শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বাংলাদেশ-শ্রীলংকা টেস্ট সিরিজ

বিপদের ভয়ে রানের গতি বাড়ায়নি বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২০ মে ২০২২, ০০:০০

দিনের তখনো অনেকটা সময় বাকি। তাইজুল ইসলামের জাদুকরী বোলিং বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছিল শ্রীলংকাকে দ্রম্নত গুটিয়ে ফেলার। কিন্তু দিনেশ চান্দিমাল ও নিরোশান ডিকেভেলার শক্ত প্রতিরোধে সেটি সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রাম টেস্টে ড্র মেনেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মুমিনুল হকের দলকে।

চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে অধিনায়ক মুমিনুল হক আক্ষেপ করে জানালেন, লিটন অসময়ে আউট না হলে তারা আরও আগ্রাসী হতে পারতেন। বিপদে পড়ার ভয়েই তাড়াহুড়ো করেনি দল।

প্রথম টেস্টে সমানতালে লড়েছে দুই দলই। বরাবরের মতো ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হওয়ায় জয়-পরাজয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। জিততে প্রতিপক্ষের ওপর যতটা প্রভাব খাটাতে হয়, সেটি পারেনি কেউই।

নিষ্প্রাণ ড্রয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মুমিনুল হক বললেন, 'আমার কাছে মনে হয় মাঝখানে ৬টা উইকেট পড়ার পর যদি আরেকটা উইকেট বের করতে পারতাম, তাহলে ফলটা অন্যরকম হতে পারত।'

ফল না এলেও এই টেস্ট থেকে প্রাপ্তির অনেক কিছু দেখছেন মুমিনুল। দুই সেঞ্চুরি, নাঈম হাসানের ৬ উইকেট। ব্যক্তিগত এসব অর্জন ও লড়াই করাকে বড় করে দেখছেন তিনি, 'প্রাপ্তির জায়গা বলতে দল হিসেবে সবাই ভালো খেলেছে। এটাই দরকার। আমরা যখন দল হিসেবে খেলি তখন ফলাফল করি।'

তবে দুই পেসারের কাছ থেকে আরেকটু বেশি প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ দলের, 'পেস বোলাররা আরেকটু ভালো বল করতে পারত প্রথম ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে শরিফুল ছিল না, খালেদ আরেকটু ভালো করতে পারত।'

নিষ্প্রাণ উইকেটে ফল বের করতে প্রতিপক্ষের ওপর দ্রম্নত রান চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা হতে পারত একটি ভালো চিন্তা। কিন্তু চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ হাঁটেনি সে পথে। ঝুঁকিহীন খেলতে গিয়ে রান আসে মন্থর গতিতে। শেষ দিনে যথেষ্ট সময় হাতে না থাকায় আর ফল বের করা যায়নি। অধিনায়ক মুমিনুল হক জানালেন, দ্রম্নত রান আনতে গেলে হতে পারত বড় বিপদ।

চতুর্থ দিনে নেমে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস খেলেন সতর্ক পথে। টেস্টে নিজের পাঁচ হাজার রান থেকে ১৫ রান দূরে থেকে দিন শুরু করেছিলেন মুশফিক। ওই ১৫ রান করতে তার লেগে যায় ৪৮ বল। লিটন তার চেয়ে একটু গতিময় থাকলেও তৃতীয় দিনের তুলনায় তিনিও ছিলেন মন্থর। প্রথম সেশনে ২৭ ওভার ব্যাট করে বাংলাদেশ আনে কেবল ৬৭ রান। লাঞ্চের পর ফিরেই মারতে গিয়ে ৮৮ রানে আউট হন লিটন। পরের বলে বিদায় নেন তামিম ইকবালও।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আরেকটি ড্রয়ের পর অধিনায়ক মুমিনুল জানালেন, বুঝেশুনেই নিরাপদ পথে হাঁটতে হয়েছে তাদের, 'যদি পাঁচদিন আপনি খেলা দেখেন। ওদের ব্যাটিংও দেখেন, আমাদের ব্যাটিংও যদি দেখেন। এই উইকেট এমন উইকেট ছিল আপনি টিকে থাকতে পারবেন। কিন্তু একটু বেশি যদি এক্সালারেট করতে যান তাহলে হয়তো উইকেট পড়ার সুযোগ বেশি থাকবে। যেটা আমার কাছে মনে হয়। ওই সময়ে লিটন যদি আউট না হতো তাহলে হয়তো আমরা সুযোগটা নিতে পারতাম। ওই সময় দুই তিনটা উইকেট পড়ে গেল। তামিম ভাই আউট হলো, লিটন আউট হলো। লিটন যদি মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে এক ঘণ্টা খেলতে পারত তাহলে আমরা অন্যরকম কিছু করতে পারতাম। আপনি যেটা বলছেন এটা সত্যি কিন্তু বেশি মারতে গেলে আউট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।'

শ্রীলংকার ৩৯৭ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ৪৬৫। তামিম খেলেন ১৩৩ রানের ইনিংস। নিজের সবচেয়ে মন্থরতম সেঞ্চুরিতে ২৮২ বলে ১০৫ করেন মুশফিক। পরে চার সেশনে ম্যাচ শেষ করার আর সময় ছিল না। শেষ দিনের শেষ ঘণ্টায় যখন দুদল ড্র মেনে নেয় লঙ্কানরা এগিয়ে ১৯২ রানে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে