তৃতীয় হয়ে গবির্ত বেলজিয়াম

সত্যিকার অথের্ এটি একটি সফল যাত্রা ছিল আমাদের। কিন্তু ফুটবলে অতীত নিয়ে পড়ে থাকা মানায় না। আপনার উচিত সামনে তাকানো এবং পরবতীর্ সুযোগের জন্য নিজেদের যোগ্য রূপে গড়ে তোলা Ñমাটিের্নজ

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
লুঝনিকি স্টেডিয়ামে আলো ঝলমল পরিবেশে বিশ্বকাপের ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরতে পারত বেলজিয়াম। সেখানে এখন অন্য কেউ। তবে একেবারে খালি হাতে দেশে ফিরছেন না ইডেন হ্যাজাডর্-কেভিন ডি ব্রæয়েনরা। শনিবার তৃতীয় স্থান নিধার্রণী লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ মেডেল জিতেছেন তারা। বেলজিয়ামের ফুটবল ইতিহাসে যা সবোর্চ্চ অজর্ন। কোচ মাটিের্নজ এবং দলের খেলোয়াড়রা তাই আত্মতৃপ্ত, গবির্ত। এখন ইতিহাস গড়ার আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে তাদের মন। ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে আয়োজিত আসরে সেমিফাইনাল খেলে বেলজিয়াম। ওটাই ছিল এতদিন পযর্ন্ত রেড ডেভিলদের সবোর্চ্চ অজর্ন। রাশিয়াতে শিরোপা জিততে না পারলেও অতীত অজর্নকে ছাপিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের তারকারা। তাদের এই অজর্নকে মোটেও খাটো করে দেখছেন না মাটিের্নজ। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয় হওয়ার পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘মেক্সিকোর আসরে বেলজিয়ামের ১৯৮৬ প্রজন্মের অজর্ন সবসময় অনুপ্রেরণার ছিল এবং বেলজিয়ামের ফুটবলে তারা একটা লক্ষ্য দঁাড় করিয়ে দিয়েছিল। এই ছেলেরা সেটা অতিক্রম করেছে, যা ঐতিহাসিক। এই পযাের্য় পৌঁছাতে ৩২টি বছর লেগেছে এবং এটা সন্তুষ্টির আসল স্বাদ দিচ্ছে।’ মাটিের্নজ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিলাম। অবশ্যই আপনি যখন ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠবেন, তখন শিরোপা জয়ের চেষ্টায় আপনার মনোযোগ থাকবে। কিন্তু আমাদেরও বাস্তববাদী হতে হবে এবং যখন আমরা পিছু ফিরে এই টুনাের্মন্টের দিকে তাকাব, দেখব বেলজিয়ামের এই ছেলেরা ইতিহাস গড়েছে এবং এটাই সবকিছু।’ শুধু মাটিের্নজ নয়, গবর্ অনুভব করছেন বেলজিয়ামের খেলোয়াড়রাও। ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানি যেমন জানিয়েছেন, ফ্রান্সের কাছে সেমিফাইনালের হার হতাশার হলেও সব মিলিয়ে খুশি তিনি, ‘তৃতীয় হতে পেরে আমি খুবই গবির্ত। আমরা তিনটা দিন খুব কষ্টের মধ্যে ছিলাম; কেননা ফ্রান্সের কাছে হারটা ছিল কঠিন। আমরা আজ দেখালাম যে সত্যিই আমরা তৃতীয় স্থান পেতে যাচ্ছি। বেলজিয়ামের ফুটবল ইতিহাসে এই প্রথম আমরা বিশ্বকাপে তৃতীয় হলাম। এটা বেলজিয়ামের জন্য ভালো। ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের পারফরম্যান্স ছেলেবেলায় আমি দেখতাম।’ দেশবাসীকে ব্রোঞ্জ মেডেল নয়, সোনায় মোড়ানো ট্রফিটাই উপহার দিতে চেয়েছিলেন কোম্পানি। তা আর হলো না। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রতিটা জয়কে ভক্ত-সমথর্কদের জন্য উৎসগর্ করছেন তিনি। সুখে-দুঃখে পাশে থাকায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এই ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘বেলজিয়ামের এই প্রজন্ম এক ধাপ এগিয়েছে। আমরা ফাইনালের কাছাকাছি ছিলাম। যদি আমরা ফাইনালে যেতে পারতাম, তাহলে জিততাম। তবে তৃতীয় হওয়াটাও চমৎকার ব্যাপার। সাত ম্যাচের মধ্যে ছয় জয়- এটা আমাদের সমথর্কদের জন্য উপহার। সবাইকে কুনির্শ।’ যদিও বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়ে আত্মতৃপ্ত বেলজিয়াম, কিন্তু এখানেই থেমে থাকতে চায় না দলটি। নিজেদের বিশ্বকাপের অজর্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে তারা। কোন কোন জায়গায় ভুল হয়েছে, সেগুলো খুঁজে খুঁজে বের করে আগামীর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে নেবে দলটি। মাটিের্নজ জানালেন এমনটাই, ‘সত্যিকার অথের্ এটি একটি সফল যাত্রা ছিল আমাদের। কিন্তু ফুটবলে অতীত নিয়ে পড়ে থাকা মানায় না। আপনার উচিত সামনে তাকানো এবং পরবতীর্ সুযোগের জন্য নিজেদের যোগ্য রূপে গড়ে তোলা।’ তাহলে মাটিের্নজ ব্রিগেডের জন্য পরবতীর্ সুযোগ ২০২০ সালের ইউরো। দেখা যাক, আগামী দুই বছরে কতটা প্রস্তুত হয়ে উঠতে পারে তারা।