বোল্টের সুইংয়ে নাকাল ভারত

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
হ্যামিলটনের সেডন পাকের্ বৃহস্পতিবার বল হাতে জ্বলে উঠলেন নিউজিল্যান্ডের সুইং বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। উইকেট পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীথর্রা Ñওয়েবসাইট
হ্যামিলটনের সেডন পাকর্ হঠাৎ করে হয়ে গেল সুইংয়ের রাজ্য। আর এমন চিরচেনা কন্ডিশনে নিজেকে যেন ফিরে পেলেন নিউজিল্যান্ডের সুইং বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। বৃহস্পতিবার বঁাহাতি এই পেসারের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভারত গুটিয়ে গেল মাত্র ৯২ রানে। সিরিজ আগেই হেরে বসা কিউইরা ম্যাচটিতে জয় পায় ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। বোল্ট ২১ রানে তুলে নেন ৫ উইকেট। নিউজিল্যান্ড জয়ের লক্ষ্যে পেঁৗছে যায় ১৪.৪ ওভারেই। আগেই সিরিজ নিশ্চিত করায় নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি ছিলেন বিশ্রামে। চোটের কারণে এদিন দলে ছিলেন না মহেন্দ্র সিং ধোনিও। তাই বলে এমন দুরবস্থা হবে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের! সত্যিটা হলোও তাই, যে কন্ডিশনে বল সুইং করে এবং সেখানে যদি ছন্দে থাকেন বোল্ট, ভুগতে হয় বিশ্বের যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপকেই। টানা ১০ ওভারে দুদার্ন্ত স্পেলে বোল্ট ধসিয়ে দিলেন ভারতীয় ব্যাটিং। সিরিজের আগের ম্যাচগুলোতেও খুব খারাপ করেননি বোল্ট। তবে সুইং পাননি বলে ততটা কাযর্কর ছিলেন না। হ্যামিল্টনে এ দিন গরম ছিল প্রচÐ, ছিল না বাতাস। উইকেটে ছিল ঘাসের ছেঁায়া। ম্যাচের আগে থেকেই আলোচনা ছিল, এখানে মিলবে সুইং। টস জিতে তাই বোলিং নিতে ভাবেননি কেন উইলিয়ামসন। বোল্ট সুইং পেতে থাকেন শুরু থেকেই। তবে প্রথম উইকেট ধরা দেয় ম্যাচের ষষ্ঠ ও তার তৃতীয় ওভারে। দুদার্ন্ত ইনসুইঙ্গারে এলবিডবিøউ হন শিখর ধাওয়ান (১৩)। বোল্টের পরের ওভারেই আরেকটি স্ইুঙ্গিং ডেলিভারিতে ফিরতি ক্যাচ দেন অধিনায়ক রোহিত শমার্ (৭)। কোহলি না থাকায় তার জায়গায় তিনে নামেন প্রতিভাবান সুবমান গিল। ১৯ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান অভিষেকে কঠিন পরিস্থিতিতে খুব খারাপ টেকনিক দেখাননি শুরুতে। তবে বোল্টের সামনে চ্যালেঞ্জটা একটু বেশিই কঠিন ছিল। ৯ রান করে তিনিও দেন ফিরতি ক্যাচ। বোল্টের নতুন বলের সঙ্গী ম্যাট হেনরি খুব সুবিধা করতে পারেননি। পরিবতর্ বোলার হিসেবে এসে দারুণ করেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। নিজের প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন আম্বাতি রায়ডু (০) ও দিনেশ কাতির্ককে (০)। প্রচÐ গরমে ৫ ওভারের স্পেলের পর বোল্টকে আরও বোলিং করানো নিয়ে সংশয়ে ছিলেন উইলিয়ামসন। খানিকটা আলোচনার পর বোল্টের হাতেই তুলে দেন বল। সেই ওভারে বঁাহাতি পেসার উইকেট এনে দেন আরও একটি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকানো নেই। গরমের কারণে ফিল্ডিংয়ের সময় গায়ে আইস জ্যাকেট চাপিয়েছেন, আর বল হাতে ঝরিয়েছেন আগুন। ভেতরে ঢোকা দারুণ ডেলিভারিতে ফিরিয়েছেন কেদার যাদবকে (১)। ৮ ওভার শেষে তার বোলিং ফিগার ছিল ৩ মেডেনসহ ৯ রানে ৩ উইকেট! চাপের ভেতরই সহজাত আগ্রাসনের পথ বেছে নেন হাদির্ক পান্ডিয়া। বোল্টের নবম ওভারে মারেন তিনটি বাউন্ডারি। বোল্ট অবশ্য প্রতিশোধ নেন নিজের শেষ ওভারে। দারুণ এক বাউন্সারে ফেরান হাদির্ককে (১৬)। বোল্টের বোলিং ফিগার ১০-৪-২১-৫। ২০ ওভার শেষে ভারতের রান তখন ৮ উইকেটে ৫৫। দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল নবম উইকেটে যোগ করেন ২৫ রান। ১৫ রান করা কুলদীপকে ফেরান লেগ স্পিনার টড অ্যাস্টল। দশে নেমে চাহাল করেন ইনিংস সবোর্চ্চ ১৮ রান। শেষ পযর্ন্ত লোয়ার অডার্রদের সৌজন্যেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সবির্নম্ন ৮৮ পেরিয়ে যায় ভারত। ডি গ্র্যান্ডহোম ২৬ রানে পান ৩ উইকেট। সংক্ষিপ্ত স্কোর ভারত: ৩০.৫ ওভারে ৯২ (চাহাল ১৮*, হাদির্ক ১৬, কুলদীপ ১৫, ধাওয়ান ১৩, গিল ৯, রোহিত ৭, রায়ডু ০, কাতির্ক ০, কেদার ১, ভুবনেশ্বর ১, খলিল ৫; বোল্ট ৫/২১, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩/২৬, অ্যাস্টল ১/৯, নিশাম ১/৫)। নিউজিল্যান্ড: ১৪.৪ ওভারে ৯৩/২ (গাপটিল ১৪, নিকোলস ৩০*, উইলিয়ামসন ১১, টেইলর ৩৭*; ভুবেনশ্বর ২/২৫) ফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ভারত ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে ম্যাচসেরা: ট্রেন্ট বোল্ট