সেঞ্চুরিতে প্রস্তুতি তামিম-সৌম্যের

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিকেএসপিতে বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি হঁাকানোর পথে শট খেলছেন তামিম ইকবাল। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা এই বঁাহাতি বুঝিয়ে দিয়েছেন, মাঝের বিরতিতেও তার ফমের্ ভাটা পড়েনি Ñবিসিবি
হোক না প্রস্তুতি ম্যাচ, বিকেএসপির ছোট মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুঁড়ে দেয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য, মোটেও সহজ ছিল না। কঠিন সেই চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে পাড়ি দিয়েছেন তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকাররা। আলোর স্বল্পতায় থেমে যাওয়া ম্যাচে ডাকওয়াথর্-লুইস মেথডে ৫১ রানে জিতেছে বিসিবি একাদশ। বড় স্কোর তাড়া করে জিততে হলে টপ অডার্র ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিতে হতো, সেঞ্চুরি হঁাকিয়ে সেই দায়িত্বটা দারুণভাবেই পালন করেছেন তামিম-সৌম্য। তাতে আগামী রোববার মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে টাইগারদের প্রস্তুতিটা হলো দারুণ। প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই জয়ের উদযাপন হল সাদামাটা। নিজেদের মধ্যে হাত মেলানোতেই থাকল সীমাবদ্ধ। তবে কিছুটা আক্ষেপ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে থাকতেই পারে। দুই টেস্টের সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর প্রস্তুতি ম্যাচেও হারতে হবে, এমনটা হয়তো আশা করেনি তারা। বিশেষ করে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ৩৩১ রানের চ্যালেঞ্জিং পঁুজি গড়ার পর তো নয়ই। কিন্তু বল হাতে নিয়েই দলটি বুঝেছে, স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরাও নেমেছে আদাজল খেয়ে। আলোক স্বল্পতায় যখন খেলা বন্ধ হয়ে যায়, বিসিবি একাদশের রান তখন ৪১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪। অথার্ৎ শেষ ৯ ওভারে মাত্র ১৭ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। উইন্ডিজের ইনিংসের শুরুতে তামিম চা বিরতির সময়ে পানি নিয়ে দ্বাদশ ফিল্ডারের ভ‚মিকায় অবতীণর্ হয়েছেন। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে কব্জির চোট নিয়ে হাসপাতাল থেকে দলের প্রয়োজনে নেমেছেন দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিং। গøাভসে কেটে ব্যাট হাতে নেমে প্রকৃত দেশপ্রেমিকের দৃষ্টান্ত স্থাপনে নজির সৃষ্টি করা তামিমকে মাঠ থেকে ছিটকে ফেলেছে ওই ইনজুরি। মিস করেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও অনুপস্থিত থাকতে হয়েছে তাকে। ওয়ানডে সিরিজে সেই তামিমই ভালোভাবে ফেরার আভাস দিয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবের্শষ ওয়ানডে সিরিজে দুদার্ন্ত ব্যাটিংয়ে সিরিজ জয়ে অবদান রাখা তামিম বৃহস্পতিবার দুদার্ন্ত প্রত্যাবতের্নর আভাস দিয়েছেন। ২ মাস ২০ দিন পর ম্যাচ খেলতেনামা তামিম শুরু থেকেই দারুণ সব শট খেলে মাঠ মাতিয়ে রাখেন। অনুশীলন ম্যাচে ৭৩ বলে ১৩ চার ৪ ছক্কায় ১০৭ রানের ইনিংস দিয়েছেন উপহার। তার ৪টি ছক্কার একটি আছড়ে পড়েছে বিকেএসপি কমপ্লেক্সের বাইরে। সীমানা প্রাচীর ছাড়িয়ে গেছে শটটি। তামিমের এই সেঞ্চুরিই বিসিবি একাদশের চ্যালেঞ্জ সহজ করে দিয়েছে। সৌম্যের সেঞ্চুরি সেটাকে করেছে আরও সহজ। দুই মাস আগে এই বিকেএসপিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ১০২ রানের হার না-মানা ইনিংস খেলে জাতীয় দলে ফিরেছেন। ফিরেই করেছেন সেঞ্চুরি। উইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও হার না-মানা সেঞ্চুরিতে এই বঁাহাতি চিনিয়েছেন নিজের জাত। বিশুকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কায় ৮৫ বলে সুরভিত সেঞ্চুরিতে বিসিবি একাদশকে পেঁৗছে দিয়েছেন সৌম্য জয়ের বন্দরে। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির ব্যাটিং সমথর্কদের করেছে উদ্দীপ্ত। ১৮ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২২ রানের হার না-মানা ইনিংসে শ্লগের আদশর্ ব্যাটিং করেছন মাশরাফি। এর আগে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী ইমরুল কায়েস ফিরে যান ২৭ রান করে। মোহাম্মদ মিঠুন ৫, আরিফুল হক ২১, তৌহিদ হৃদয় ০, শামিম পাটোয়ারি ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে শাই হোপ ও কায়রন পাওয়েল ১৫ ওভারে তুলে ফেলেন শত রান। মাঝে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও শেষদিকে রোস্টন চেজ ও ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের ঝড়ে তিনশ’ পেরিয়েছে ক্যারিবীয়রা। উইন্ডিজ প্রথম উইকেট হারায় ১০১ রানে। পাওয়েলকে (৪৩) সাজঘরে পাঠিয়ে ব্রেক-থ্রæ আনেন বঁাহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। এরপর টাইগার বোলাররা নিয়মিত উইকেট তুলে নিলে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল অতিথিরা। ৩৮তম ওভারে ২১৫ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটি ঘুরে দঁাড়ায় সপ্তম উইকেট জুটির ৭৮ রানে। ৩২ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৪৮ রানের ইনিংস খেলা অ্যালেন সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ওই জুটি। অন্যপ্রান্তে চেজ চালিয়ে যান চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। ৫১ বলে ৬৫ রান করে অপরাজিত থাকেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। উইন্ডিজ ইনিংসের ভিত গড়ে দেয়া শাই হোপ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে আউট হন ৮১ রানে। ৮৪ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন ও মেহেদী হাসান রানা নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি ও অনূধ্বর্-১৯ দলের অফস্পিনার শামীম পাটোয়ারি।