ভাগ্য আমাদের পক্ষে ছিল না: মাটিের্নজ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
শিরোপা জেতা হলো না ইডেন হ্যাজাডের্র। মঙ্গলবার ফ্রান্সের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার পর বেলজিক তারকাকে সান্ত¡না দিচ্ছেন দলের সহকারী কোচ থিয়েরি অরি Ñওয়েবসাইট
বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের আরেকটি ব্যথর্ যাত্রা। রাশিয়া বিশ্বকাপে আশা জাগিয়েও শেষতক হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ইডেন হ্যাজাডর্-রুমেলু লুকাকুদের। মঙ্গলবার ফ্রান্সের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছেন তারা। ম্যাচ শেষে দলটির স্প্যানিশ কোচ রবাতোর্ মাটিের্নজ জানিয়েছেন, ভাগ্য বেলজিয়ামের পক্ষে ছিল না। বছর চার আগে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত আসরের কোয়াটার্র ফাইনালে থেমে গিয়েছিল বেলজিয়াম। দুই বছর পর ইউরোতেও শেষ আটে ভেস্তে যায় তাদের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। দলটির সোনালি প্রজন্মের তারকারা এবার একবুক আশা নিয়ে পা রেখেছিল রাশিয়ায়। একের পর এক ম্যাচ জিতে ৩২ বছর পর তারা উঠে গিয়েছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের আসরের মতো এবারও ফাইনাল খেলা হলো না বেলজিয়ামের। ফ্রান্সের বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ অবধি সমান তালে লড়ে গেছে বেলজিয়াম। দুই দলের আক্রমণভাগ সম-শক্তিসম্পন্ন হলেও বেশি আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন হ্যাজাডর্রা। বল দখলেও তারা ছিল এগিয়ে। কিন্তু ফ্রান্সের রক্ষণভাগে চির ধরাতে পারেননি দলটি। দু-একবার যাও শট নিতে পেরেছে, সেগুলো ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিসের বিশ্বস্ত গøাভসকে ফঁাকি দিতে পারেনি। এরপর দ্বিতীয়াধের্র শুরুতে আচমকা কনার্র কিক থেকে গোল করে বসেন ফ্রান্সের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় স্যামুয়েল উমতিতি। তার গোলটাই শেষতক গড়ে দেয় ব্যবধান। পুরো ম্যাচে ভালো খেলার পর একটা গোল কি না বেলজিয়ামের স্বপ্ন ধুলোয় মিশিয়ে দিল! এমনটি মানতে পারছেন না কোচ মাটিের্নজ। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার পর অনেকটা নিরুপায় হয়েই তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচটা খুব অঁাটসঁাট ছিল। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়ার মতো খুব বেশি গুরুত্বপূণর্ মুহূতর্ ছিল না। এরপর ম্যাচটা একটা ডেড-বলে শেষ হয়ে গেল। আমাদের বল পজেশন বেশি ছিল। আমি মনে করি, ফ্রান্সকে তাদের দৃঢ় রক্ষণভাগের কারণে ধন্যবাদ জানানো উচিত। তারা আমাদের খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সমীহ করেছে। এতটাই যে, গোলমুখে আমরা খুব অল্প জায়গা পেয়েছি। ভাগ্যের সহায়তাও ছিল অল্প।’ সেমিফাইনালের আগ পযর্ন্ত পঁাচ ম্যাচের সবগুলোতে জেতে বেলজিয়াম। দলটি প্রতিপক্ষকে গোল উপহার দেয় ১৪টি। এমন দুদার্ন্ত পারফরম্যান্স করা দলটিকে বিদায় নিতে হলো সেমিফাইনাল থেকে! বাদ পড়ার কষ্টটা অনেকদিন গেঁথে থাকবে বেলজিক ফুটবলারদের হৃদয়ে। তবে মাটিের্নজ তার শিষ্যদের অজের্ন গবির্ত, ‘পরাজিত হলেও আমি দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে গবির্ত। যদিও দলের খেলোয়াড়রা খুব ভেঙে পড়েছে। কারণ আমরা কেবল ফাইনাল নিয়েই ভাবছিলাম। তবে আমাদের এই ফল মেনে নিতে হবে এবং ফাইনালে যাওয়া ফ্রান্সকে জানাতে হবে শুভকামনা।’ ফাইনালে যেতে ব্যথর্ বেলজিয়ামকে এখন তৃতীয় স্থানের জন্য লড়াইয়ে নামতে হবে। ১৪ জুন ওই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ কে, তাও এতক্ষণে জেনে গেছে দলটি। কিন্তু তৃতীয় হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়ায় আসেননি হ্যাজাডর্রা। বিশ্বকাপ শিরোপা নিয়েই দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন তারা। মাটিের্নজ মনে করছেন, শিরোপার জন্য তার দলের খেলোয়াড়রা শিরোপার যোগ্যই ছিল, ‘আমরা সহজেই থেমে যেতে পারতাম। ফ্রান্স গত ইউরোর ফাইনালে খেলা দল; কিন্তু আমি চাইনি আমার দলের কেউ হতাশ হোক। আমরা উপরে থেকেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। এই খেলোয়াড়রা উপরে থেকে শেষ করার যোগ্যতা রাখে।’ দুটি বিশ্বকাপ আর একটি ইউরো গেল, বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্ম কিছু দিতে পারল না দেশকে। তবে সামনে আরেকটি সুযোগ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। ২০২০ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। কোচ মাটিের্নজের চুক্তিও এই আসর পযর্ন্ত বাড়িয়ে নিয়েছে বেলজিক ফুটবল ফেডারেশন। তার দৃষ্টি এখন এই টুনাের্মন্টেই। তবে আগেভাগে ২০২০ ইউরোতে নিজেদের সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য করতে চান না তিনি, ‘বেলজিয়াম ফুটবল উদীয়মান তারকায় সমৃদ্ধ। কোচ হিসেবে আমার নজর ২০২০ সালের ইউরোতে আছে। তবে আমি এই বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করব না।’