কোনো মতে টিকে থাকাই লক্ষ্য বারিধারার!

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরোয়া ফুটবলে বেশ পুরনো ক্লাব উত্তর বারিধারা। ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু হয়েছে তাদের। অর্থাৎ প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে তারা ফুটবল খেলছে। কিন্তু তেমন কোনো সাফল্য নেই। গত কয়েক মৌসুম ধরে প্রিমিয়ার লিগে খেললেও অধিকাংশ সময় নিচের স্তরেই কাটাতে হয়েছে তাদের। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ২০১৫-১৬ মৌসুমের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৮-১৯ মৌসুমে রানার্স আপ হওয়া উত্তর বারিধারার ক্লাব ইতিহাসে একমাত্র সাফল্য। তবে লিগে সাফল্য না থাকলেও নতুন প্রতিভাবান ফুটবলার উপহার দিয়ে থাকে ক্লাবটি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে সর্বপ্রথম খেলে উত্তর বারিধারা ক্লাব। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ২০১৩ মৌসুমে রানার্স আপ হয়ে সেই যোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু উঁচু স্তরের লিগে এসেও চমক দেখাতে পারেনি। পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে এক মৌসুম পরই (অবনমিত হয়ে) আবারও নেমে যেতে হয় চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। এরপর আবার ২০১৫-১৬ মৌসুমের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। ২০১৬ সালে খেলে প্রিমিয়ার লিগে। কিন্তু এই মৌসুমেও অবনমন এড়াতে ব্যর্থ হয় ক্লাবটি। পরের দুই বছর কাটাতে হয়েছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেই। ২০১৮-১৯ মৌসুমে আবারও রানার্স আপ হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসে তারা। তবে কোনো মৌসুমেই শিরোপা রেসে থাকার মতো বড় কোনো দল গড়তে পারেনি উত্তর বারিধারা ক্লাব। তরুণ উদীয়মান ফুটবলারদের ওপরই ভরসা করে লড়াই করেছে প্রিমিয়ার লিগে। গত মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ২৪ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছিল উত্তর বারিধারা। এবারের মৌসুম সূচক স্বাধীনতা কাপেও গ্রম্নপপর্ব পার হওয়া হয়নি। মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপে তারা অংশই নেয়নি। স্বাভাবিকভাবেই টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে উত্তর বারিধারাও পরবর্তী মৌসুমের ফেডারেশন কাপ থেকে নিষিদ্ধ হয়। এ ছাড়াও এই তিন ক্লাবকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাও গুনতে হয়েছে। সামনেই প্রিমিয়ার লিগ। কিন্তু এবারও হয়ত অবনমন থেকে পিঠ বাঁচানোটাই মূল উদ্দেশ্য তাদের। কারণ, দল গঠনে এবারও কোনো চমক দেখাতে পারেনি ক্লাবটি। বিদেশি কোটায় আগের মৌসুমে উত্তর বারিধারার হয়ে খেলা তিন বিদেশি ফুটবলারকে এই মৌসুমেও দলে রেখেছে ক্লাবটি। দুই উজবেক ফুটবলার ফজিলভ ও কচনেভের সঙ্গে মিশরীয় ফুটবলার মোস্তফা আব্দুল খালেক এবারও রয়েছেন উত্তর বারিধারায়। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আরেক মিশরীয় ফুটবলার সাইদ আব্দুল রহিম। এর আগেও উত্তর বারিধারাতে খেলে গিয়েছিলেন এই ডিফেন্ডার। স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে বড় কোনো নাম নেই। তবে এটা সত্য যে, তাদের হাত ধরেই অনেক ফুটবলার এসে এখন খেলছেন বড় ক্লাবে। যেমন গত মৌসুমে বারিধারার নেতৃত্ব দেওয়া ফরোয়ার্ড সুমন রেজা এবার খেলছেন বসুন্ধরা কিংসে। জাতীয় দলের জার্সিও উঠেছে এই ফুটবলারের গায়ে। যার পেছনে বড় অবদান উত্তর বারিধারা ক্লাবের। কোচের দায়িত্বেও স্থানীয় কোচ সোহেল রহমানকে রেখেছে তারা। স্বাধীনতা কাপে তিনটি ম্যাচ খেলেছে সোহেলের শিষ্যরা। এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে শেখ রাসেলের কাছে হেরেছে ১-০ গোলে। এরপর শেখ জামালের সঙ্গে গোলশূন্য (০-০) ড্র। শেষ ম্যাচে বিমান বাহিনীর সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র করায় গ্রম্নপপর্বই পেরুনো হয়নি। প্রথম টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্সের বিচারে বলা যায়, এবারও হয়ত লিগে রেলিগেশন এড়ানোর লড়াই করতে হবে ক্লাবটিকে। তবে বড় ক্লাবগুলোর কাছ থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়ার মতো অঘটনের জন্মও দিতে পারে ক্লাবটি। সে লক্ষ্যেই প্রস্তুত হচ্ছে তারা।