অবশেষে জয় দেখল খুলনা

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
উইকেট শিকারের পর মাহমুদউল্লাহ-তাইজুলদের উদযাপন। সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার অল্প পুঁজি নিয়েও বোলারদের কল্যাণে রাজশাহী কিংসকে হারিয়েছে খুলনা টাইটান্স। চলতি বিপিএলে এটাই প্রথম জয় তাদের Ñবিসিবি
একের পর এক পরাজয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল খুলনা টাইটান্সের। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে টানা চার ম্যাচ হেরে যাওয়া দলটি অবশেষে জয় দেখল সিলেট পবের্র উদ্বোধনী ম্যাচে। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দযের্র আবহেই যেন বদলে গেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। লো স্কোরিং ম্যাচে রাজশাহী কিংসকে হারিয়েছে ২৫ রানের বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাট করে ১২৮ রান তুলে খুলনা। জবাবে ম্যাচসেরা তাইজুল ইসলামের ঘূণির্ আর জুনায়েদ খানের গতিঝড়ের মুখে পড়ে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহী। মিরপুর শেরেবাংলার মরা উইকেটে ঢাকার প্রথম পবের্ শুরুর দিকে দলগুলো বড় সংগ্রহ করতে পেরেছে খুব কমই। গ্যালারিতে দশর্ক না থাকার অন্যতম বড় কারণ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে ‘লো স্কোরিং’ ম্যাচকে। সিলেট পবের্র প্রথম ম্যাচটাও হলো লো স্কোরিং। সবুজেঘেরা সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল প্রায় ফঁাকা। গাটের পয়সা খরচ করে যারা গ্যালারিতে এসেছিলেন, তারা ঘরে ফিরেছেন ম্যাড়ম্যাড়ে এক লড়াই দেখার হতাশা নিয়ে। চার ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়েই সিলেট পা রেখেছিল রাজশাহী। দলটির বোলাররা প্রতিপক্ষ খুলনাকে কম রানে বেঁধে ফেলে আত্মবিশ্বাসটাকে বাড়িয়ে তুলেছিলেন আরও। কে জানে, অতি-আত্মবিশ্বাসেরই বলি হলেন কিনা দলটির ব্যাটসম্যানরা। ১২৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ইভান্সকে হারায় তারা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এই ডানহাতি ওপেনারকে সাজঘরে ফেরত পাঠান খুলনার পেসার জুনায়েদ খান। মুমিনুল হকের সঙ্গে যোগ দিয়ে এই চাপ কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন মিরাজ। জুনায়েদকে ছক্কা হঁাকিয়ে শুরু করা রাজশাহীর অধিনায়ক ভালোই খেলছিলেন। মুমিনুল খেলছিলেন দেখেশুনে। মনে হচ্ছিল দুজনের ব্যাটে চাপ কাটিয়ে উঠবে রাজশাহী। কিন্তু ১৬ বলে ২টি চার আর একটি ছক্কায় ২৩ রান করার পর খেই হারান মিরাজ। বাহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে ছক্কা হঁাকাতে গিয়ে ধরা পড়েন আরিফুল হকের হাতে। এক বল পর সৌম্য সরকারকেও সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন তাইজুল। মহাবিপাকে পড়ে যায় রাজশাহী। ৩২ রানেই ৪ উইকেটে হারানো দলকে পথ দেখানোর গুরুদায়িত্ব বতার্য় জাকির হাসান আর রায়ান টেন ডেসকাটের ওপর। কিন্তু ৭ রান করেই ফিরে যান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকির। অবিরত উইকেট হারানোর চাপ স্বভাবতই রান তোলার গতির ওপর গিয়ে পড়ে। ১০ ওভার শেষে মাত্র ৫০ রান যোগ হয় রাজশাহীর স্কোরবোডের্। ব্যাটিং বিপযের্য় থাকা দলকে বিপদে রেখে ফিরে যান ১৩ রান করা ডেসকাটে। এরপর ক্রিশ্চিয়ান জঙ্কার (১৫), ইসুরু উদানা (৬), আরাফাত সানি (১৫), কামরুল ইসলাম রাব্বি (১৩), মুস্তাফিজুর রহমানরা কেবল দলের পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তেড়েফুড়ে শুরু করেন জহুরুল ইসলাম। তবে ৬ বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি এই ডানহাতি। তাকে থামান উদানা। লংকান পেসারের পথে হেঁটে এরপর জোড়া শিকার ধরেন মিরাজ। জুনায়েদ সিদ্দিক (১৪) আর ডেভিড মালানকে (১৫) ফেরান রাজশাহী অধিনায়ক। তাতে বিপদেই পড়ে যায় খুলনা। এমন কঠিন সময়েও আরও একবার দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে মাহমুদউল্লাহ। আরাফাত সানির শিকার হওয়ার আগে দুই অঙ্কও ছুঁতে পারেননি তিনি (৯)। দারুণ এক থ্রোতে নাজমুল হোসেন শান্তকে (১১) রানআউট করেন মুমিনুল। সানির করা একই ওভারের শেষ বলে এলবিডবিøউ হন ক্রেইগ ব্রেথওয়েট (৮)। তাতে ৮২ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারায় খুলনা। সেখান থেকে দলকে শতরানের গÐি পার করান ডেভিড উইসা আর আরিফুল হক। জুটিতে ৩৪ রান তোলার পর আউট হন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার উইসা (১৩)। ২৭ বলে ২৬ করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন আরিফুল। পরের বলেই সরাসরি থ্রোতে তাইজুল ইসলামকে রানআউট করেন ফিজ। রাজশাহীর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মিরাজ, উদানা আর সানি। মুস্তাফিজের শিকার একটি উইকেট। তাদের দুদার্ন্ত বোলিং রাজশাহী শিবিরে জ্বালিয়েছিল আশার আলো। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যথর্তা সেটা নিভিয়ে দেয়।