সুপার ওভারের রোমাঞ্চে চিটাগংয়ের হাসি

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুরে শনিবার খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ম্যাচে সুপার ওভারে এক রানের জয় এনে দেয়া বোলার রবি ফ্রাইলিঙ্কের কোলে চেপে বসেন চিটগং ভাইকিংসের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম Ñবিসিবি
আরও একটি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ উপহার দিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসর। জয়-পরাজয় নিধার্রণে যে ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারের রোমাঞ্চে। সেখানে মাত্র এক রানের ব্যবধানে জয়ের হাসি হেসেছে মুশফিকুর রহিমের চিটাগং ভাইকিংস। আরও একটি হারের হতাশায় ডুবেছে খুলনা টাইটান্স। টানা চার ম্যাচে হার দেখল মাহমুদউল্লা রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি। শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৫১ রান তোলে খুলনা। জবাবে নিধাির্রত ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তোলে চিটাগংও। শেষ ওভারে চিটাগংয়ের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৯ রান। তারা তুলতে পারে ১৮। শেষ বলে এক লাগলেও রানআউট হয়ে যান রবি ফ্রাইলিঙ্ক। ম্যাচ টাই। তাতেই বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম কোনো ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। জুনায়েদ খানের করা সুপার ওভারে প্রথম ব্যাট করে চিটাগং এক উইকেটে তোলে ১১ রান। ২ বলে চার রান করে বোল্ড হন ফ্রাইলিঙ্ক। পরে এক উইকেট হারিয়ে ১০ রান তুলতে পারে খুলনা। ফলে প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই হারল দলটি। অপরদিকে তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে চার পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে মুশফিকের চিটাগং। ম্যাচসেরা হয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক। ১৫২ রানের টাগেের্ট ব্যাট করতে নেমে ঝঁাঝালো শুরু হয়নি চিটাগংয়ের। এই ম্যাচে নিজেকে খুঁজে পাননি ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ। ১০ বল খেলে ১০ রানের বেশি করতে পারেনি আফগান তারকা। ইয়াসির আলীকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন ক্যামেরন ডেলপোটর্। তিনিও ফেরেন ১৭ রানে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিক আর ইয়াসির মিলে জয়ের পথেই হঁাটছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ছন্দ হারিয়ে ফেরেন ইয়াসির। ৩১ বলে সমান দুই চার ও ছক্কায় ৪১ রান করেন তিনি। চ‚ড়ান্তভাবে হতাশ করেন সিকান্দার রাজা। চার বল মোকাবেলা করে কোনো রানই করতে পারেননি জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান। ক্রেইগ ব্রেথওয়েটের বলে বোল্ড হন তিনি। ব্যথর্ হন মোসাদ্দেক হোসেনও। ক্রমবধর্মান রানরেটের সঙ্গে পাল্লা না দিয়ে ১২ রান করতে ১২ বল মোকাবেলা করেন তিনি। এরপরও চিটাগংয়ের আশা হয়ে ছিলেন মুশফিক। কিন্তু ২৬ বলে ৩৪ রান করে ব্রেথওয়েটের শিকার হয়ে তিনি ফিরতেই ফিকে হয়ে যায় সেই আশা। শেষদিকে ম্যাচটা জমিয়ে তোলের ফ্রাইলিঙ্ক। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার সময় ১৩ বলে ২৩ রান করেন তিনি। মূলত তার ব্যাটেই ম্যাচটা টাই করে চিটাগং। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনাকে বিস্ফোরক সূচনা এনে দেন পল স্টারলিং আর জুনায়েদ সিদ্দিক। কিন্তু এই দুই ওপেনারের ওড়াটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। টুনাের্মন্টের অন্যতম সেরা বোলার ফ্রাইলিঙ্কের প্রথম ওভারে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন স্টারলিং। পরের ওভারে সানজামুল ইসলামকে পরপর ছক্কা ও চার মারেন জুনায়েদ। দুই ওভারেই খুলনা তোলে ৩০ রান। তৃতীয় ওভারে অফ স্পিনার নাঈম ফিরিয়ে দেন ১০ বলে ১৮ রান করা স্টারলিংকে। ১৫ বলে ২০ রান করে জুনায়েদ ফেরেন ফ্রাইলিঙ্কের বলে। তৃতীয় উইকেটে মালান ও মাহমুদউল্লাহ গড়েন ৭৭ রানের জুটি। তাতে খুলনা পায় শেষ দিকে ঝড় তোলার মঞ্চ। কিন্তু সেই ঝড় ওঠেনি। ৪৩ বলে ৪৫ করে আউট হয়ে যান মালান। মাহমুদউল্লাহ করেন ৩১ বলে ৩৩। এক রানে জীবন পেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কালোর্স ব্রেথওয়েট। ৫ বলে ১২ করে আউট হয়ে যান তিনিও। শেষ ৩ ওভারে খুলনা করতে পারে কেবল ২০ রান। মাহমুদউল্লাহর দলের জন্য সেটাই কাল হলো। সংক্ষিপ্ত স্কোর খুলনা টাইটান্স ২০ ওভারে ১৫১/৬ (স্টারলিং ১৮, জুনায়েদ ২০, মালান ৪৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, ব্রেথথওয়েট ১২, আরিফুল ৯*; ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩১, সানজামুল ২/৩৭, নাঈম ১/১৬, খালেদ ১/২৮, আবু জায়েদ ১/২৯)। টিটাগং ভাইকিংস ২০ ওভারে ১৫১/৮ (শাহজাদ ১০, ডেলপোটর্ ১৭, ইয়াসির আলী ৪১, মুশফিক ৩৪, মোসাদ্দেক ১২, ফ্রাইলিঙ্ক ২৩; ব্রেথওয়েট ২/৩০, শরিফুল ২/৩১, তাইজুল ১/২৩, আরিফুল ১/১৮, জুনায়েদ ১/২৪)। ফল: সুপার ওভারে ১ রানে জয়ী চিটাগং। ম্যাচসেরা: রবি ফ্রাইলিঙ্ক।