বিজেএমসি থামাল বসুন্ধরার জয়রথ

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
গোলের পর রহমতগঞ্জের খেলোয়াড়দের উদযাপন। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রিমিয়ার লিগের খেলায় দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে ড্র করেছে তারা -বাফুফে
ঘরোয়া ফুটবলে তাদের আবির্ভাব নতুন শক্তিরূপে। মৌসুমের প্রথম দুটো টুর্নামেন্টের দুটোতেই ফাইনাল খেলা, একটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বসুন্ধরা কিংস নিজেদের শক্তি দেখিয়ে যাচ্ছিল প্রিমিয়ার লিগেও। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে তারা। তাদের কাছে পাত্তা পায়নি গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীও। মঙ্গলবার সেই দলটিই হোচট খেল। না হারেনি বসুন্ধরা, তবে গোলশূন্য ড্রয়ে দলটির জয়রথ থামিয়ে দিয়েছে টিম বিজেএমসি। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে ১৩ দলের লিগে বিজেএমসি ছিল পয়েন্ট টেবিলের ১২ নম্বরে। মুক্তিযোদ্ধা আর রহমতগঞ্জের মধ্যকার দিনের অপর ম্যাচটিও ড্র হয়েছে। তবে গোলশূন্য নয়, ২-২ ব্যবধানে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা আর রহমতগঞ্জ। কিন্তু কেউ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধা জয় পেলে নায়ক হতে পারতেন দলটির জাপানিজ মিডফিল্ডার ইউসুকে কাতু। দলের দুটো গোলের পেছনেই অবদান ছিল তার। কিন্তু ম্যাচ শেষে তিনিই খলনায়ক, তার ভুলেই দশজনের দলে পরিণত হয় মুক্তিযোদ্ধা। এরপর খেই হারায় দলটি, বলতে গেলে জেতা ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়ে তারা। এই ড্রতে ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট পেয়ে পূর্বের অবস্থানেই মুক্তিযোদ্ধা। ৭ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে একাদশ থেকে নবম স্থানে উঠে এসেছে রহমতগঞ্জ। ১৪ মিনিটে ম্যাচে লিড নেয় আবদুল কাইয়ুম সেন্টুর শিষ্যরা। কাতুর বাড়িয়ে দেয়া বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে থ্রম্ন পাস দেন সৈয়দ রাকিব খান। বক্সে ঢুকে জটলার মধ্য থেকে ডান পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন আইভরি কোস্টের ফরোয়ার্ড বালেস্না ফেমোসা (১-০)। ২০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কাতু উঁচু করে বল পাঠান বালেস্নার উদ্দেশ্যে। বল বুঝে নিয়ে এবারো আগের মতোই জোড়ালো শটে গোলরক্ষক আরিফুল ইসলামকে পরাস্ত করেন বালেস্না (২-০)। গোল পাওয়ার কিছুক্ষণ পরই অঘটনের শিকার হয় মুক্তিযোদ্ধা। যে কাতু দুই গোলের পেছনে অবদান রেখেছিলেন, তিনিই অফ দ্যা বলে রহমতগঞ্জের মিডফিল্ডার রকিবুল ইসলামের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন ম্যাচ চলছিল মাঠের অন্য প্রান্তে। তাই বিষয়টি দৃষ্টি এড়িয়ে যায় রেফারি সুজিত ব্যানার্জির। পরে সহকারী রেফারির সঙ্গে আলোচনা করে তিনি রকিবুলকে হলুদ কার্ড এবং কাতুকে লাল কার্ড দেখান। ফলে দশজনের দলে পরিণত হয় মুক্তিযোদ্ধা। দ্বিতীয়ার্ধে এই সুযোগটাই নিয়েছে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করা রহমতগঞ্জ। দ্বিতীয়ার্ধে রহমতগঞ্জ যেন ছিল ভিন্ন এক দল। গোল পাওয়ার পণ করেই যেন মাঠে নেমেছিল গোলাম জিলানীর শিষ্যরা। ৫১ মিনিটে বল পেয়ে ডান পায়ের গড়ানো জোড়ালো শট করেন রহমতগঞ্জের ফরোয়ার্ড সোহেল রানা। গোলরক্ষক কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রা রক্ষা করলেও পরের মিনিটেই গোল হজম করে মুক্তিযোদ্ধা। মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদের কর্নার পাঞ্চ করে বল সরিয়ে দেন গোলরক্ষক। বক্সের মাথায় বল পেয়ে যান সোহেল রানা। দারুণ শটে গোল করে ব্যবধান কমান এই ফরোয়ার্ড (২-১)। এর ঠিক দু'মিনিট পর ম্যাচে সমতা আনে রহমতগঞ্জ। ৫৪ মিনিটে বক্সের বা প্রান্ত থেকে সোহেল রানার শট পোস্টে লেগে ফেরত আসার পর শুয়ে পড়ে হেড নেন চৌমরিন রাখাইন, ওই মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডার রিমন গোললাইন থেকে বল বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করলেও সফল হননি, বল তার পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায় (২-২)। ৭৮ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধার সুজন বিশ্বাস বা পায়ে জোড়ালো শট নেন। গোলরক্ষক ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের ড্র'তেই মাঠ ছাড়ে উভয় দল।