রোনালদোর নতুন চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন আর ফটো সেশনে ক্লাবকতাের্দর মধ্যে জুভেন্টাসের জাসির্ হাতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো Ñওয়েবসাইট
স্পেনের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। যদিও খবরটা পুরনো। এরপরও খেলোয়াড়টির নাম যখন রোনালদো, তখন পুরনো খবরেও রেশ থেকে যায়। সাধারণত বয়স ৩০ পার হলে তারকা ফুটবলাররা পাড়ি জমান কাতার, চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের লিগে। কিন্তু তিনি রোনালদো বলেই ৩৩ বছর বয়সেও নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে যোগ দিয়েছেন সিরি’আর দল জুভেন্টাসে। সমথর্কদের সঙ্গে পরিচিতি পবের্ পতুির্গজ যুবরাজ জানালেন আরও এক চ্যালেঞ্জের কথা- জুভেন্টাসকে এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাবেন। রোনালদো ২০০৯ সালে যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন তখন তার বয়স ছিল ২৪। গত ৯ বছরে রিয়ালের হয়ে অনেক রেকডর্ই তিনি নিজের করে নিয়েছেন। বিশ্বসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন, রিয়ালের হয়ে চারবার জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা, কোপা দেল’রে, ক্লাব বিশ্বকাপ, উয়েফা সুপার কাপসহ একগাদা ট্রফি। সেই ক্লাব ছেড়ে তিনি এখন জুভেন্টাসে। গায়ে চাপাতে চলেছেন সাদা-কালো জাসির্। কিন্তু ৩৩ বছর বয়সে এই দলবদলে তিনি কী খুব বেশি সুবিধা করতে পারবেন? রোনালদো বলেই শঙ্কাটা ধোপে টিকছে না। চ্যালেঞ্জ নেয়াটা তো তার মজ্জাগতই। ১১ কোটি ২০ লাখ ইউরো ট্রান্সফার ফিতে চার বছরের চুক্তিতে জুভেন্টাসে যোগ দেয়া রোনালদোকে গত সোমবার বরণ করে নেয় সমথর্করা। পঁাচবারের বষের্সরা ফুটবলার তার তুরিনে আসার কারণটা জানালেন, ‘আমার বয়সী কোনো খেলোয়াড় সাধারণত চীন অথবা কাতারেই যায়। কিন্তু আমি জানি আমার মধ্যে এখনো জেতার ক্ষিধে রয়েছে। আমি জুভেন্টাসে নিজের সেরাটা দিতেই এসেছি। আমি প্রমাণ করতে এসেছি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবা রিয়ালের হয়ে যা করেছি সেটি জুভেন্টাসের হয়েও করতে পারব। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহজে জেতা যায় না তারপরও আমি অবশ্যই আমার কাজটুকু করব। আশা করি দলের জন্য আমি সৌভাগ্যের তারকা হতে পারব।’ রোনালদোর রিয়াল ছাড়াটাই অনেকের কাছে বড় ঘটনা। অনেকেই মনে করেছিলেন রিয়াল যদি পতুির্গজ তারকা ছাড়েনও, ক্যারিয়ারের বাকিটা সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের কোনো দলেই কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু রোনালদো নাকি জেদ করেই তেমন কিছু করেননি, ‘আমি তুলনামূলক কম প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূণর্ কোনো লিগে গিয়ে অনেক টাকা উপাজর্ন করতে পারতাম। কিন্তু আমি কখনোই আরাম-আয়েশে থাকতে চাই না। ফুটবল মাঠের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জই আমাকে জুভেন্টাসে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’ নতুন ঠিকানা জুভেন্টাসের বিপক্ষে রোনালদোর রেকডর্টা দারুণ। গত মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলটি এই জুভেন্টাসের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে করেছিলেন তিনি। তুরিনের দশের্করা দঁাড়িয়ে সম্মান জানিয়েছিল তাকে। ফিরতি লেগে জুভেন্টাসও রিয়াল আর রোনালদোকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, ইউরোপিয়ান ফুটবলে তারও বড় শক্তি। বিষয়টা জেনেই বনেদি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছেন রোনালদো, ‘রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়লে আমি অবশ্যই বড় কোনো ক্লাবের জন্য ছাড়তাম। জুভেন্টাস সেই ক্লাবগুলোর একটি। আমি এখানে এসেছি জুভেন্টাসকে সাহায্য করতে। আমাদের মূল লক্ষ্য অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কিন্তু আমরা সিরিআ ও অন্যান্য সব শিরোপাও জিততে চাই।’ তার এই চাওয়া পুরণে বয়স কোনো বাধা হবে না। রোনালদোর অন্তত তেমনই বিশ্বাস। নিজেকে তো এখনও তরুণ বলেই মনে হয় তার। এমনটা জানিয়েই বলে দিলেন, ‘আমি বতর্মান নিয়ে ভাবতে পছন্দ করি। আমি খুবই উচ্চাভিলাষী এবং নতুন চ্যালেঞ্জ পছন্দ করি। কারণ আমি এখনও অনেক তরুণ এবং সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। স্পোটির্ং থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদ এবং রিয়াল থেকে এখন জুভেন্টাসে এসেছি। তুরিনে আসাটা আমার জন্য ভালো একটা সিদ্ধান্ত ছিল। এটা ইতালির সেরা ক্লাব। দুদার্ন্ত একজন কোচ (ম্যাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি) আছেন। তাই এখানে আসার সিদ্ধান্ত নেয়াটা কঠিন ছিল না। আমি আশা করি, সব কিছু খুব ভালোভাবে চলবে।’