হতাশা বাড়ছে হকি অঙ্গনে

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মাহবুবুর রহমান
বিশ্বকাপের উন্মাদনায় একরকম চুপসে গেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের কাযর্ক্রম। বিশেষ করে হকি অঙ্গনে। মাঠে টুনাের্মন্ট নেই। চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে না নতুন কোনো টুনাের্মন্ট আয়োজনের বিষয়ে! এমনকি অনেক গুরুত্বপূণর্ সিদ্ধান্তও আটকে আছে। জাতীয় হকি দল ব্যস্ত এশিয়া কাপের অনুশীলন নিয়ে। কিন্তু ঘরোয়া হকি লিগের শিরোপা কার ঘরে যাবে, অনেকদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখন পযর্ন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই দিনকে দিন হতাশা বাড়ছে হকি অঙ্গনে। ফেডারেশনের উদাসীনতায় আগামী লিগে বড় বড় ক্লাবগুলো অংশ নেবে কিনা, সেটা নিয়েও দেখা দিচ্ছে সংশয়। ঘরোয়া হকির সব থেকে জনপ্রিয় আসর প্রিমিয়ার লিগ। অথচ নানান কারণে সেই লিগই মাঠে অনিয়মিত। এ বছর অবশ্য প্রায় সব বড় দলের অংশগ্রহণে জমে উঠেছিল লিগ। কিন্তু সেই লিগটাই শেষ হতে পারল না। পুরো লিগে তেমন কোনো বড় অঘটন না ঘটলেও শিরোপা নিধার্রণী ম্যাচে এসেই গোলমাল বাধে। মোহামেডান-মেরিনাসের্র মধ্যকার সেই ম্যাচটা আর শেষই হতে পারেনি। এরপর থেকে হকি অঙ্গনে প্রশ্ন, অমীমাংসিত ম্যাচটি আবার টাফের্ গড়াবে? সাধারণ একটা ম্যাচ হলে ভিন্ন কথা ছিল। কিন্তু ম্যাচটা যে শিরোপা নিধার্রণী। ম্যাচটা অমীমাংসিত থাকায় কার ঘরে যাবে শিরোপা এ বিষয়ে এখন পযর্ন্ত কোনো সিদ্ধান্তেই আসতে পারেনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক জুনের প্রথম সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই লিগ কমিটি সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসবে। সেই সভাটিও এখন পযর্ন্ত হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদেক বলেন, ‘আমি তো অসুস্থ ছিলাম। গত ছয় দিন হাসপাতালে ছিলাম। যতদূর জানি এখনো এ বিষয়ে সভায় বসেনি লিগ কমিটি।’ অমীমাংসিত ম্যাচটি ড্র করতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত মোহামেডান। তাই শিরোপা জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে ছিল তারাই। আর শিরোপাটা পেলে দীঘির্দন পর আবারও স্বরূপে ফিরতে পারত ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। তাই মোহামেডান শিবিরে হতাশা বাড়ছে দিনকে দিন। লিগ নিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছে আবাহনী-মেরিনাসের্র মতো শীষর্ ক্লাবগুলোও। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আরও প্রাণহীন হয়ে পড়বে দেশের হকি। বড় দলগুলো খেলার আগ্রহ দেখাবে না। ঐতিহ্যবাহী দলগুলো হকিতে না আসলে খেলা হবে কি করে? লিগ কমিটির সভা না হওয়ায় হতাশ মোহামেডান। ক্লাবের পরিচালক সারোয়ার হোসেন আক্ষেপ জড়ানো কণ্ঠে বললেন, ‘এখনো লিগ কমিটির সভাই হয়নি। ফেডারেশনে নতুন প্রেসিডেন্ট এসে সভার তারিখ দিয়েছিলেন ৪ জুলাই। উনি দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় ওই সভা আর হয়নি।’ ওই সভার ফল মোহামেডানের পক্ষে যাবে, ব্যাপারটা তো এমনও নয়। তবে সারোয়ার হোসেন জানিয়ে দিলেন, অগ্রহণযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না মোহামেডান। সিদ্ধান্ত যদি মোহামেডানের বিপক্ষে যায়, তবে কি আগামী লিগে অংশ নেবে না সাদা-কালো শিবির? এমন প্রশ্নে সারোয়ার হোসেনের উত্তর, ‘লিগে খেলতে না গেলে ক্লাবের দোষ হয়। কি কারণে খেলতে যাই না তার নমুনা তো সবাই দেখেছে। ন্যায্য অধিকার না পেলে কেউই খেলতে আগ্রহী হবে না। আগামী লিগে আমরা খেলব না, সেটা বলছি না। তবে এখানে যদি আমরা গ্রহণযোগ্য বিচার পাই, তা হলেই আগামী লিগে খেলার প্রশ্ন আসবে।’ সবমিলে জটিল এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যাচ্ছে দেশের হকি। লিগ কমিটির সভায় ক্লাবগুলোর মনঃপুত সিদ্ধান্ত না এলে হয়তো আবারও অন্ধকারের পথে এগিয়ে যাবে জনপ্রিয় এই খেলাটি। হকিবোদ্ধাদের অন্তত এমনই মত।