সাকিবের ব্যাটে জয়ে ফিরল ঢাকা

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: সাকিব আল হাসান।

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বোলিংয়ে আলো ছড়ানোর পর শুক্রবার সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতেও ঝড় তুলেছিলেন সাকিব আল হাসান। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই সিলেট সিক্সাসের্ক অনায়াসে হারিয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস Ñবিসিবি
রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস, মিরপুরে তাদের সামনে কেউ দ্াড়াতেই পারেনি। তবে সিলেট পবের্র শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল দলটি। হার মেনেছিল রাজশাহী কিংসের কাছে। সেই হারের ধাক্কা সামলে আবার ছন্দে ফিরেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ব্যাটে-বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ছন্দে ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই শুক্রবার সিলেট সিক্সাসের্র বিপক্ষে ৬ উইকেটের অনায়াস জয় পেয়েছে ঢাকা। এই জয়েই শেষ তাদের সিলেট পবর্। ছয় ম্যাচের ৫টি জয় ও একটিতে হার নিয়ে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ ঢাকার। পয়েন্ট টেবিলের শীষের্। সমান সংখ্যক ম্যাচে সিলেটের পয়েন্ট ৪। তারা আছে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে। দলপতি ডেভিড ওয়ানাের্রর চওড়া ব্যাটও এদিন তাদের উদ্ধার করতে পারেনি। চোটের কারণে আর একটা ম্যাচ খেলেই ফিরে যাবেন ওয়ানার্র। তার আগে শুক্রবার ৬৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন এই বাহাতি। তার হাফসেঞ্চুরিতে ভর করেই ৮ উইকেটে ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ে সিলেট। কিন্তু ম্যাচসেরা সাকিবের ব্যাটে অনায়াসেই ওই রান টপকে যায় ঢাকা। গ্যালারি ভরা দশের্কর সামনে সিলেট আন্তজাির্তক স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সিলেট সিক্সাসের্র অধিনায়ক ওয়ানার্র। আগের ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া লিটন দাস আর সাব্বির রহমান এদিনও ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন। লিটনের ১৪ বলে ২৭ রানে দ্রæতই উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান জমা হয়ে যায় সিলেটের স্কোরকাডের্। এরপর লিটনকে লেগবিফোরের ফঁাদে ফেলে আঘাত হানেন সাকিব, পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট। দ্রæত উইকেই হারিয়ে বিপাকেই পড়ে যায় সিলেট। স্বাগতিক দলের খেলা বলে এদিন স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দশের্ক ভরপুর। কিন্তু ভরা দশের্কর সামনে ৮৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে কঁাপাকাপি শুরু হয় সিলেটের। বিপদে তখন ব্যাট হাতে এগিয়ে আসতে হয়েছে অধিনায়ক ওয়ানার্রকেই। রংপুরের পর ঢাকার বিপক্ষেও হঁাকিয়েছেন অধর্শতক। উইকেটে যতক্ষণ ছিলেন, বিনোদন জুগিয়েছেন ওয়ানার্র। ৪৩ বলে ৬৩ রানের ইনংসটিতে ৮ চারের সঙ্গে একটি ছয় যেমন মেরেছেন, উইকেটের আশপাশে খেঁাচা মেরে সিঙ্গেল নিয়ে সচল রেখেছেন রানের চাকাও। ফিফটি পাওয়ার পর কোমর দুলিয়ে নাচ দেখিয়ে বিনোদনও দিলেন দশর্কদেরও। খুব বেশি রান করেননি, কিন্তু জাকের আলীর ১৮ বলে ২৫ রানও সিলেটকে সাহায্য করেছে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়তে। ওয়ানাের্রর সঙ্গে ৬৩ রানের জুটিতে তার অবদান কম নয়। এছাড়া আফিফ হোসেন ১৯ রান করেন। অলক কাপালি (০), নিকোলাস পুরান (৬), সাব্বিররা (১১) সুবিধা করতে পারেননি। ৪ ওভারে ৪২ রানে দিয়ে খরুচে হলেও ঢাকার সবচেয়ে সফল বোলার প্রথমবার খেলতে নামা অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু বাচর্ (৩/৪২)। ৩৪ রান খরচ করে ২ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। আগের পঁাচ ম্যাচের স্কোয়াড থেকে এই প্রথম আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই ও ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কায়রন পোলাডের্ক বাইরে রেখে দল সাজায় ঢাকা। তাই দলটির ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন ছিল। ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলটি ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারানোয় সেই প্রশ্নটা আরও জোরাল হয়। ওপেনার মিজানুর রহমান বিদায় নেন ১ রান করে। এরপর আরেক ওপেনার সুনিল নারিন (২০) আর রনি তালুকদার (১৩) বিদায় নেন দ্রæত। দলকে বিপদ থেকে টেনে তুলেন সাকিব। গত পঁাচ ম্যাচে রান খরায় ভুগতে থাকা এই অলরাউন্ডার খেলেন ৪১ বলে ৬১ রানের ইনিংস। মাঝে ডারোইস রাসুলির ১৯ রান করে ফেরার পর আন্দ্রে রাসেল খেলেন ২১ বলে ৪০ রানের ইনিংস। শেষ পযর্ন্ত সাকিব-রাসেলের ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেট হাতে রেখে আসরের পঞ্চম জয় তুলে নেয় ঢাকা। সিলেট সিক্সাসর্ ২০ ওভারে ১৫৮/৮ (লিটন ২৭, সাব্বির ১১, আফিফ ১৯, ওয়ানার্র ৬৩, পুরান ৬, জাকের ২৫; রাসেল ১/২০, বাচর্ ৩/৪২, সাকিব ২/৩৪, নারিন ১/৩২, রুবেল ১/২৪)। ঢাকা ডায়নামাইটস ১৭ ওভারে ১৬৩/৪ (মিজানুর ১, নারিন ২০, রনি ১৩, সাকিব ৬১*, রাসুলি ১৯, রাসেল ৪০*; ইরফান ২/৩৮, তাসকিন ১/৩২, লামিচানে ১/২৭)।