টাইগ্রেসদের ঘিরে নতুন আশা

নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হবে নারী টি২০ বিশ্বকাপের এবারের আসর। নিজেদের সামথের্্য আস্থা রেখে সেখানেও দারুণ কিছু করে দেখাতে চান সালমা-জাহানারা-রুমানারা, তারা অন্তত সেমিফাইনালে খেলতে চান। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোডর্ও (বিসিবি) টাইগ্রেসদের ঘিরে আশা দেখছে। সাজিয়েছে পরিকল্পনা

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ছেলেদের ক্রিকেটে সুখবর নেই। ‘পুঁচকে’ আফগানিস্তানের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর ক্যারিবীয় সফরেও খাবি খাচ্ছে টাইগাররা। ভাইদের এই ব্যথর্তার মাঝে আশার আলো দেখাচ্ছে বোনরা। ভারত-পাকিস্তানের মতো পরাক্রমশালী দলকে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়ে এশিয়া কাপ জিতেছে সালমা-রুমানাদের দল। বাছাই পবের্ দোদর্Ð প্রতাপ দেখিয়ে টাইগ্রেসরা নিশ্চিত করেছে নারী টি২০ বিশ্বকাপে খেলা। তাদের ঘিরেই এখন নতুন আশা দেখছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাস তিনেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। কিছুদিনের ব্যবধানে সেই দলটাই বদলে গেছে আমূল। নতুন কোচ অঞ্জু জৈন দলটাকে এক সুতোয় বেঁধেছেন। সেই দলটা এখন ম্যাচের পর ম্যাচ জয়ের মালা গঁাথছে। সকলকে চমকে দিয়ে জিতেছে এশিয়া কাপ। ওই সাফল্য ফিরিয়ে দিয়েছে সালমা খাতুনের দলের হারানো আত্মবিশ্বাস। এরপর আয়ারল্যান্ড জয় এবং হল্যান্ডে সম্প্রতি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় নিজেদের সামথের্্য আস্থা আরও বেড়ে গেছে তাদের। নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হবে নারী টি২০ বিশ্বকাপের এবারের আসর। নিজেদের সামথের্্য আস্থা রেখে সেখানেও দারুণ কিছু করে দেখাতে চান সালমা-জাহানারা-রুমানারা, তারা অন্তত সেমিফাইনালে খেলতে চান। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোডর্ও (বিসিবি) টাইগ্রেসদের ঘিরে আশা দেখছে। সাজিয়েছে পরিকল্পনা, সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আগেভাগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে দল। উদ্দেশ্য, লড়াইয়ের ময়দানে নামার আগে ক্যারিবীয় কন্ডিশনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা। বিশ্বকাপ ঘিরে দুই মাসের লম্বা প্রস্তুতি ক্যাম্প চলবে নারী ক্রিকেট দলের। প্রস্তুতিটা অবশ্য শুরু হয়ে যাচ্ছে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। ২০ দিনের ওই ক্যাম্পে অবশ্য কোনো স্কিল ট্রেনিং থাকছে না। শুধুই ফিটনেস ও ফিল্ডিং নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাবেন সালমা খাতুন ও তার দল। জানা গেছে সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাটিং, বোলিং (স্কিল) অনুশীলন শুরু করবে এশিয়ার উঠতি পরাশক্তি এই দলটি। দলের ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ফাহিমও এমন আভাস দিলেন। জাতীয় দল থেকে শুরু করে ছেলেদের সব দলই আছে খেলার মধ্যে। কিন্তু সব আলো কেড়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। দেশের ক্রিকেটে এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা। এর কারণটাও স্পষ্ট, স¤প্রতি টাইগাররা যতটা ব্যথর্. ঠিক ততটাই সফল টাইগ্রেসরা। রাতারাতি এই সফলতার রহস্য কি? নাজমুল আবেদীন মনে করেন, টি২০তে তুলনামূলক ভালো খেলার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় টাইগ্রেসদের। তারপর এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় নিজেদের সামথর্্য বুঝতে পারে মেয়েরা। দলের বদলে যাওয়া নিয়ে নাজমুল আবেদীন বললেন, ‘এই ধরনের দলের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, একটুতেই ভেঙে পড়ে আবার একটুতেই সাহসী হয়ে ওঠে। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাতে একটা বড় কাজ করেছিলাম যে, দলের ব্যাটিং অডাের্র একটা বড়সড় পরিবতর্ন এনেছিলাম। আমাদের সবচেয়ে বড় টানির্ং পয়েন্ট ছিল শামিমা, যে প্রথমে মূল দলে ছিল না। তাকে দিয়ে আমরা ওপেন করানো শুরু করলাম। নেটে এবং প্রাকটিস ম্যাচে আমরা ওর খেলা দেখে ইমপ্রেসড হয়েছিলাম।’ নারীদের উন্নতির সঙ্গে চলে আসে নানান হিসাবনিকাশ। চলে আসে তাদের সুযোগ সুবিধার কথা। সফলতার মানদÐে বিচার করলে, সময় এসেছে নারী ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে ভাবার। বিসিবিও অবশ্য কথা দিয়েছে। এখন সামনে শুধু এগিয়ে যাওয়া। এ প্রসঙ্গে নাজমুল আবেদীন বলেছেন, ‘আমাদের খেলা অনেক কম। তবে এ বছর আমরা আরও কিছু নতুন টুনাের্মন্ট আয়োজন করার প্রস্তাব দিয়েছি। যদি সেগুলোর অনুমোদন দেয়া হয় তাহলে ম্যাচের সংখ্যা অনেক বাড়বে এবং ওরা অনেক ব্যস্ত থাকবে।’ এশিয়া কাপ, আয়ারল্যান্ড সিরিজ, বিশ্বকাপ বাছাই। সালমা, রুমানারা দুদার্ন্ত। কিন্তু আসল পরীক্ষাটা এখনো বাকি। সেটা বিশ্বকাপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনটাই যে মূল চ্যালেঞ্চ। কিন্তু মানিয়ে নিতে পারলে কঠিন কিছু নয়। এবার প্রত্যাশাটাও বেড়েছে। তবে মেয়েদের এই অগ্রযাত্রা শুধু টি২০তে নয়, ওয়ানডেতেও আস্তে আস্তে ছড়িয়ে যাবে- এমন প্রত্যাশা বিসিবির।