বেকেনবাওয়ার হতে পারবেন দেশম?

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
দিদিয়ের দেশম
একজন ফুটবলারের আজন্ম লালিত স্বপ্ন, দেশের হয়ে খেলবেন। ফুটবলের কুলিন কিংবা বনেদি শক্তি যারা, সেই দেশে জন্মালে স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপে খেলার। বিশ্বকাপ জেতার। একজন কোচও তেমনি ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে পা রাখেন দলকে শিখরে তোলার অভিপ্রায় নিয়ে। কিন্তু সবার সেই স্বপ্ন কিংবা চাওয়া কি পূণর্ হয়? বিশ্বকাপের আগের ২০ আসর অনেকেরই স্বপ্ন পূরণ করেছে। তবে অধিনায়ক আর কোচের ভ‚মিকায় বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার সৌভাগ্য হয়েছে একজনেরই, ফ্রান্সের বেকেনবাওয়ার। রাশিয়ায় এবার সংখ্যাটা দুই হয়ে যেতেও পারে, বেকেনবাওয়ারের পাশে বসে যেতে পারেন দিদিয়ের দেশম। মঙ্গলবার প্রতিবেশী বেলজিয়ামকে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। তাতেই কীতির্মানদের ছোট্ট একটা তালিকায় ঢুকে গেছেন দেশম। খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রতিনিধিত্ব করা চতুথর্ ব্যক্তি হতে যাচ্ছেন এই ফরাসি। ১৯৯৮ সালে ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলা ফ্রান্স দলের সদস্য ছিলেন দেশম, সেই দেশমের কোচিংয়েই এবার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্স। সবর্প্রথম এই কীতিের্ত নাম তুলেছেন মারিও জাগালো। এরপর দুই জামার্ন, বেকেনবাওয়ার আর রুডি ভোলার। ১৯৫৮ আর ১৯৬২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য জাগালো এক সময়ের সতীথর্ পেলে-জিয়ারজিনহো-তোস্তাওদের কোচ হয়ে গিয়েছিলেন ১৯৭০ বিশ্বকাপে। মেক্সিকোর স্তাদিও অ্যাজতেকায় ইতালিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ব্রাজিলকে আরও একটি বিশ্বকাপ এনে দেন জাগালো। খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে ফাইনালে প্রতিনিধিত্ব করাই নয়, বিশ্বকাপ জেতা প্রথম ব্যক্তিও বনে যান তিনি। ১৯৯০ সালে তার এই কীতির্র পুনরাবৃত্তি করেন ‘কাইজার’খ্যাত বেকেনবাওয়ার। জামাির্নর হয়ে ১৯৭৪ সালে খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন বেকেনবাওয়ার, ১৯৯০ সালে ম্যারাডোনার আজেির্ন্টনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতেন জন্মভ‚মি জামাির্নর কোচ হিসেবে। একটা জায়গায় জাগালোকে ছাড়িয়েও যান তিনি, ১৯৭৪ সালে বেকেনবাওয়ার বিশ্বকাপ জিতেছিলেন জামাির্নর অধিনায়ক হিসেবে। জাগালো ১৯৫৮ আর ১৯৬২ সালে ব্রাজিল দলে ছিলেন কেবলই খেলোয়াড়ের ভ‚মিকায়। তাই বেকেনবাওয়ারের কীতির্টা হয়ে যায় অনন্য। এখন পযর্ন্ত জাগালো আর বেকেনবাওয়ারেরই খেলোয়াড় এবং কোচের ভ‚মিকায় বিশ্বকাপ জেতার নজির আছে। তবে খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন রুডি ভোলার। বেকেনবাওয়ারের কীতির্ গড়ার দিনে (১৯৯০ বিশ্বকাপ) খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ নেয়া এই জামার্ন কোচ হিসেবে ২০০২ বিশ্বকাপে জামাির্নকে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু জাপানের ইয়েকোহামায় রোনালদো-রিভালদো-কালোর্সদের ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে যায় তার শিষ্যরা। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার আজেির্ন্টনার কাছে বিশ্বকাপ খুইয়েছিলেন খেলোয়াড় হিসেবে। ১৬ বছর পর ব্রাজিলের কাছে কোচ হিসেবে। আগামী রোববার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে ফ্রান্স হেরে গেলে মাথায় হাত দিয়ে দেশমকে বসতে হবে ভোলারের সারিতে। আর যদি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিজয়কেতন উড়ায় গ্রিজম্যান-এমবাপেদের দল, দেশম থাকবেন জাগালো আর বেকেনবাওয়ারের পাশে। হিসাবটা যদি হয় অধিনায়ক আর কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার, পাশাপাশি থাকবেন বেকেনবাওয়ার আর দেশম। মহাভারতের অজুের্নর মতো ময়দানের ধ্রæপদী লড়াইয়ে জিতেছেন, ডাগআউটে দঁাড়িয়ে গুরু দ্রোনাচাযের্র মতো জিতবেন মস্তিষ্কের খেলাতেও। এমন সুযোগ কি আর হেলায় হারাতে চাইবেন দেশম? ফরাসি কোচ অবশ্য বলেছেন, দলের সাফল্যটাই তার কাছে মুখ্য। তবে এবার দল সফল হলে ইতিহাসটা কিন্তু হয়ে যাবে দেশমেরও।