উইন্ডিজ সিরিজ

সাকিব-সৌম্যর সঙ্গে ফিরলেন নাঈম

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান এবং সৌম্য সরকার। এছাড়া শ্রীলংকার বিপক্ষে দলে থাকলেও ম্যাচ না পাওয়া নাঈম হাসান আবার স্কোয়াডে ঢুকেছেন। শুক্রবারই জানা গিয়েছিল তামিম ইকবাল প্রথম টেস্টে থাকছেন না। ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ফিরতে পারেন এ বঁাহাতি ওপেনার। ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ে সিরিজে ছিলেন না সাকিব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হঁাকানো সৌম্য এক বছর পর ফিরলেন টেস্ট দলে। ১৮ বছর বয়সী অফস্পিনার নাঈমকে ডাকা হয়েছে জাতীয় লিগের পারফরম্যান্স বিবেচনায়। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির এই টুনাের্মন্টে ২৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি, হয়েছেন সবোর্চ্চ উইকেটশিকারি। এই ত্রয়ীকে জায়গা করে দিতে জিম্বাবুয়ে সিরিজের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে লিটন দাস, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু জায়েদ রাহি, নাজমুল হোসেন শান্ত আর শফিউল ইসলামকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে ছিলেন ১৫ ক্রিকেটার। হোম সিরিজে টাইগার স্কোয়াডে ১৫ সদস্য রাখাই নৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য দলটা ১৩ সদস্যের। কারণটা বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল)। ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম শ্রেণির ওই আসরের জন্য বেশি খেলোয়াড় জাতীয় দলে ধরে রাখতে চাননি নিবার্চকরা। তাছাড়া খেলা যেহেতু ঘরের মাঠে, প্রয়োজনে যে কাউকে যেকোনো মুহ‚তের্ দলভুক্ত করার সুযোগ থাকছে। জাতীয় দলের প্রধান নিবার্চক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও বললেন, অন্যদের বিসিএলের প্রথম রাউন্ড খেলার সুযোগ দিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টের জন্য ১৩ সদস্যের দল গড়েছে স্বাগতিকরা, ‘হোম সিরিজে প্রয়োজন হলে যে কাউকে দলে ডেকে নেয়া যায়। যেহেতু বিসিএলও শুরু হচ্ছে, তাই আমরা স্কোয়াড ছোট রাখছি। তাতে ওই আসরে (বিসিএল) বাড়তি দুজন খেলোয়াড় পাব।’ এশিয়া কাপে পাওয়া চোট কাটিয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এই সিরিজে ফেরার সম্ভাবনা ছিল তামিমের। কিন্তু অনুশীলনে আবার নতুন করে চোটে পড়ায় এই ওপেনারের ফেরা হয়নি। চট্টগ্রাম টেস্টের আগে পুরোপুরি ম্যাচ ফিটনেস পাচ্ছেন না তামিমÑ চিকিৎসকদের এই রিপোটের্ তাকে ছাড়াই আর একটি টেস্ট খেলতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। তবে স্বস্তির খবর দিয়ে ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব। বঁাহাতের কনিষ্ঠা আঙুলের ইনজুরিতে ভোগা সাকিব এশিয়া কাপের মাঝপথে দেশে ফিরে কি দুশ্চিন্তায়ই না ফেলে দিয়েছিলেন সমথর্কদের। দেশে ফিরে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর গিয়েছিলেন মেলবোনের্। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারেননি। পরিস্থিতির মুখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের শুরুতে তার ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ দেখেছেন নিবার্চকরাও। সিরিজের শেষ দিকে এসে সাকিব খেলতে পারেন ওয়ানডে, এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন নিবার্চকরা। ফিরলেন বেশ আগেভাগেই। মাত্র ক’দিন আগে হাতে ব্যাট উঠিয়েছেন সাকিব। অনুশীলন শুরু করেন স্পিন বলের বিপক্ষে। পরবতীের্ত পেস বলে, ইতোমধ্যে হাতের শক্তি ফিরে পেয়েছেন তিনি। তাতেই দলে ফেরার সবুজ সংকেত পেয়ে গেছেন টেস্ট অধিনায়ক। এদিকে টেস্ট আর ওয়ানডে ক্রিকেটের আন্তজাির্তক আসরে প্রত্যাশা পূরণে ব্যথর্ হওয়ায় টপ অডার্র নাজমুল হোসেন শান্তর কপাল পুড়েছে। ২ টেস্টে ৪৮ এবং ৩ ওয়ানডেতে ২০ রানে আন্তজাির্তক ক্রিকেটে নিজের যোগ্যতা উপস্থাপনে ব্যথর্ শান্তকে আসন্ন চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য বিবেচনা করেনি নিবার্চকরা। জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাজে পারফরম্যান্সে মাশুল দিয়েছেন লিটন দাস। তবে টিকে গেছেন আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস। এ বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪ সেঞ্চুরি, ৪ ফিফটিতে ১৩ ম্যাচে ১২৪৯ রানে কি উচ্চতায়ই না নিজেকে উঠিয়েছিলেন লিটন। এশিয়া কাপের ফাইনালে দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংসে নিজেকে চেনানো এই ওপেনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। সিলেট টেস্টে ৯ ও ২৩ এবং ঢাকা টেস্টে ৯ ও ৬ রানে থেমে যাওয়া লিটনের টেস্ট ক্যারিয়ার খেয়েছে তাতেই ধাক্কা। আসন্ন চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে পাননি জায়গা। তবে অব্যাহত পারফরমেন্সে ১৩ মাস পর টেস্ট দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবের্শষ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ম্যাচ উইনিং ১১৭ রানে নিজেকে চেনানো সৌম্য সবের্শষ জাতীয় লিগে দারুণ পারফমর্ করেছেন। ৫ ম্যাচে ৬৭.২৮ গড়ে ৪৭১ রান করেছেন এই বাঁহাতি। ধারাবাহিক পারফরমেন্সের পুরস্কার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে পেয়েছেন জায়গা। সৌম্যর প্রত্যাবতের্নর পাশাপাশি সদ্য সমাপ্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট জাতীয় লিগে সবাির্ধক ২৮ উইকেট পাওয়ায় অফ স্পিনার নাঈম হাসান বিবেচ্য হয়েছেন চট্টগ্রাম টেস্টে। তবে সবের্শষ টেস্ট স্কোয়াডের দুই পেস বোলার আবু জায়েদ রাহি এবং শফিউল ইসলাম হননি চট্টগ্রাম টেস্টের দলে বিবেচ্য। দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ এবং নাঈম হাসান।