বিশেষ এক সেঞ্চুরির অপেক্ষায় পঞ্চপাÐব

প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রায় এক যুগ ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পঞ্চপাÐব খ্যাত জাতীয় দলের সিনিয়র পঁাচ ক্রিকেটারÑ মাশরাফি বিন মতুর্জা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্ব ক্রিকেটে কোনো দলে এমন পাঁচ ক্রিকেটারের সমন্বয় খুবই কম দেখা গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আজ এই পঞ্চপাÐব বিশেষ এক সেঞ্চুরি পূণর্ করতে যাচ্ছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল। ১৪১ বছরের আন্তজাির্তক ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পযর্ন্ত এমন ৬৪টি পঞ্চপাÐবের দেখা মিলেছে। একাদশে এই পাঁচজনই ছিলেন, এখন পযর্ন্ত বাংলাদেশের খেলা এমন ম্যাচের সংখ্যা ৯৯টি। টেস্টে এই পাঁচজনই খেলেছেন এমন ম্যাচ এখন পযর্ন্ত হয়েছে একটি। ওয়ানডেতে এমন ম্যাচ হয়েছে ৬৯টি। আর টি২০ ম্যাচ হয়েছে ২৯টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তারা খেললেই দেশের হয়ে একসঙ্গে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১০০টি ম্যাচ খেলার অনন্য গৌরব অজর্ন করবেন। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ১টায়। বাংলাদেশে সাধারণত ক্রিকেটারদের একটু বয়স হয়ে গেলেই দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোডর্ (বিসিবি) এই পাঁচ ক্রিকেটারকে দীঘর্ সময় ধরে সুযোগ দিয়েছে। কারণ এই পঞ্চপাÐবের হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে এসেছে বিশাল অজর্ন। নিজ নিজ ভ‚মিকায় প্রত্যেকেই সফল। ধারাবাহিকভাবে পারফমর্ করে চলেছেন। তারাই আজ ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে দঁাড়িয়ে। এই ম্যাচ আবার আরও একটি মাইলফলক ছেঁায়ার হাতছানি দিচ্ছে ‘অধিনায়ক’ মাশরাফিকে। আজ টস করতে নামলেই সাবেক অধিনায়ক এবং বতর্মান নিবার্চক হাবিবুল বাশার সুমনকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পযর্ন্ত বাংলাদেশকে ৬৯টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাবিবুল। এখন পযর্ন্ত তিনিই বাংলাদেশকে সব থেকে বেশি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই রেকডের্ আজ ভাগ বসাতে যাচ্ছেন মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে ৬৯তম ম্যাচে নামতে যাচ্ছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচ সংখ্যায় হাবিবুলকে ছেঁায়ার অপেক্ষায় থাকলেও সফলতার প্রতিযোগিতায় আরও অনেক আগেই তাকে ছাড়িয়েছেন মাশরাফি। কারণ তার অধীনে সবোর্চ্চ সংখ্যক ম্যাচে জয়ের মুকুট উঠেছে বাংলাদেশের মাথায়। ৬৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া হাবিবুল ৪০ হারের বিপরীতে জয় পেয়েছেন ২৯টিতে। শতকরা ৪২ ভাগ ম্যাচে জয়ী অধিনায়ক তিনি। সেখানে এখনো এক ম্যাচ কম নেতৃত্ব দেয়া মাশরাফির ২৭ হারের বিপরীতে জয় ৩৯টি। জয়ের শতকরা হার ৫৯.০৯ ভাগ। ৫০ ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া সাকিব আল হাসান ২৬ হারের বিপরীতে পেয়েছেন ২৩টি জয়। ৩৮ ম্যাচে অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের জয় ৮টিতে আর ৩৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া মুশফিকুর রহিমের জয় এসেছে ১১ ম্যাচে। তবে এত অজর্ন আর পরিসংখ্যানের যত যাই হিসেব হোক এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই মাশরাফির। তার কাছে বাংলাদেশের জয়ের দিনগুলোই শুধু ‘স্পেশাল’। নিজের ২০০তম ম্যাচের আগেও জানিয়েছিলেন, ‘আমার আসলে এসব খেয়াল নেই। আমি আগেও বলেছি, এইগুলো আমাকে স্পশর্ করে না। এগুলো আমার কাছে এত গুরুত্বপূণর্ও না। গুরুত্বপূণর্ হচ্ছে দেশের হয়ে ম্যাচ জেতা। ম্যাচের উপরে আর কিছুর গুরুত্ব একেবারেই নেই। এসব চিন্তা করে খেলার সুযোগ নেই। আমাদেরকে জিততে হবে এটাই।’ ম্যাচ শেষেও একই কথা জানিয়েছিলেন। তবে সে যাই হোক, অধিনায়কের বিশেষ দিন বলে কথা। যেমনটা ছিল ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে। কেক কেটে অধিনায়কের বিশেষ দিন উদযাপনসহ ১১ জনের দারুণ লড়াইয়ে অধিনায়ককে জয়ও উপহার দিয়েছেন সতীথর্রা। আরেকটি বিশেষ দিনে মাঠে নামবেন অধিনায়ক, বিশ^কাপের পর যদি ক্রিকেটকে বিদায় বলেন তাহলে ‘হোম অফ ক্রিকেট’ গ্রাউন্ডে এটাই হতে পারে তার শেষ ম্যাচ। তাই এই দিনটিও জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে টাইগাররা। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজে মঙ্গলবারই সিরিজ জিতে ২-০ তে এগিয়ে থাকার জন্য মুখিয়ে আছে মাশরাফি বিন মতুর্জার দল।