ওদের কাঠগড়ায় ফাইনালের রেফারিং

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ফাইনালের রেফারি নেস্তর পিতানা
ম্যাচের তখন ৩৮ মিনিট চলছে। ডান দিক থেকে ভেসে আসা ক্রসে মাথা ছেঁায়ালেন ফ্রান্সের বেøইস মাতুইদি। তার মাথা স্পশর্ করে বলটা ক্রোয়েশিয়ার ডি-বক্সে থাকা ইভান পেরিসিচের বঁা-হাতে লেগে লাইন অতিক্রম করে বাইরে চলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে হ্যান্ডবলের আবেদন জানালেন ফরাসি ফুটবলাররা। দায়িত্বরত রেফারি নেস্তর পিতানা প্রথমে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলেন না। পরে কি মনে করে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিলেন। আর দিয়ে দিলেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত! রোববার বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পাওয়া ওই পেনাল্টিতে প্রথমাধর্টা ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে শেষ করেছিল ফ্রান্স। দ্বিতীয়াধের্ আরও দুই গোল করলেও ম্যাচের টানির্ং পয়েন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে ৩৮ মিনিটির ওই পেনাল্টিটাকেই। ম্যাচ শেষে ভিএআর সম্পকের্ কোনো অভিযোগ দঁাড় না করালেও রেফারি নেস্তর পিতানার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ জালাতকো দালিচ। ফাইনালের মতো ম্যাচে ওমন সিদ্ধান্ত নেয়া রেফারির ঠিক হয়নি বলেই মনে করছেন তিনি, ‘আমি রেফারির ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। আমি তাকে সম্মান করি। তিনি সিদ্ধান্তটা সঠিক মনে করেই নিয়েছেন। ভিএআর-এ যখন কোনো সিদ্ধান্ত আপনার পক্ষে যায় তখন সেটা ভালো। বিপরীত হলে খারাপ। তবে একটা কথা বলতে চাই, বিশ্বকাপের ফাইনালে আপনি ওমন একটা পেনাল্টি দিতে পারেন না। তবে ওটা না পেলেও ফ্রান্সের জয় আটকে থাকত না।’ শুধু ওই পেনাল্টিই নয়; প্রথমাধের্ যে আত্মঘাতী গোল পেল ফ্রান্স, সেটার উৎস গ্রিজম্যানের ফ্রি-কিকের সিদ্ধান্তটাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ম্যাচ শেষে তাই ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ রেফারিংয়ের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যখন পেনাল্টি দেয়া হলো। বিশেষ করে যে ফাউলের কারণে ফ্রান্স ফ্রি-কিক পেয়েছে এবং গোল হয়েছে, সেটা ফাউল ছিল না। আমরা ভালো খেলেছি এবং সেরাটা দিয়েছি এবং তাদের একটা পেনাল্টি দিয়েছি। এটা খুব কষ্টের।’ ফাইনালের রেফারিং নিয়ে কেবল দালিচ-মদ্রিচই সমালোচনা করেননি। অন্যদের চোখেও আটকেছে ভুলগুলো। প্রিমিয়ার লিগের সাবেক রেফারি ডেরমট গ্যালাঘের যেমন বলেছেন, ‘এটা পেনাল্টি ছিল না। বল থেকে সে দূরেই ছিল। যখন মাথার কাছে চলে আসলো তখন আর নিজেকে এড়াতে পারেনি। তখন সে হাত নাড়াতে পারেনি। হ্যান্ডবলের কোনো ইচ্ছা তার ছিল না।’ স্পেনের ২০১০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস প্রশ্ন তুলেছেন ভিএআরের ভূমিকা নিয়ে। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম টুইটারের এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, ভিএআরের ব্যবহারটা কোথায়?’ তার কথায় সমথর্ন জানিয়ে আবার উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ লিখেছেন, ‘তুমি ঠিক বলেছ, ইকার!’ এই বিশ্বকাপে ভিএআরের কারণে অনেক সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি ফিফার। কিন্তু ফাইনালের প্রযুক্তির ভূমিকার পর একটা প্রশ্ন থেকেই যায়- ভিএআরের কারণেই কি কপাল পুড়ল ক্রোয়েশিয়ার?