কন্ডিশনই বড় প্রতিপক্ষ টাইগারদের!

এই কন্ডিশনে প্রথম ১০ ওভার খুবই গুরুত্বপূণর্। প্রথম ১০ ওভারে অল্প রান হলেও টিকে থাকাটা জরুরি। প্রথম ম্যাচে আমরা শুরুতে কিছুই করতে পারিনি উল্টো উইকেট দিয়ে এসেছি দ্রæত। দ্বিতীয় ম্যাচে যদি টপ অডার্র থেকে ভালো রান আসে তাহলে আমাদের সুযোগ থাকবে ভালো করার Ñমেহেদী হাসান মিরাজ

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
টাইগারদের অনুশীলনে এমন চওড়া হাসিই থাকল মুস্তাফিজ-রুবেল-মিরাজ-লিটনদের মুখে। ক্রাইস্টচাচের্ আজ স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের পর এমন হাসি থাকবে তো? Ñফাইল ছবি
নিউজিল্যান্ড সফর কখনো সুখকর ছিল না বাংলাদেশের জন্য। এবারের সফরের শুরুটাও ভালো হয়নি। ছন্নছাড়া ব্যাটিং-বোলিংয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। তাদের সামনে আজ সিরিজ বঁাচানোর চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ শুধু প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড নয়, সেখানকার কন্ডিশনও। নিউজিল্যান্ডের গতিময় আর বাউন্সি উইকেটে সফরকারী সব দলের ব্যাটসম্যানদেরই নাকাল হতে হয়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদেরও হতে হচ্ছে। উল্টো দিকে দলের বোলাররা অনভ্যস্ততার কারণে পিচের সুবিধা কাজে লাগাতে পারছেন না। কন্ডিশনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে তুলতেই সময় শেষ। অবশ্য নিজেদের দুভোের্গর জন্য এসব বিষয়কে দায়ী করতে নারাজ দলপতি মাশরাফি বিন মতুর্জা। ক্রাইস্টচাচের্ আজ দ্বিতীয় ম্যাচে হিসেবটা বাংলাদেশের জন্য সহজ এবং একইসঙ্গে কঠিন! সিরিজে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। এটা হলো সহজ হিসেব। কঠিন বিষয়টা হচ্ছে, খেলাটা ক্রাইস্টচাচের্। সেখানকার ঠান্ডা আগের ম্যাচের ভেন্যু নেপিয়ারের চেয়েও বেশি। ম্যাচের দিন থাকবে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের গতিবেগও বেশি। উইকেটেও তেজি বোলারদের জন্য উত্তাপ বেশি। এমন কন্ডিশনের সঙ্গে ধাতস্ত হওয়ার অভ্যাস খুব একটা নেই বাংলাদেশ দলের। তারওপর এই বাড়তি শীত, বাতাসের তেজ, তেতে থাকা কিউই পেস বোলিং এবং ‘ঘুমিয়ে পড়া’ বাংলাদেশের ব্যাটিং-এসব কিছুকে আমলে নিলে ক্রাইস্টচাচের্র দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাশরাফির দলকে এমনকিছু করতে হবে যাতে নিউজিল্যান্ডকে চমকে দেয়া যায়। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লড়াইয়ের জন্য দলকে উজ্জীবিত করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। নেপিয়ারের ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে উঠতে চান তিনি। নিউজিল্যান্ডের উইকেট যে একেবারে মাইনফিল্ড নয়, দক্ষতা দেখিয়ে খেলতে পারলে এখানেও যে রান করা সম্ভবÑ তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ তো আগের ম্যাচেই দেখিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শুরুর দিকের পাঁচ ব্যাটসম্যানদের দুই বা তিনজনের ব্যাট এমন দৃঢ়তা দেখাতে পারলে ক্রাইস্টচাচের্ ফিরে আসার লড়াইয়ের জয়গানের সুর নিয়েই ফিরতে পারে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান মিঠুন কন্ডিশন নিয়ে বলেছেন, ‘ওদের প্রায় সব বোলারই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ধারাবাহিকভাবে বোলিং করে। এমন গতিতে খেলে আমরা তো অভ্যস্ত না।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘যেখানে যে কন্ডিশনেই খেলি, মানিয়ে নেয়াটাই হচ্ছে গুরুত্বপূণর্। নইলে খারাপ করতে হবে। যেখানেই খেলি সেখানে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভালো খেলা।’ মিঠুনের আক্ষেপ, দলের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা যদি প্রথম ম্যাচে জুটি গড়তে পারতেন তাহলে রান আরও বেশি হতে পারত। সেক্ষেত্রে ম্যাচের ফলও হয়তো ভিন্ন হতো। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে তেমন ভিন্ন ফল দেখারই আশায় মেহেদী হাসান মিরাজ, ‘প্রথম ম্যাচ হেরে গেছি। বাকি আছে আরও দুটি ম্যাচ। এই দুই ম্যাচ জিতলে সিরিজ জিততে পারব। সিরিজ জয় যদিও বহুদূর, সে কারণেই শনিবারের ম্যাচটা অনেক গুরুত্বপূণর্। এই ম্যাচে জিতলে আমরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাব।’ আগের ম্যাচের ব্যাটিং ব্যথর্তা নিয়ে মিরাজ বলছেন, ‘এই কন্ডিশনে প্রথম ১০ ওভার খুবই গুরুত্বপূণর্। প্রথম ১০ ওভারে অল্প রান হলেও টিকে থাকাটা জরুরি। প্রথম ম্যাচে আমরা শুরুতে কিছুই করতে পারিনি উল্টো উইকেট দিয়ে এসেছি দ্রæত। দ্বিতীয় ম্যাচে যদি টপ অডার্র থেকে ভালো রান আসে তাহলে আমাদের সুযোগ থাকবে ভালো করার।’ দেশের মাটিতে পেসারদের থেকে স্পিনাররাই এগিয়ে থাকে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে এসে সেই স্পিনারদের ওপর নিভার্র থাকাটা নিছক বোকামি ছাড়া কিছুই না। যেখানে পেসারদের ভালো করার কথা সেখানে পেসাররাও সাদামাটা। মিরাজ বললেন, ‘দেশে স্পিনারদের ওপর নিভর্র করলেও বিদেশে দায়িত্বটা থাকে পেসারদের ওপর। কিন্তু এখানেও স্পিনারদের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।’ তরুণ এই অলরাউন্ডার আরও বলেছেন, ‘সাকিব ভাই থাকলে ব্যাপারটা ভিন্ন হতো। আত্মবিশ্বাস বেশি পেতাম। আমার মনে হয়, এখানে স্পিনারদের যে ভূমিকা, তা শুধু পেসারদের সাহায্য করা। এখানে স্পিনাররা বেশি টানর্ পায় না। উইকেটের সহায়তা পায় না। শুধু চেষ্টা করা যায়, যতটা সম্ভব রান কম দেয়ার। স্পিনাররা রান চেক দিয়ে বোলিং করলে পেসাররা উইকেট পেতে সহজ হয়ে যায়।’