এরপরও কি টনক নড়বে না বাফুফের?

প্রিমিয়ার লিগের জন্য স্পন্সর মিলছে না। ফুটবল পাড়ায় কান পাতলে শোনা যায়- বাফুফের কথা-কাজের অমিল দেখেই পিছিয়ে যাচ্ছে আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসা স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলো! এরপরও কি টনক নড়বে না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির?

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাহবুবুর রহমান দেশের ফুটবলের অবস্থা কি এতটাই জরাজীর্ণ (!), প্রিমিয়ার লিগের জন্যও স্পন্সর মিলছে না? বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্নটা উঠছে। ফুটবল পাড়ায় কান পাতলে শোনা যায়- বাফুফের কথা-কাজের অমিল দেখেই পিছিয়ে যাচ্ছে আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসা স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলো! এরপরও কি টনক নড়বে না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির? বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এবার ১৩টি দল খেলছে। যারা গ্যালারিতে বসে ম্যাচ দেখেন তারাই শুধু বলতে পারবেন- কতটা উপভোগ্য হচ্ছে এবারের লিগের ম্যাচগুলো। কিন্তু দর্শকের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। ঢাকার বাইরে আরও পাঁচটি ভেনু্যতে লিগের খেলা হচ্ছে। দুই একটি ভেনু্যর কথা বাদ দিলে খেলা হচ্ছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। এরপরও বাফুফের কোনো ভ্রম্নক্ষেপ নেই। প্রচার প্রচারণায় যেন রাজ্যের অনিহা সংস্থাটির। অথচ এটা কে না জানে- গ্যালারিতে দর্শক থাকলে ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত হতেন ফুটবলাররা, তাতে আরও জমজমাট হতো মাঠের লড়াই। ঘরোয়া ফুটবলের সব থেকে জমজমাট আসরটি মাঠে গড়ানোর পর মাস পেরিয়ে গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হচ্ছে। অথচ গ্যালারিতে দর্শক নেই। ঘরে বসেও ম্যাচ উপভোগ করার তেমন একটা সুযোগ মিলছে না। টিভিতে খেলা সরাসরি সম্প্রচারের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো চ্যানেলের সঙ্গে বনিবনা হয়নি বাফুফের। অনলাইনে ম্যাচ দেখানোর একটা ব্যবস্থা করেছে সংস্থাটি। সেটারও হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এ বিষয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের কাছে প্রমাণসহ অভিযোগ করা হয়েছিল, যার প্রেক্ষিতে অনলাইন সম্প্রচারের মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। অনলাইন সাইডটিতে যেভাবে ম্যাচ দেখানো হয় তা না দেখানোরই সামিল। বেশিরভাগ সময়ই ভিডিও কোয়ালিটি এত খারাপ থাকে যে, জার্র্সি নম্বর বুঝবার উপায় থাকে না। বলতে গেলে অযত্ন আর অবহেলাতেই সম্প্রচার করা হচ্ছে ম্যাচগুলো। ১৩ ফেব্রম্নয়ারি সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেখ রাসেল আর চট্টগ্রাম আবাহনী ম্যাচটির কথাই ধরা যাক। সেদিন শেখ রাসেল ম্যাচটি জেতে ১-০ গোলে, কিন্তু লাইভে ম্যাচ শেষে স্কোরলাইন দেখানো হচ্ছিল গোলশূন্য! ৬৫ মিনিটে শেখ রাসেলের গোলটিকে ওই অনলাইন চ্যানেলে দেখানো হয়েছে ফাউল হিসেবে! ক্লাবের লোগো ব্যবহারে বিভ্রাট তো লেগেই আছে। ওই ম্যাচেই চট্টগ্রাম আবাহনীর পাশে যে লোগোটি দেখানো হয়েছে সেটি ঢাকা আবাহনীর। এমন ঘটনা যে একদিনই ঘটেছে তা কিন্তু নয়। পরের দিনই নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব আর টিম বিজেএমসির ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর লোগো ব্যবহার করা হয় টিম বিজেএমসির পাশে। ১৮ ফেব্রম্নয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আবাহনী বনাম মোহামেডানের ম্যাচ অনলাইনে অনেকেই দেখে হয়তো ভেবেছেন- এ বুঝি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী-মোহামেডান দৈরথ। কারণ সেদিনও চট্টগ্রাম আবাহনীর পাশে ঢাকা আবাহনীর লোগোই বসানো হয়। সৌভাগ্যবশত ওইদিনই প্রেসবক্সে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ এসেছিলেন। বিষয়টি সরাসরি তাকে জানান এই প্রতিবেদক। আর তাতেই টনক নড়ে বাফুফের। সম্প্রচারের দায়িত্বে থাকা লোকদের একহাত নেন সোহাগ। পরদিন থেকেই অনলাইনে বেশ ঝকঝকে সম্প্রচার। লোগোও ঠিকঠাক। তবে তাদের এই 'ঠিকঠাক' ব্যাপার-স্যাপার কতদিন চলবে তা বলা মুশকিল। কারণ, ঠিকঠাক চলতে না পারা কিংবা কথা দিয়ে তা রাখতে না পারার রোগটা বাফুফে থেকে বাফুফে-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে কতক্ষণ? লিগ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে বাফুফের সাধারণ সম্পাদকই জানিয়েছিলেন, লিগের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করা হবে টিভিতে। কিন্তু সপ্তম রাউন্ড শেষ হয়ে গেলেও সেটি সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে সোহাগের কাছে আবার নতুন করে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, 'এখনো লিগের অনেক ম্যাচ বাকি আছে। আশা করি এরমধ্যে টিভিতে ম্যাচ সম্প্রচারের ব্যবস্থা হয়ে যাবে।'