চাহাল-ধোনিতে সিরিজ ভারতের

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
মেলবোনের্ শুক্রবার ২৩০ রান করেও ভালোই লড়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনি আর কেদার যাদবের ব্যাটে ঠিকই ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত Ñওয়েবসাইট
লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের পর মহেন্দ্র সিং ধোনির দুদার্ন্ত ব্যাটিংয়ে শুক্রবার মেলবোনের্ ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটাও ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে বিরাট কোহলির দল। এর আগে চার টেস্টের সিরিজটাও জিতে নেয় অতিথিরা। এই প্রথম কোনো ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জোড়া সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে ঘরে ফিরছে। টানা তিন ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন ধোনি। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ বেশি হলে হয়তো সেঞ্চুরিও তুলে নিতেন পারতেন তিনি। ম্যাচের সঙ্গে দলের সিরিজ নিশ্চিত করে যখন তিনি মাঠ ছাড়ছিলেন, এই উইকেটরক্ষকের নামের পাশে তখন ৮৭ রান। ১১৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে। অথচ ৪৪তম ওভারের প্রথম পঁাচ বলই ডট! শেষ বলে তড়িঘড়ি একটি রান নিয়ে মেডেন ঠেকালেন ধোনি। যে ম্যাচে প্রায় সবাই ধীর লয়ে ব্যাট করেছেন, সেখানে সবোর্চ্চ সংগ্রাহকের সমালোচনা করাটা বাড়াবাড়ি। তবু স্ট্রাইক রেট ৭০ এর নিচে ছিল বলেই এত দুশ্চিন্তা ছিল। পিটার সিডলের করা ৪৬তম ওভার ম্যাচটা ভারতের দিকে পাঠিয়ে দিল। প্রথম দুই বলে দুই ওয়াইড আর এক চারে এল ৮ রান। ওই ওভারের ১১ রানে সমীকরণ দঁাড়াল ৪ ওভারে ৩৩ রান। ঝাই রিচাডর্সনের ওভারটি কাটিয়ে দিল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলারের ওভার শেষ হওয়ার পরও ভারত বিপদে পড়তে যাচ্ছিল। মাকার্স স্টয়নিসের প্রথম বলে ক্যাচ দিলেন ধোনি, প্রতিপক্ষ অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ সেটা ফেলে দিলেন! ৭৪ রানে দ্বিতীয়বার জীবন পেলেন ধোনি। ম্যাচটাও ওখানেই শেষ হলো। তবে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক বিরাট কোহলি দারুণ শুরুতে আরেকটি বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিলেও অস্ট্রেলিয়া তাকে আটকায় ৪৬ রানে। এই স্টয়নিসের বলেই ধোনি প্রথমবার জীবন পেয়েছিলেন। ৫৯ রানে ২ উইকেট হারানো ভারতের ইনিংস তখন ধুঁকছিল। শূন্য রানে থাকা ধোনি ক্যাচ দিয়েছিলেন গেøন ম্যাক্সওয়েলের কাছে। অস্ট্রেলিয়া দলের সেরা ফিল্ডার সে ক্যাচ ফেলে দিলেন। প্রতিপক্ষকে মাত্র ২৩১ রানের লক্ষ্য নিয়ে বোলিংয়ে নামা দল যখন ধোনির ক্যাচই দুবার ফেলে, তখন আর তাদের পক্ষে জয় পাওয়া সম্ভব নয়। পরে ধোনি ঝামেলা বাড়াননি, কেদার যাদবের সঙ্গে চতুথর্ উইকেট জুটিটা ১২১ পযর্ন্ত টেনে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে এসেছেন ৪ বল আগে। জয় এনে দেয়া শটটি ৬১ রান করা যাদবের হলেও জয়টা এনে দিয়েছেন ধোনিই। ৪৯তম ওভারে ১৩ রান দিয়ে সিডল প্রমাণ করেছেন, তাকে ৮ বছর দলে টেনে নিবার্চকেরা যে জুয়া খেলতে চেয়েছেন সেটা বোকামিই ছিল। বাকি তিন পেসারের তুলনায় একেবারেই নবিশ বোলিং করেছেন অভিজ্ঞতম পেসার। টানা দুই ম্যাচে বিপদে থাকা দলের ইনিংসে প্রথমে থিতু হয়ে পড়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচ শেষ করেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে তার দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতিয়ে সব প্রশ্ন ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। ২৭ রানে তারা হারায় দুই ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি (৫) ও অ্যারন ফিঞ্চকে (১৪)। তবে উসমান খাজা ও শন মাশর্ গুছিয়ে নিয়েছিলেন। যদিও চাহালের ঘূণির্র সামনে খাজা আউট হন ৩৪ রানে, আর শন মাশর্ করেন ৩৯। তাদের গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দঁাড়িয়ে পিটার হ্যান্ডসকম্ব পূরণ করেন হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু তিনিও চাহালের শিকার হয়ে ৫৮ রানে আউট হলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা আর সুবিধা করতে পারেননি। ম্যাক্সওয়েল করেন ২৬ রান। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে ২৩০ রান। চার বল বাকি থাকতেই যেটা টপকে গেছে ভারত।