উইন্ডিজ সিরিজ

প্রস্তুতি ম্যাচেও চোখ রোডসের

টেস্ট দলে থাকা তিন ক্রিকেটারÑ সৌম্য সরকার, নাঈম হাসান আর মোহাম্মদ মিঠুনও খেলছেন এই প্রস্তুতি ম্যাচে। তাদের পারফরম্যান্স কাছ থেকে দেখাই হয়তো মূল উদ্দেশ্য ছিল কোচের। তবে দল আগে বোলিং করায় সৌম্য-মিঠুনের ব্যাটিং দেখা হয়নি রোডসের, তবে নাঈমের বোলিংটা দেখেছেন

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে রোববার শুরু হয়েছে বিসিবি একাদশ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। ওই ম্যাচের প্রথম দিনে দাপট দেখিয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা Ñবাংলানিউজ
প্রথম টেস্টের দল ঘোষণা হয়ে গেছে আগের দিনই। তাই বলে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে মাঠে নামা টাইগার ক্রিকেটারদের জন্য কোনো সুযোগ থাকছে না, তা কিন্তু নয়! ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজটা দুই টেস্টের। তাই প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করে দ্বিতীয় টেস্টের দলে ডাক পাওয়ার দাবি জোরালো করার সুযোগ থাকছে ক্রিকেটারদের জন্য। প্রথম টেস্টের দলে থাকা শিষ্যদের নিয়ে রোববার চট্টগ্রামে পা রেখেছেন স্টিভ রোডস। টাইগাররা উঠেছে বন্দরনগরীর রেডিসন বøু হোটেলে। সাকিব-মুশফিকরা যখন টিম হোটেলে চেক-ইন করতে ব্যস্ত, দলের প্রধান কোচ রোডস তখন ডাগআউটে বসে দেখেছেন বিসিবি একাদশ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা। রেডিসন বøু হোটেল আর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের দূরত্ব সময়ের হিসেবে মাত্র ৫ মিনিটের। হোটেলে ঢোকার আগে রোডস তাই ঘুরে এসেছেন স্টেডিয়াম, দেখে নিয়েছেন দুইদিনের ম্যাচের প্রথম দিনের শুরুটা। আগামী ২২ নভেম্বর থেকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট হবে মিরপুরে, ৩০ নভেম্বর থেকে। প্রস্তুতি ম্যাচে যারা ভালো করবেন, তাদের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে ওই টেস্টের দলে টানতে পারেন নিবার্চকরা। শনিবার এমন আভাসই দিয়ে রেখেছেন প্রধান নিবার্চক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেনÑ প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্সে কেউ সন্তুষ্ট করতে পারলে তার জন্যে দ্বিতীয় টেস্টের দলে ঢোকার পথ খোলা থাকবে। প্রধান নিবার্চকের ওই কথার প্রেক্ষিতে রোডস প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছেন, বিষয়টা পুরোপুরি এমন নয়। টেস্ট দলে থাকা তিন ক্রিকেটারÑ সৌম্য সরকার, নাঈম হাসান আর মোহাম্মদ মিঠুনও খেলছেন এই প্রস্তুতি ম্যাচে। তাদের পারফরম্যান্স কাছ থেকে দেখাই হয়তো মূল উদ্দেশ্য ছিল কোচের। তবে দল আগে বোলিং করায় সৌম্য-মিঠুনের ব্যাটিং দেখা হয়নি রোডসের, তবে নাঈমের বোলিংটা দেখেছেন। দেখেছেন দলের বাইরে থাকা দুই পেসার শফিউল ইসলাম আর রুবেল হোসেনের বোলিংও। নিবার্চক প্যানেলের সদস্য হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে মাঠেই দীঘর্ সময় কথা বলেছেন রোডস। আলোচনার বিষয় দলকেন্দ্রিকই হওয়ার কথা। পরের টেস্টের দলে টাইগাররা একজন পেসার বাড়তি হিসেবে নিলে রুবেল-শফিউলরা বিবেচনায় থাকছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দারুণ বোলিং করা আবু জায়েদ রাহিও আছেন বিবেচনায়। প্রস্তুতি ম্যাচে তাই এভাবে কোচের দৃষ্টি রাখা। পরে অবশ্য কোচ দৃষ্টি দিয়েছেন শিষ্যদের অনুশীলনেও। রোববার বিকেলে অনুশীলন করেছেন সাকিব-মুশফিকরা। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো না করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েছেন লিটন দাস। তিনি এখন খেলছেন প্রস্তুতি ম্যাচে। শুরুতে স্কোয়াডে না থাকলেও পরে দলভুক্ত করা হয় এই ওপেনারকে। সাইড স্ট্রেইনের চোট কাটিয়ে তামিম ইকবাল পরের টেস্টে ফিরতে না পারলে আবার বিবেচনায় আসতে পারেন লিটন। হঠাৎ করে তাকে প্রস্তুতি ম্যাচে ডাকা সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এদিকে, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিন পার করেছে সাবলীল খেলেই। কঠিন দিনে দারুণ বোলিং করে কোচের বাহবা কুড়িয়েছেন বিসিবি একাদশের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে নামা নাঈম। টেস্ট দলে ডাক পাওয়া এ অফস্পিনার রোববার নিয়েছেন দুটি উইকেট। দুদিনের ম্যাচের প্রথম দিন খেলা হয়েছে ৮৬.৩ ওভার। যার মধ্যে নাঈম একাই করেছেন ২৭ ওভার। আউট করেছেন সুনিল আমব্রিস ও শিমরন হেটমায়ারকে। বিসিবি একাদশের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল সন্তুষ্ট লোকালবয়ের বোলিং দেখে। জানালেন, ‘উইকেট অনুযায়ী খুব ভালো বোলিং করেছেন নাঈম।’ প্রথম দিনে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না তাদের। ৬ রান করা ক্রেইগ ব্রেথওয়েটকে সাতসকালেই সাজঘরের পথ দেখান শফিউল। তাতে দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। এরপর কায়রন পাওয়েল আর সাই হোপের ১৬৩ রানের জুটি। ৭২ রান করা পাওয়েলকে আউট করে জুটি ভাঙেন ফজলে রাব্বি। এরপর ১৭ রান করা অ্যামব্রিসকে বোল্ড করেন নাঈম। ৮৮ রান করে স্বেচ্ছা অবসরে গেছেন সাই হোপ। চতুথর্ উইকেটে দলীয় ২৩৯ রানের মাথায় শিমরন হেটমায়ার ২৪ রানে ফিরেছেন। এরপর শন ডওরিচও ফিরেছেন ২৪ রানে। রোস্টন চেজ ৩৫ রান করে রুবেল হোসেনের বলে এলবিডবিøউর ফঁাদে পড়েন। রেইফার ১৪* ও পল ১৮* রানে অপরাজিত আছেন। বিসিবি একাদশের পক্ষে নাঈম হাসান ২৬ ওভার বল করে ১০৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন, ফজলে মাহমুদ রাব্বী ও সৌম্য সরকার ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। এবাদত হোসেন, রবিউল হক, রিশাদ হোসেন উইকেট পাননি।