বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ

প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং বাংলাদেশের

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের আগে লিঙ্কনে শনিবার নিউজিল্যান্ড বোর্ড একাদশের বিপক্ষে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নামছেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ আর সাদমান ইসলাম -ওয়েবসাইট
ওয়ানডে সিরিজটা কেটেছে চরম হতাশায়। নিউজিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে টিম বাংলাদেশ এবার নামতে যাচ্ছে তিন টেস্টের সিরিজে। তার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে দুদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে টাইগাররা, শনিবার নিউজিল্যান্ড বোর্ড একাদশের বিপক্ষে শুরু হওয়া সেই ম্যাচের প্রথম দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছে তারা। বিপিএল খেলে সোজা নিউজিল্যান্ড, তারপর ওয়ানডে সিরিজে নেমে পড়া। এমন পরিস্থিতিতে টাইগার ক্রিকেটাররা টেস্টের মেজাজ কতটা ধরে রাখতে পেরেছেন, প্রস্তুতি ম্যাচে সেটা পরখ করাই আসল উদ্দেশ্য। ওয়ানডের ব্যর্থতা ভুলে ব্যাটসম্যানরা সেই প্রস্তুতিতে শুভবার্তাই দিয়েছেন। চার হাফসেঞ্চুরিতে টাইগারদের সংগ্রহটাও হয়েছে বেশ বড়। এদিন টপঅর্ডার থেকে শুরু করে মিডলঅর্ডার এমনকি লোয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরাও আলো ছড়িছেন। যার ফলে প্রথম দিন শেষে ৯৬.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪১১ রান। প্রস্তুতি ম্যাচের প্রায় সবকিছুই হয়েছে বাংলাদেশের চাহিদা মতো। লিঙ্কনে সকালে নিউজিল্যান্ড বোর্ড একাদশের বিপক্ষে টস জয়, ব্যাটিং বেছে নেয়া। ইনিংসের শুরুটা চমৎকার। মাঝের গাঁথুনি শক্তপোক্ত এবং দিনের শেষ বেলায়ও মন ভরানো ব্যাটিং। আসল টেস্টে সাধারণত একদিনে ৯০ ওভারের বেশি খেলা হয় না। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই শনিবার ৯৬ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পেলেন ব্যাটসম্যানরা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে 'ব্যাটের মরিচা' ভালোই ঝেরে ফেলেছেন তারা। টিম বাংলাদেশ প্রথমদিনের মধ্যাহ্নভোজে যায় ১ উইকেটে ১১৩ রান নিয়ে। চা বিরতিতে যায় ৩ উইকেটে ২৪৫ রানের স্বস্তিতে। আর দিনটা শেষ করে চার শতাধিক রানের ব্যাটিং আনন্দে। স্কোরবোর্ডের এই স্বাস্থ্যবান চেহারাই জানান দিচ্ছে টেস্ট সিরিজের জন্য প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথমদিন বাংলাদেশের বেশ সুখসমৃদ্ধ ভরা সময় কেটেছে। সারাদিনে ৫৮১ বলে ৪১১ রান। চারটি হাফসেঞ্চুরি। সবমিলিয়ে বাউন্ডারি ৪৯টি। ছক্কা ৪টি। ব্যাটিং অর্ডারের প্রায় সব ব্যাটসম্যান সন্তুষ্টি নিয়ে ফিরেছেন। এই তালিকায় শুধু মুমিনুল হক নিজেকে বেচারা ভাবতে পারেন। ৩০ বলে ২০ রান করা মুমিনুল হকই কেবল প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যাটিংয়ে ব্যর্থর তালিকায়! সিরিজের তিন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকটের নাম ছিল টপঅর্ডারের ব্যর্থতা। তামিম ইকবাল সেই তিন ম্যাচে মাত্র ১০ রান করেছিলেন। কোনো ম্যাচেই ওপেনিং জুটি টেকেনি। তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে সেই দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলেছে বাংলাদেশ। তামিম আর সাদমান ইসলামের ওপেনিং জুটিতে প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ১১৩ রান। সফরে এই প্রথম তামিম কোনো ম্যাচে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারলেন। ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৮৩ বলে তামিম করেন ৪৫ রান। টাইগার ওপেনারকে এই ইনিংস মানসিক শক্তি জোগাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সঙ্গী ওপেনার সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে ১১৩ বলে ৬৭ রানের ইনিংস হেড কোচ স্টিভ রোডসকে স্বস্তি দিচ্ছে। লিটন দাস ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ৩ রান। আর প্রস্তুতি ম্যাচে করলেন ৯১ বলে হার না মানা ৬২ রান। রঙিন পোশাকের ব্যর্থতা ভুলে এই রান থেকেও উজ্জীবিত হতে পারেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। বাকি ব্যাটসম্যানরা যাতে অনুশীলন করতে পারেন সেই উদ্দেশে সৌম্য সরকারও ৭৫ বলে ৪১ রান করার পর ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিং আনন্দে মেতে ওঠেন। ম্যাচের অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ খেললেন ৬০ বলে হার না মানা ৫৯ রানের ইনিংস। ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ৫১ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের সময়টাও বেশ ভালো কেটেছে এই ম্যাচের প্রথমদিনে। তবে স্বস্তির মাঝে এখনো অস্বস্তি হয়ে আছেন চোটাক্রান্ত মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। দুজনে প্রস্তুতি ম্যাচের দলে থাকলেও ব্যাট করেননি। তাই বৃহস্পতিবার থেকে হ্যামিল্টনে শুরু হতে যাওয়া টেস্টে তারা দুজন যদি খেলতে নামেনও, গলার কাঁটা হয়ে রইল এই প্রস্তুতি না নিতে পারাটা! সংক্ষিপ্ত স্কোর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৯৬.১ ওভারে ৪১১/৬ (তামিম ৪৫, সাদমান ৬৭, মুমিনুল ২০, লিটন ৬২ রিটায়ার্ড, সৌম্য ৪১ রিটায়ার্ড, মাহমুদউলস্নাহ ৫৯ রিটায়ার্ড, মিরাজ ৫১ রিটায়ার্ড, তাইজুল ১৪, নাঈম ১২, আবু জায়েদ ২৩; কোবার্ন ২/৯২)।