অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই ব্যাটিং দুদর্শা

সাকিব দেখিয়েছে যে, আমরা ওদের গতি আরেকটু বেশি ব্যবহার করতে পারতাম। আমার মনে হয়, আমরা অতি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেছিলাম। আমরা যখন বলের গতি ব্যবহার করতে পারতাম, তা না করে চড়াও হতে চেয়েছিলাম

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
নিল ম্যাকেঞ্জি
পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে দলের পুঁজিতে ৫৪ রান, উইকেট নেই চারটি। রানের চাকা ঘুরছে ভনভন করে, সমানতালে পড়ছে উইকেটও। এই চিত্রই বলে দেয়Ñ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের অতি আক্রমণাত্মক মনোভাবের কথা। এমন কৌশলে খেলে আখেরে ক্ষতিই হয়েছে স্বাগতিকদের। ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসায় লড়াই করার মতো পুঁজিটাই পেলেন না বোলাররা। হারতে হয়েছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কঁাধে বড় রানের বোঝা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরিস্থিতি না বুঝে প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চড়াও হতে গিয়ে টাইগার ব্যাটসম্যানরা বিলিয়ে এসেছে তাদের উইকেট। তাতে ১২৯ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। ৫৫ বল হাতে রেখেই ওই রান টপকে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের ব্যাটিং পরামশর্ক নিল ম্যাকেঞ্জি মনে করছেন, অতি আগ্রাসী ব্যাটিংই তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি২০তে স্বাগতিকদের এমন দুদর্শার কারণ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বড় হারের জন্য দলের ব্যাটিংকে দুষলেন সাবেক এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান, ‘আমার মনে হয় না, আমরা যথেষ্ট দ্রæত শিখছি। ইনিংসের শুরুতে (শেলডন) কটরেল আর (ওশান) থমাসের বলে বাড়তি গতি ছিল। আমরা জানতামও ওরা দ্রæত গতিতে বল করবে।’ দলপতি সাকিব আল হাসান ছাড়া ক্যারিবীয় পেসারদের গতি ব্যবহার করতে পারেনি টাইগার শিবিরের আর কোনো ব্যাটসম্যান। ম্যাকেঞ্জি সেই দিকটা সামনে টেনে বললনে, ‘সাকিব দেখিয়েছে যে, আমরা ওদের গতি আরেকটু বেশি ব্যবহার করতে পারতাম। আমার মনে হয়, আমরা অতি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেছিলাম। আমরা যখন বলের গতি ব্যবহার করতে পারতাম, তা না করে চড়াও হতে চেয়েছিলাম।’ গত ৫ আগস্ট নিজেদের সবশেষ টি২০ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর টেস্ট আর ওয়ানডে নিয়েই ব্যস্ত সময় কেটেছে টাইগারদের। ওই দুই সংস্করণে ভালোও করেছে তারা। কিন্তু প্রায় সাড়ে চার মাসের বিরতি দিয়ে আরেকটি টি২০ ম্যাচ খেলতে নেমে ঠিকঠাক মানিয়ে নিতে পারেনি সাকিবের দল। ম্যাকেঞ্জি মনে করছেন, কয়েক মাসের বিরতির জন্য ওয়ানডে ক্রিকেটের মেজাজ থেকে টি২০ সংস্করণের মেজাজে ফিরতে সময় লাগছে তার শিষ্যদের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা বেশ কিছু দিন পর টি২০ খেললাম। ৫০ ওভারের ক্রিকেট আর ২০ ওভারের ক্রিকেটে অনেক পাথর্ক্য আছে। আমার মনে হয়, আমরা ব্যাটিংয়ে তাড়াহুড়া করেছি।’ সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচ সামনে রেখে রোববার সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছিল বাংলাদেশ দল। নেটে ব্যাটসম্যানরা ম্যাচের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেন বড় শট খেলার অনুশীলন করে। মাঠে গিয়েও বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন তারা। তবে দলের যে পরিকল্পনা ছিল, তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেননি কেউ। ম্যাকেঞ্জি মনে করছেন, টি২০ ক্রিকেটে কেবল বড় শট খেললেই সাফল্য আসবে না, সফল হতে চাইলে খেলতে হবে স্মাটর্ ক্রিকেট, ‘আমরা নেটে প্রচুর বড় শট অনুশীলন করেছিলাম। তবে আপনার গেম প্ল্যান আর নিদির্ষ্ট বোলারের ওপর আপনি কতটা কাযর্কর হবেন তার ওপর এর সাফল্য নিভর্র করে। আপনার এমন বোলারদের বিপক্ষে চড়াও হতে হবে যাদের বলের গতি একটু কম। যারা একটু দ্রæত গতির তাদের সামলাতে আপনার একটু স্মাটর্ হতে হবে।’ শেলডন কটরেল আর ওশান থমাসের মতো গতিময় বোলারদের বিপক্ষে ওই স্মাটর্ ব্যাটিংটাই দেখাতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।