দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শুরু আজ

নিউজিল্যান্ডের 'বাতাস'ও বোলারদের চ্যালেঞ্জ!

এখানকার বাতাস অনেক ভারী। আমরা এটা নিয়েই আগে কাজ করব। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে টু্যর ম্যাচটায় এদিকেই বেশি নজর দিতে হবে। এমন বাতাসে উইকেটের সঠিক জায়গায় বল রাখাটা বেশ চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। অনুশীলনে সেটা আমরা ভালো টের পেয়েছি -আবু জায়েদ রাহী

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রস্তুতির অভাব। টেস্ট সিরিজের আগে অন্তত এই অভিযোগ বা অজুহাত আনতে পারবে না বাংলাদেশ দল। প্রথম টেস্ট শুরুর বেশ আগেভাগেই নিউজিল্যান্ডে পৌঁছায় পুরো দল। ক্রাইস্টচার্চে বেশকিছুদিন ধরেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা। এরই মধ্যে টাইগার বোলাররা বুঝে গেছেন, নিউজিল্যান্ডের বাতাসও তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহী তো পরিষ্কার করে বলেই দিয়েছেন, সেখানকার ভারী বাতাস সমস্যায় ফেলছে তাদের। ২৮ ফেব্রম্নয়ারি হ্যামিল্টনে শুরু হবে তিন টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। এর আগে দুদিনের একটা প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। লিংকনের বার্ট সাচলিফ ওভালে আজ বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা থেকে শুরু হবে গা গরমের ম্যাচটি। ওই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড একাদশের পেসারদের নেতৃত্বে থাকছেন অ্যাডাম মিলনে। ২৬ বছর বয়সি এই পেসার এখনো জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। এ ছাড়াও আছেন বস্ন্যাক কোবার্ন, বেন লকরস, অ্যাড নুশালের মতো পেসাররা। এতে সুবিধাই হবে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। লাল বলে ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, নিল ওয়াগনারদের সামলানোর প্রস্তুতিটা ভালো হবে। টিম বাংলাদেশও চাইছে এই ম্যাচেই নিজেদের প্রস্তুতিটা সেরে নিতে। ৩-০ তে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পারফরম্যান্স উপহার দিতে চায় টাইগাররা। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের মাটি ওয়ানডের মতো টেস্ট সিরিজেও কখনো বাংলাদেশের জন্য সুখকর খবর বয়ে আনেনি। ভারী বাতাস। বৈরী কন্ডিশন। সঙ্গে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত ক্রিকেটাররা তো আছেনই। মাঠের খেলায় জিততে হলে আগে জয় করতে হবে আবহাওয়া-কন্ডিশনকে। বাতাসের গতিবেগ এতই বেশি যে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখাটা বোলারদের জন্য আপাতত সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশি পেসারের কণ্ঠে মিশে থাকল কিউইদের বৈরী কন্ডিশনে চ্যালেঞ্জ জয়ের প্রত্যয়ও। ফেব্রম্নয়ারি মাসে লিংকনের গড় তাপমাত্রা ১৬ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে নিয়মিতই। আদ্রতা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণটা তুলনামূলক বেশিই। কেবল লিংকনেই নয়, পুরো নিউজিল্যান্ডের বর্তমান আবহাওয়াই এখন এমন। আগে থেকে পরিচয় না থাকলে উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের এখানে খেলা মানে অথৈ জলে হাবুডুবু খাওয়ার মতো! সেই নিউজিল্যান্ডে খেলতে খালেদ আহমেদ, ইবাদত হোসেনদের মতো নতুন বোলারদের দলে রেখেছে বাংলাদেশ। রাহী নিজেও খুব একটা পরিচিত নন এমন কন্ডিশনের সঙ্গে। তবে ওশেনীয় অঞ্চলের পরিবেশে মানিয়ে নিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ক্রাইস্টচার্চে অনুশীলন পর্ব শেষে রাহী জানালেন, 'এখানকার বাতাস অনেক ভারী। আমরা এটা নিয়েই আগে কাজ করব। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে টু্যর ম্যাচটায় এদিকেই বেশি নজর দিতে হবে। এমন বাতাসে উইকেটের সঠিক জায়গায় বল রাখাটা বেশ চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। অনুশীলনে সেটা আমরা ভালো টের পেয়েছি। বাতাসের জন্য বল এদিক-ওদিক যায়। তাই নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া এবং কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য অনুশীলন ম্যাচটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।' নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন এবং উইকেট তাহলে শুধু ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেয় না, বোলারদেরও মহাপরীক্ষার মধ্যেই ফেলে। ওয়ানডে সিরিজেই সেই প্রমাণটা হাতেনাতে পেয়েছে বাংলাদেশ দলের বোলাররা। এই তিন ম্যাচে কখনোই মনে হয়নি বাংলাদেশের বোলার বিশেষ করে পেস বোলাররা নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বড় কোনো চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারছেন। তবে টেস্ট সিরিজে সেই 'দান' পাল্টে দিতে চান রাহী। সাফল্যের জন্য প্রাথমিক পরিকল্পনার ব্যাখায় রাহী বলছিলেন, 'শুরুতে উইকেট তুলে নেয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমরা পেস বোলাররা দলকে শুরুতে সেই সুবিধাটা দিতে চাই। শুরুতেই ওদের বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিতে চাই। আমরা টেস্ট সিরিজ শুরুর ১২/১৪ দিন আগে এসেছি এখানে। দলের বোলারদের কাজ কি সেটা আমরা জানি। জানি যে ম্যাচ জিততে হলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট আমাদের শিকার করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা সিরিজের প্রথম টেস্টে নামব। আমার তো মনে হয় টেস্ট দলের বোলাররা নিউজিল্যান্ডের এই কন্ডিশনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।'