টি২০ বলেই সতকর্ বাংলাদেশ

‘টি২০ সিরিজের জন্য ওদের দলে নতুন কয়েকজন এসেছে। আমার মনে হয় এই দলটি খুব কঠিন একটি প্রতিপক্ষ হবে। এটা এমন একটা সংস্করণ, যা ওরা খুব ভালো করে জানে Ñস্টিভ রোডস

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
টি২০ ব্যাটসম্যানদের খেলা। মাঠে নেমে ব্যাটসম্যানরা চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাবেনÑ এমন প্রত্যাশা নিয়েই গ্যালারিতে হাজির হন দশর্করা। তামিম ইকবালেরও তা অজানা নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি২০ ম্যাচ সামনে রেখে রোববার সিলেটে ব্যাটিং অনুশীলনে টাইগার ওপেনারের তাই এমন রুদ্র রূপ Ñবিসিবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ক্যারিবীয়রা ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ, সেটি সবারই জানা। টি২০ ক্রিকেটের বতর্মান বিশ্বচ্যাম্পিয়নও তারা। একমাত্র দল হিসেবে এই সংস্করণে তারা জিতেছে দুটি বিশ্বকাপ। অন্যদিকে, এই ফরম্যাটটার সঙ্গে এখন ঠিক সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। স্বভাবতই ক্যারিবীয়দের নিয়ে বেশ সতকর্ টাইগার শিবির। টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ধারাবাহিকতার অভাব অনেক আগে থেকেই। চলতি বছরেও ততটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। আফগানিস্তানের কাছেও ধবলধোলাইয়ের লজ্জা পেতে হয়েছে টাইগারদের। চলতি বছরে এ পযর্ন্ত ১৩টি ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে মাত্র চারটিতে। এর দুটি আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, দুই দলের সবশেষ সিরিজে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাওয়া ওই সাফল্যই এখন ঘরের মাঠে ক্যারিবীয়-বধে টাইগারদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। বাংলাদেশকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও। টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজ জিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে সাকিব আল হাসানের দল। এবার টি২০ সিরিজেও জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চায় তারা। তবে টি২০’র বতর্মান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারানোটা ভীষণ কঠিন হবে বলেই মনে করছেন টাইগাদের কোচ স্টিভ রোডস। শিষ্যদের সতকর্ করে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে রেখেছেন, চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি বাংলাদেশ। সবশেষ টি২০ সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। রোডসের লক্ষ্য ওই জয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটানো। প্রতিপক্ষকে সমীহ করে তিনি বলেছেন, ‘আমরা ফেভারিট কি না সেটি বলা কঠিন। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ জিতে আমাদের দল আত্মবিশ্বাসী। শেষটাতেও আমরা হাসতে চাই। তবে টি২০ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ফরম্যাট। ওরা এই সংস্করণে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এ কারণে ওদের হারানো খুব কঠিন হবে। ওদের আমরা ক্যারিবিয়ানে হারিয়েছিলাম, সেটা ছিল আমাদের জন্য বিশেষ এক জয়। এটা কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল তবে ছেলেরা ফ্লোরিডায় খুব ভালো করে সিরিজ জিতেছিল। এবার আমাদের ছেলেরা জিততে উদগ্রীব হয়ে আছে।’ ওয়ানডে ফরম্যাটে অনেকদিন ধরেই ভালো খেলছে বাংলাদেশ দল। টেস্ট ফরম্যাটেও ঘরের মাঠে ভালো খেলা শুরু করেছে টাইগাররা। সে তুলনায় টি২০ ফরম্যাটেই বরং পিছিয়ে সাকিব আল হাসানের দল। এর কারণ কি হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে রোডস বলেন, ‘আমি যখন প্রথম এলাম তখন দলের খেলোয়াড়দের পাওয়ার হিটিং ও শারীরিক শক্তিতে ঘাটতি লক্ষ্য করেছিলাম। আমাদের দলের খেলোয়াড়রা ক্যারিবীয়দের মতো শক্ত-সামথর্্য নয়। তবে আশার কথা হলো এই দলে বেশ কয়েকজন আছে যারা বড় শট খেলতে পারে। আশা করি তারা নিজেদের সেরাটা মাঠে দিতে পারবে।’ গত জুলাই-আগস্টে ক্যারিবিয়ানে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশের কাছে অন্য দুই সংস্করণে সিরিজ হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশে এসে হেরেছে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। রোডস মনে করেন, একের পর এক হারে আহত দলটি মরিয়া থাকবে চিত্রটা পাল্টাতে, ‘টি২০ সিরিজের জন্য ওদের দলে নতুন কয়েকজন এসেছে। আমার মনে হয় এই দলটি খুব কঠিন একটি প্রতিপক্ষ হবে। এটা এমন একটা সংস্করণ, যা ওরা খুব ভালো করে জানে।’ প্রতিপক্ষকে সমীহ করে সিরিজ জয়ের ছক কষছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ। শিষ্যদের কাছে তার চাওয়া আরেকটি চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স, ‘জিততে আমরা নিজেদের সেরাটা দেব। ছেলেরা সবসময় তাই করে। দারুণ সব পারফরম্যান্সে ওরা আমাকে বিস্মিত করে চলেছে। এখন আমরা কিছুটা ধারাবাহিকতা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য খুব ভালো খবর।’ জেতার জন্য নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েই লড়বে শিষ্যরা, রোডসের এমনই বিশ্বাস। সেই বিশ্বাস বুকে নিয়েই রোববার শিষ্যদের অনুশীলন করিয়েছেন তিনি। ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর একদিন বিশ্রামে কাটানো টিম বাংলাদেশ সাত সকালেই অনুশীলনে নেমে পড়ে। সকাল ১১টায় অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিজয় দিবসের দিনে নিধাির্রত সময়ের আগেই সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে হাজির হয় সাকিব আল হাসানের দল। সিলেটে শীতের সকালে সবুজ মাঠে প্রবেশ করেই কিছুক্ষণ রানিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের ঝালিয়ে নেয় টিম বাংলাদেশ। মূল অনুশীলন শুরুর আগে ক্রিকেটের মাঝে ফুটবল নিয়েও কিছুটা সময় কাটায় টাইগাররা। এরপর রোডসের সঙ্গে আলোচনা শেষে যার যার মতো ফিল্ডিং, বোলিং, ব্যাটিং নিয়ে নেমে পড়েন সবাই।