙ্গী মিরাজ

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ডাবল সেঞ্চুরি করা সতীথর্ মুশফিকুর রহিমকে এভাবেই বুকে জড়িয়ে অভিনন্দন জানান মেহেদী হাসান মিরাজ Ñবিসিবি
মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাট প্রথম দিনেই মিরপুর টেস্টে চালকের আসনে বসিয়ে দেয় বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও ছিল দারুণ, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে সতকর্ পদক্ষেপে এগিয়েছেন মুশফিক। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের পর দ্রæত মাহমুদউল্লাহ আর আরিফুল হকের বিদায়; বাংলাদেশের ইনিংস ৪০০ রানের আশপাশে থেমে যাওয়ারই উপক্রম হয়েছিল। ক্ষণিকের সেই শঙ্কা কাটিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে টাইগাররা। দলকে অতদূর পযর্ন্ত নিয়ে যাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূণর্ অবদান রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন এক ইনিংসেই রেকডের্র পর রেকডর্ গড়ে যাওয়া মুশফিককে। দিন শেষে সেই মুশফিক বললেনÑ মিরাজ প্রাণবন্ত এক সঙ্গী। ৫ উইকেটে ৩০৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ সকালের সেশন কাটিয়ে দিয়েছিল কোনো উইকেট না হারিয়েই। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের পর প্রথম ওভারেই আউট হন মাহমুদউল্লাহ। থিতু হতে পারেননি আরিফুলও। জিম্বাবুইয়ান পেসার কাইল জাভিের্সর জোড়া আঘাতে ৩৭৮ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এরপর মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে সামনে এগিয়ে নেন মিরাজ। হার না মানা ৬৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। এটাই তার ক্যারিয়ারসেরা। মুশফিকের সঙ্গে গড়েছেন ১৪৪ রানের জুটি। অষ্টম উইকেটে যেটা এখন বাংলাদেশের সবোর্চ্চ। মুমিনুল-মুশফিকের কীতির্গাথায় এই টেস্টে মিরাজকে নিয়ে আলোচনা হওয়ার সুযোগ সামান্যই। তবে একপ্রান্তে মিরাজ ছিলেন বলেই আরেকপ্রান্তে দঁাড়িয়ে একের পর এক রেকডর্ গড়ে যেতে পেরেছেন মুশফিক। দিন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিশ্বরেকডর্গড়া এই কিপার-ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘মিরাজের সঙ্গে ব্যাটিং আমি সব সময় উপভোগ করি। ও প্রাণবন্ত একজন সঙ্গী। ও খুব মজার একটা চরিত্র। ওর মতো একজন খেলোয়াড় মাঠে থাকা সব সময়ই উপভোগ্য। ও আমাকে যেভাবে বোঝাচ্ছিল মনে হচ্ছিল, ও দুইশ রানে ব্যাট করছে, আমি মাত্র ক্রিজে এসেছি।’ বাংলাদেশ দলে এখন মিরাজের আসল পরিচয় বোলার। তার ব্যাটিংটা হচ্ছে দলের জন্য বোনাস। তবে এই ডানহাতির ব্যাটিং দক্ষতাও মন্দ নয়। মিরাজের মধ্যে দারুণ সম্ভাবনা দেখেন মুশফিক, ‘আমি সব সময়ই বলি, ওর মাঝে অমিত সম্ভাবনা আছে। মনোযোগ আর প্রত্যয় ওর সবচেয়ে বড় ব্যাপার। অনেক সময় হয়তো বাজে শটে আউট হয়ে যায়, কিন্তু আজকে যেভাবে ব্যাটিং করেছে তাতে ও আগামী দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ খেলোয়াড় হতে পারে।’ নিজের রেকডর্গড়া ইনিংস নিয়েও ভীষণ খুশি মুশফিক। দুটি ডাবলসেঞ্চুরি হলো তার। দুটিকেই বিশেষ বলছেন মুশফিক, ‘দুটি ইনিংসই আমার জন্য স্পেশাল। তামিম, সাকিব ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। এখন আমাদের একটা ধারা এসে গেছে যে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারে।’ মুশফিকের বিশ্বাস, এভাবে চলতে থাকলে একদিন ৩০০ রানের ব্যক্তিগত স্কোরারও পাবে বাংলাদেশ, ‘আমি আমার নিজের ভেতর এটা বিশ্বাস করি। প্রথমে যখন ২০০ করেছি, তখন মনে হয়নি এটা প্রথম বা আবার কবে মারব। নিজের ওপর ওরকম বিশ্বাস ছিল না। এখন এটা পাওয়ার পর আমার বিশ্বাস একটু হলেও ফিরে এসেছে, এরকম আরও বড় অবদান রাখতে পারব। আমার মনে হয় আমাদের টপ-অডার্রদের কারও জন্য এটা ইম্পসিবল না।’